ব্লগে ইসলাম নিয়ে লেখা লেখলেই আলেম, মওলানা নামে উপাধি পেতে হয়। অথচ নিজেদের প্রয়োজনেই ইসলামকে জানতে হয়, না হলে প্রচন্ড ভ্রান্তিতে পরে ভুল ইবাদতের স্বীকার হতে হয় আর বর্তমান মুফতি আলেমরা স্বাধীন মত অপকর্ম করে বিনা বাঁধায়।
আমার নিজের জীবন থেকেই উদাহরন দেই:
১. বায়েজিদ বোস্তামী মাজারের পুকুরের রক্ষিত কচ্ছপ এর শ্যাওলা মানুষ ভক্ষন করে, সেই পুকুরের পানি বোতলে ভরে পান করে, মানুষ মনে করে তাতে রোগ মুক্তি হবে। গাছের সাথে সুতা বাঁধে কোন কিছুতে সফলতা পাবার আশায়। কবরকে সিজদাহ করে।
২. একজন মানুষ মারা যাবার পর তিনটি আমল ছাড়া সকল কিছু বন্ধ হয়ে যায়। তার মধ্যে অন্যতম একটি "এমন নেক সন্তান রেখে যাওয়া; যে সন্তান মৃত্যুর পর মৃতব্যক্তির জন্য আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করবে।" (মুসলিম)
আমার খালুই বলেন তিনি তার মৃত মায়ের কাছে দোয়া চান। তার কোন সমস্যা হলে তিনি মোল্লাদের কাছে যান তাবিজ এর জন্য।
এই ধারনা গ্রাম অঞ্ঝলে স্বাভাবিক একটি বিষয় যার কারণে আমাদের দেশে মাজার অনেক জনপ্রিয় স্থান অথচ এটি একটি শিরক এর আড্ডাস্থল।এর পর দেখা যায় আলেম, মাওলানা ডেকে এনে মোনাজাত, কোরআন খতম করা হয় অথচ এগুলো কিছুই তাদের কাছে পৌছায় না।
৩. আমার চাচা ১৯৬৫ এ ডিএমসি থেকে এমবিবিএস পাশ করেন, স্বাধীনতার পর এফসিপিএস পাশ করেন। তার জীবনের মেজরিটি ইনকাম ব্যয় করেছেন পীরের পিছনে। পীর পারমিশন না দেওয়া পর্যন্ত তিনি নামাজ পরেন নাই। পীরের পছন্দ কাওয়ালী তাই তিনিও কাওয়ালী ভক্ত, কাওয়ালী শুনে তিনি কান্না করতেন। মেইন পীর মারা যাওয়ার পর তার ছেলে গদিতে বসে, সেই ছেলেও মারা যায়, তার পর তার নাতি এখন গদিতে বসে।সেই নাতির বয়সী ছেলেটি এখন তার নয়নের মনি।তার পায়ে চুমা দেয়। ধর্ম সম্পর্কে তার জ্ঞান খুবই কম। পীরে তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দিয়েছে।
৪. পরিবারের একটি অনাকাঙ্খত ঘটনা ঘটে। সমাধানের জন্য এলাকার মসজিদের ইমামের কাছে যাওয়া হয়, তার সমাধান হিল্লাহ বিয়ে করাতে হবে। লিখিত চাওয়া হয়। সেই ক্ষেত্রে তারা লিখিত দিবে না। ফতোয়া দিতে পারবে কিন্তু লিখিত দিবে না। পরে ঢাকায় এক আলেমের কাছে সমাধান চাইলে তিনি সমস্ত বিবরণ শুনে লিখিত আকারে ফতোয়া দেন। তার ফতোয়াটি তিনটি ভাষায় ছিল।
এখনো একশ্রেনীর আলেম হিল্লাহ বিয়ে করার ফতোয়া দিয়ে বেড়ায়। এখন আমরা যদি সচেতন না হই তবে এই সমস্যা বাড়বে।
নিচের এই লেখাটা সৈয়দ মুজতবা আলীর লেখা যেখানে অনেক কিছু বলা হয়েছে ধর্ম নিয়ে তর্ক আলোচনা প্রয়োজনীয়তা নিয়ে।
"কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয়-- যেখানে দেশের সর্বোৎকৃষ্ট হৃদয় এবং মন একত্র হয়, সেখানে যদি ধর্ম অবহেলিত হয়, সেখানে যদি ধর্ম নিয়ে তর্ক আলোচনা না হয়, তা হলে শহরের অলিতে গলিতে এবং গ্রামে গ্রামে পুরুত মোল্লারা পেয়ে যান প্রায় অবারিত রাজত্ব--উর্দুতে বলে, তখন তাদের "দোনো হাত ঘি মে ঔর গর্দান ডেগমে" ডেগচির ভিতর মাথা ঢুকিয়ে তারা তখন পোলাও খায়। ধর্মের নামে তখন সমাজে জমে উঠে কুসংস্কারের স্তূপ। বিবেকহীন রাজনৈতিক নেয় তার চরম সুযোগ। বারোয়ারি পূজার নাম করে তহবিল তছরুপাৎ, মা-দুর্গা চেহারা নেন ফিল্ম স্টারের কিংবা পূজাকমিটি সেক্রেপারির লেটেস্ট গার্ল ফ্রেন্ডের।"---"সৈয়দ মুজতবা আলী রচনাবলি-৩, ধর্ম ও কম্যুনিজম্"