somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আকাশলীনা-১১ [ভিন্ন আয়োজনে অন্য সাময়িকী]

২২ শে মে, ২০১১ সকাল ১০:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আকাশলীনা
জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮] মে ২০১১] সংখ্যা ১১] বর্ষ ০১]
----------------------------------------------------------------------------
পাঠ-পূর্বক বিজ্ঞপ্তি]

আকাশলীনা- মূলত এটি একটি ছোট পত্রিকা; প্রতি বাংলা মাসের প্রথম সপ্তাহে মুদ্রণ কাগজে প্রকাশিত হয়।
বলা যেতে পারে, সাদা-কালোয় প্রকাশিত এটি আমাদের রঙিন এক স্বপ্নের গল্প!
এখানে মূল পত্রিকার বর্তমান সংখ্যাটি অনলাইন পাঠকদের জন্য সরবারাহ করা হয়েছে। ভালোলাগা-মন্দলাগা বিষয়ে যে কেউই মন্তব্য করতে পারেন...
পত্রিকাটির মুদ্রিত কপি নিয়মিত পেতে চাইলে; ফোন নম্বরসহ আপনিও ঠিকানা লিখে জানান।
আমাদের সম্পাদনা পরিচিতি এবং সরাসরি যোগাযোগ করার ঠিকানা এই লেখার নিচে উল্লেখ আছে।

সকলকে ধন্যবাদ।
-সম্পাদক, আকাশলীনা
----------------------------------------------------------------------------
মূল পত্রিকা এখান থেকে শুরু-
----------------------------------------------------------------------------
সম্পাদকীয়]

২৫ বৈশাখ ছিলো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী। আর এই জ্যৈষ্ঠে এসে আমরা তাঁকে স্মরণ করছি- একটু দেরিতে হলেও, আমাদের এ ক্ষুদ্র ও ব্যতিক্রম আয়োজন পাঠকদের ভালো লাগবে বলেই বিশ্বাস করি।

আবার বর্ষা ফিরে আসছে... টুপুর-টাপুর, ঝমঝম, কিংবা উথাল-পাতাল বৃষ্টিতে মন হারাবে যখন-তখন!
এমন দিনের অনেক পুরোনো স্মৃতিগুলো নিশ্চয় আমাদের এখনো নাড়া দেয়?
আকাশলীনা-র বন্ধুদের কাছে লিখুন সেসব কথা...

গত সংখ্যার নববর্ষ আয়োজন আপনাদের অনেকেরই ভালো লেগেছে জেনে আমরা কৃতজ্ঞ। রুবেল কান্তি নাথ-এর গল্প অতিথি এবং গোপল ভাঁড়ের রসগোল্লা-র কথা উল্লেখ করেছেন অনেকে।

আকাশলীনা-র সঙ্গে থাকুন;
ভালো হোক সবার- এ শুভ কামনা...
----------------------------------------------------------------------------
কবিতা]
উপলব্ধি
নাসির আহমেদ

আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি
শরীরের ভাঁজ থেকে কবিতা উঠে আসছে
কখনো ঘ্রাণ ছড়িয়ে দিচ্ছে চারিদিকে
মৌ-মৌ গন্ধে ভিজে যাচ্ছে আর ভিজে যাচ্ছে
চন্দ্র জোছনার মুখ

আবার, উৎকট গন্ধে কখনো-বা সে
নাড়ি-ভুঁড়ি টেনে ছিঁড়ছে
সুস্বাদু আচারের মতো শব্দের মাদুর

আর তখনই যাদুর মতো
তুরুপের সাথে সাথে
বেজে চলে কান থেকে কানে

সত্যিই মানুষ বড্ড বিচিত্র প্রাণী
তার চাইতেও অদ্ভুত তার মনন-মেধা
দোদুল্যতায় দিশেহারা হৃদয় তৃষ্ণিত হয়ে
কিছু চাইতেই পারে
অবশ্যই পারে। []
>
বানরগাতী, খুলনা
----------------------------------------------------------------------------
শ্রদ্ধাঞ্জলি : রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর]
প্রিয় রাণু!
আকাশলীনা ডেস্ক

[বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির দর্শনশাস্ত্রের অধ্যাপক ফণিভূষণ অধিকারীর তৃতীয়া কন্যা প্রীতি বা রাণু। তাঁর জন্ম ১৯০৬ সালে কাশি-তে। পারিবারিক আনুকূল্যে রবীন্দ্র রচনার সঙ্গে আশৈশব সম্পর্ক ছিলো রাণুর। তারই পরিণতিতে ১৯১৭ সালে, রবীন্দ্রনাথকে প্রথম চিঠি লেখেন তিনি। তারপর সুদীর্ঘ সময়ব্যাপী এক অসমবয়সী সম্পর্কে জড়িয়ে যান রবীন্দ্রনাথ ও রাণু। এই সম্পর্কের বাহন নিরবচ্ছিন্ন পত্রবিনিময়।
প্রিয় পাঠক,
গত ২৫ বৈশাখ ছিলো ররীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবার্ষিকী। একটু দেরিতে হলেও, আমাদের এ ক্ষুদ্র আয়োজনের মধ্য দিয়ে কবিগুরুকে শ্রদ্ধা জানাই। এখানে রাণুকে লেখা রবীন্দ্রনাথের দুটো চিঠি পত্রস্থ হলো। আশা করছি, ব্যক্তিভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেমন ছিলেন- এতে তার কিঞ্চিৎ একটা ধারণা প্রাপ্তি হবে আমাদের। -সম্পাদক]

চিঠি : এক

১৫ এপ্রিল ১৯১৮
শান্তিনিকেতন

কল্যাণীয়াসু
রাণু, তোমাদের বইয়ে বোধহয় পড়ে থাকবে, পাখীরা মাঝে মাঝে বাসা ছেড়ে দিয়ে সমুদ্রের ওপর চলে যায়। আমি হচ্ছি সেই জাতের পাখী। মাঝে মাঝে দূর পার থেকে ডাক আসে, আমার পাখা ধড়ফড় করে ওঠে। আমি এই মাসের শেষ দিকে জাহাজে চড়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পাড়ি দেব বলে আয়োজন করচি। যদি কোনো বাধা না ঘটে তাহলে বেরিয়ে পড়বো। পশ্চিম দিকের সমুদ্র পথ আজকাল সকল সময়ে পারের দিকে পৌঁছিয়ে দেয় না তলার দিকেই টানে- পূর্ব্ব দিকের সমুদ্র পথ এখনো খোলা আছে- কোন্ দিন হয়ত দেখ্ব সেখানেও যুদ্ধের ঝড় এসে পৌঁচেছে। যাই হোক্ তোমার কাশীর নিমন্ত্রণ ভুলেচি তা মনে
কোরো না; তুমি আয়োজন ঠিক করে রেখো, আমি কেবল একবার পথের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া
-জাপান-আমেরিকা প্রভৃতি দুটো কি চারটে জায়গায় নিমন্ত্রণ চট্ করে সেরে নিয়ে তার পরে তোমার ওখানে গিয়ে বেশ আরাম করে বস্ব। আমার জন্যে কিন্তু ছাতু কিম্বা রুটি, অড়রের ডাল এবং চাট্নির বন্দোবস্ত করলে চল্বে না, তোমাদের মহারাজ নিশ্চয়ই খুব ভালো রাঁধে কিন্তু তুমি নিজে স্বহস্তে শুক্তানি থেকে আরম্ভ করে পায়স পর্যন্ত যদি রেঁধে না খাওয়াও তাহলে সেই মুহূর্ত্তেই আমি- কি করব এখনো তা ঠিক করিনি- ভাবছিলুম না খেয়েই সেই মুহূর্ত্তেই আবার অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাব- কিন্তু প্রতিজ্ঞা রাখতে র্পাব কি না একটু একটু সন্দেহ আছে সেই জন্যে কিছু বল্লুম না। কিন্তু রান্না অভ্যাস হয়নি বুঝি? তাই বল! কেবলি পড়া মুখস্থ করেচ? আচ্ছা অন্তত এক বছর সময় দিলুম- এর মধ্যেই মার কাছে শিখে নিয়ো। তাহলে সেই কথা রইল। আপাতত আমাকে কলকাতায় যেতে হবে। বাক্সগুলো গুছিয়ে ফেলা চাই। আমি খুব ভালো গোছাতে পারি। কেবল আমার একটু যৎসামান্য দোষ আছে- প্রধান প্রধান দরকারী জিনিসগুলো প্যাক করতে প্রায়ই ভুলে যাই- যখন তাদের দরকার হয় ঠিক সেই সময়ে দেখি তাদের আনা হয়নি। এতে বিষম অসুবিধা হয় বটে কিন্তু গোছাবার ভারি সুবিধে হয়- কেননা বাক্সর মধ্যে যথেষ্ট জায়গা পাওয়া যায়- আর বোঝা কম হওয়াতে রেলভাড়া বা জাহাজভাড়া অনেক কম লাগে। দরকারী জিনিস না নিয়ে অদরকারী জিনিস সঙ্গে নেবার আর একটা মস্ত সুবিধে হচ্চে এই যে, সেগুলো বারবার বের করাকরির দরকার হয় না- বেশ গোছানোই থেকে যায়- আর যদি হারিয়ে যায় কিম্বা চুরি যায় তাহলেও কাজের বিশেষ ব্যাঘাত কিম্বা মনের অশান্তি ঘটে না। আজ আর বেশি লেখবার সময় নেই- কেননা আজ তিনটের গাড়িতেই রওনা হতে হবে। গাড়ি ফেল্ করবার আশ্চর্য্য ক্ষমতা আমার আছে- কিন্তু সে ক্ষমতাটা আজকে আমার পক্ষে সুবিধার হবে না অতএব তোমাকে নববর্ষের আশীর্বাদ জানিয়ে আমি টিকিট্ কিনতে দৌড়লুম। ইতি-
শুভাকাক্সক্ষী শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
২ বৈশাখ ১৩২৫

চিঠি : দুই

১৫ জুলাই ১৯১৮
শান্তিনিকেতন

রাণু
একটা রঙীন কাগজ জোগাড় করেচি। মনে কোরো না বৌমা দিয়েচেন। তাঁকে যখন বলি, ‘মনে আছে ত রাণু তোমাকে রঙীন চিঠির কাগজ আনিয়ে দিতে বলে দিয়েচে’- তিনি কেবল হাসেন। তুমি ত জানোই এই রকম সব গম্ভীর কথা বল্তে গেলে তিনি কোনোমতেই গম্ভীরভাবে নেন না। ঐ জন্যে তাঁর আশা একেবারে ছেড়ে দিয়েচি। যাই হোক্, এই কাগজের রং যদি তোমার পছন্দ হয় তাহলে কিছুদিন চালাতে পারব। কিন্তু তোমার চিঠির কাগজের সঙ্গে এর তুলনাই হয় না।
আমার জন্যে মন কেমন করতে দিয়ো না রাণু। আমি তোমার কথা ভাবি। তুমি সুখে থাকবে, সকল রকমে তোমার কল্যাণ হবে এই ইচ্ছা আমার মনে জেগে আছে। আমার মন ত তোমার কাছেই আছে। আমার মধ্যে যা ভালো তাই তোমার ভালো কামনা করচে। যিনি অন্তর্যামী হয়ে নিয়ত অন্তরে আছেন- তিনিই আমার হৃদয়ের আশীর্ব্বাদকে এবং আনন্দকে তোমার মধ্যে পৌঁছিয়ে দিচ্চেন।
পথের থেকে যে চিঠি লিখেছিলে সেটা কাল পেয়েছিলুম। তার উত্তর দিয়েচি। আজ যেটা কাশী থেকে লিখেচ, সেটাতে ছোট বউ গাবলোর বউ প্রভৃতির মঙ্গল সংবাদ পেয়ে নিশ্চিন্ত হয়েচি। তোমাদের কাশীতে গরম, এখানেও মন্দ গরম না। যদিও কাল খুব ঘন মেঘ করে বৃষ্টি হয়ে গেছে। আজ রৌদ্রে সব শুকিয়ে গেছে।
এতক্ষণ দুপুরবেলায় তোমার পরামর্শমত খাবার পর অনেকক্ষণ বিছানায় পড়ে কাটিয়েচি। খানিকটা ঘুমিয়েচি খানিকটা বই পড়েচি। এমন সময় আমার ঘড়িতে ঢং ঢং করে তিনটে বাজ্ল। অমনি ধড়ফড় উঠে পড়ে আমার সেই কোণে এসে তোমাকে চিঠি লিখ্তে বসেচি। আজ আমার ডেস্কের উপরকার ফুলদানীতে কেবল কদম ফুল সাজিয়ে দিয়ে গেচে- আমি চেষ্টা করব তোমাকে তার একটা ছবি এঁকে দিতে। এর আগের চিঠিতে তুমি আমাকে যে সব ছবি এঁকে পাঠিয়েছিলে, তার জবাব দেওয়া হয়নি- ভালো হোক্ আর মন্দ হোক্ এবার তার জবাব দিতে হবে।
একটা কথা তোমার সঙ্গে বোঝাপড়া করে নিই। তুমি বলেচ কেউ আমাকে বয়েস জিজ্ঞাসা করলে সাতাশ বল্তে। আমার ভয় হয় পাছে লোকে সাতাশ শুনতে সাতাশি শুনে বসে, আর সেইটেই সহজে বিশ্বাস করে বসে। সেইজন্যে, তুমি যদি রাজি থাক তা হলে আমি আর একটা বছর কমিয়ে বলতে পারি। কেননা ছাব্বিশ বল্লে ওর থেকে আর কিছু ভুল করবার ভাবনা থাকে না।
এইবার আমার বই লেখবার সময় এল। সেই সুভাকে নিয়ে পড়তে হবে। পিগ্মিদের গল্পটার থেকে লেখা শেষ করেচি। আমার সেই পঞ্চম ক্লাস মনে আছে ত? কেমন মজা? সেই সমরেশ জ্যোতিষ আভাসরা তেমনি করেই সবাই মিলে চিৎকার করে- রাস্তা থেকে তাদের গলা শুনে পাওয়া যায়। ঐ ক্লাসটা আমার বেশ লাগে। থার্ড ক্লাসের ছেলেরাও ক্রমে ক্রমে একটু একটু উন্নতি করেছে। ইতি-
শুভানুধ্যায়ী, রবিদাদা
৩১ আষাঢ় ১৩২৫ []
----------------------------------------------------------------------------
দূর দেশে]
সত্যি হয়ে ফিরলেন কল্পনার সিন্ডারেলা
সৈয়দা সুধন্যা

প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে কেট মিডলটনের বিয়ে যেনো রূপকথারই এক গল্প। যেনো রূপকথার সেই সিন্ডারেলা বাস্তবে এসে এক রাজকুমারের মন জয় করে নিয়েছে। ২৯ এপ্রিল এ শুভ পরিণয়ের মাধ্যমে সেই প্রেমকাহিনির সফল পরিণতি হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের পত্রিকা দ্য ডেইলি মেইল-এর সম্পাদকীয়তে লেখা হয়- আসুন, আমরা এ বিয়েকে মহিমান্বিত করি। কারণ, এর মধ্য দিয়ে আবারো প্রমাণিত হলো, ব্রিটেনই এমন সব ঘটনার জন্ম দেয়, যা সারা বিশ্বে সমাদৃত হয়।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়- সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে ওঠা এই দুজনের বিয়ের বিষয়টি নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। এতে বোঝা যায়, গত কয়েক দশকে ব্রিটিশ নাগরিকদের মানসিকতার কতোটা পরিবর্তন ঘটেছে।
ডায়ানার প্রিয় আলোকচিত্রী মারিও তেসতিনো-র তোলা প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটনের একটি ছবি দ্য সান, দ্য মিরর ও দ্য ডেইলি এক্সপ্রেস-এর মতো শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার প্রচ্ছদ পাতায় জ্বলজ্বল করছিলো।
ডায়ানার মৃত্যুর পর ব্রিটিশ রাজ পরিবারের মানসিকতার যে বিরাট পরিবর্তন হয়েছে, তা বোঝাতে টেলিগ্রাফ পত্রিকায় লেখা হয়েছে- এটি খুব দুঃখের বিষয় যে, প্রিন্স অব ওয়েলস ডায়ানা তার ছেলের এ বিয়ে দেখে যেতে পারলেন না।
সংবাদপত্রটির সম্পাদকীয়তে বলা হয়- এ বিয়ের মধ্য দিয়ে, আমাদের রাজপরিবার ও জাতীয় জীবনে নতুন কোনো অধ্যায় হয়তো উন্মোচিত হবে না, বরং নতুন একটি গ্রন্থই রচিত হবে। প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটনের এ সম্পর্ক রাজপরিবারের দীর্ঘ অভিযাত্রারই ফল।
টাইমস সাময়িকীতে বলা হয়- এ বিয়ে রাজপ্রাসাদ ও জনগণের মধ্যে যেনো এক নতুন বন্ধন।
লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় লেখা হয়- এ বিয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্ববাসীর সামনে প্রমাণিত হলো, রূপকথাও বাস্তব হয়, হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ান ডেইলি লিখেছে- হলিউডের জন্য এ বিয়ে একটি লোভনীয় সিন্ডারেলার গল্প। []
>
ইন্টারনেট অবলম্বনে
----------------------------------------------------------------------------
ভ্রমণ]
শেষ পর্যন্ত সোমেশ্বরীই
শেখ রোকন

‘এর নাম সোমেশ্বরী হলো কেনো?’
এ প্রশ্নটির মধ্য দিয়েই দলবদ্ধ নীরবতা ভেঙেছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জায়েদ ইবনে আবুল ফজল। পহেলা বৈশাখের জোছনা রাতে, দুর্গাপুরের সঙ্গে বিরিশিরির সংযোগ স্থাপনকারী সেতুর ওপর আমরা দাঁড়িয়ে তখন। নিচে বালিভরা সোমেশ্বরীতে এক ফালি প্রবাহ চকচক করছে। দূরের পাহাড় ও পল্লীগুলোর গায়ে একরাশ আঁধার মাখামাখি হয়ে দাঁড়িয়ে। নাম না জানা রাতজাগা কয়েকটি পাখি থেমে থেমে ডেকে চলছে। অদূরে কোথাও পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানের মাইকে হেঁড়ে গলায় গাওয়া শিলা কা জওয়ানি বাদ দিলে বড়ই মায়াময় পরিবেশ।
খানিকক্ষণ আগে নিভে যাওয়া বিকেলে আমরা কয়েকজন ঢাকা থেকে বেড়াতে এসেছি। দলের কনিষ্ঠতম সদস্য অরিত্র অরিন্দম ছাড়া আর সবাই নদী ও জোছনার মায়ায় খানিকটা চুপচাপ। সে কেবল শহরের ইট-কাঠ থেকে মুক্তির আনন্দে ছুটোছুটি করছে। নদী নিয়ে হাতুড়ে আগ্রহ থাকলেও সোমেশ্বরী নিয়ে নীরবতা ভাঙা সেই প্রশ্নের উত্তর তখন জানা ছিলো না। সোমেশ্বরী আমাদের গন্তব্যও নয়। সুসং দুর্গাপুরের চিনামাটির পাহাড়, নীল পানি, টংক আন্দোলনের স্মৃতিসৌধ, রানীখং গির্জা- এসব নামই বেশি উচ্চারিত হচ্ছে সবার মুখে মুখে।
এখানে আসার পর থেকে স্থানীয়রাও বারবার বলেছেন- কীভাবে খেয়া নৌকায় সোমেশ্বরী পার হয়ে রিকশায় ঘুরে ঘুরে সেগুলো দেখতে হবে।
আপাতত আমাদের সে কর্মসূচি পরদিন সকালের। তার আগে সন্ধ্যা কাটানোর জন্য আমরা হাঁটতে হাঁটতে সোমেশ্বরী সেতুতে এসে থেমেছিলাম।
এর নাম সোমেশ্বরী হলো কেনো- এ প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারলেও, পরে জেনেছি, সোমেশ্বরীর আদি নাম সিমসঙ। যেখান থেকে উৎপত্তি, ভারতের সেই মেঘালয় রাজ্যে এখনো ওই নামেই পরিচিত। গারো পাহাড় অঞ্চলকে দ্বিধাবিভক্তকারী এবং মেঘালয় রাজ্যের দীর্ঘতম এই নদী নকরেক, পাহাড়ের চূড়া থেকে উৎপত্তি হয়ে পূর্ব ও দক্ষিণ গারো পাহাড় জেলার মধ্য দিয়ে দুর্গাপুরের কাছে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। কিছুদূর গিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে একটি ধারা পুরাতন সোমেশ্বরী নামে কলমাকান্দা উপজেলার কাছে বালিয়া নদীতে মিলিত হয়েছে, এবং অন্যটি নতুন সোমেশ্বরী বা শিবগঞ্জ ঢালা নামে পূর্বধলা উপজেলার কাছে কংস নদীতে মিলিত হয়েছে। বাংলাদেশে এসে সিমসঙ কীভাবে সোমেশ্বরীতে পরিণত হলো, তার পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস-
খ্রিস্টাব্দ তেরোশো শতকের শেষের দিকে একদল পরিব্রাজক সাধু এসেছিলেন গারো পাহাড় অঞ্চলে। পাহড়ের বুক চিরে বয়ে যাওয়া স্বচ্ছতোয়া নদীটির পাশে বসে, আরাধনার আয়োজন চলছিলো তাঁর। স্থানীয় একদল ধীবর এসে সাধুদের কাছে অভিযোগ করে যে, বৈশ্য গারো নামে অত্যাচারী রাজার নির্যাতনে তারা অতিষ্ঠ। পাহাড় থেকে নেমে এসে লুট, অগ্নিকাণ্ড, হত্যাকাণ্ড চালায়। তখন সোমেশ্বর পাঠক নামে এক সাধু, ধীবরদের সংগঠিত করে অত্যাচারী রাজাকে হটিয়ে দিয়ে পাহাড় ও সমতলের বিরাট অংশজুড়ে প্রতিষ্ঠা করেন সুসঙ্গ বা সৎ সঙ্গ রাজ্য। আজকের সুসং দুর্গাপুর নাম সেখান থেকেই। আর রাজা সোমেশ্বর পাঠকের নামানুসারে সিমসঙ নদীর নাম হয় সোমেশ্বরী।
অতীতের সুসঙ্গ রাজ্য কিংবা আজকের দুর্গাপুর উপজেলাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে সোমেশ্বরী। দুর্গাপুরের যোগাযোগ, কৃষি ও মৎস্যসম্পদে নদীটির অনেক অবদান। টংক আন্দোলনসহ ওই অঞ্চলের অনেক পরিবর্তনের সাক্ষী হয়ে আছে এ স্রোতস্বিনী। লালচে বালি ও স্বচ্ছতোয়া নদীটির পর্যটনমূল্যও কম নয়। শুকনো মৌসুমে এ নদী যেমন মায়া জাগায়, তেমনি বর্ষাকালে হয়ে ওঠে প্রাণ ও শক্তির প্রতীক।
সন্দেহ নেই, সুসং দুর্গাপুরে দেখার মতো অনেক কিছুই রয়েছে। বহুল আলোচিত স্থাপনা ও আহরণ ক্ষেত্রগুলো তো বটেই। খোদ ভূপ্রকৃতিও দর্শনীয়। বাংলাদেশের আর দশটা এলাকা থেকে যে আলাদা, তা প্রথম দর্শনেই বোঝা যায়। না পার্বত্য চট্টগ্রাম, না মধুপুর গড়, না হাওরাঞ্চল, না প্লাবন ভূমি। কিন্তু তাও সোমেশ্বরীর কাছে ম্লান।
দিনভর রিকশায় ঘুরে দুর্গাপুরের সব দর্শনীয় স্থান ছুঁয়ে এসে সোমেশ্বরী পার হওয়ার সময় মনে হচ্ছিলো- শেষ পর্যন্ত সোমেশ্বরীই হৃদয়ে গেঁথে থাকবে। এমন নদীর পাড়ে বসেই কাটিয়ে দেওয়া যায় একটা জনম!
>
[email protected]
----------------------------------------------------------------------------
সম্পাদক সমীপেষু]
[প্রিয় পাঠক, আকাশলীনা-র প্রতিটি সংখ্যা হাতে পাবার পর আপনার মূল্যায়ন কী হয়? দিন দিন কি আমরা উত্তরণের পথে এগোচ্ছি, নাকি আমাদের যাত্রাপথ নিম্নগামী? পত্রিকা বিষয়ে যে কোনো সমালোচনার কথা জানিয়ে আপনিও লিখুন। -সম্পাদক]

আকাশলীনা পেয়েছি। ভালো লেগেছে সবই, তবে পাঠকের কোনো বিভাগ নেই দেখে হতাশ হচ্ছি। প্রতি সংখ্যায় পাঠকের মন্তব্য চাই। সাথে কবিতা, কৌতুক, অনুভূতিপূর্ণ কোনো ক্ষুদেবার্তা, ইত্যাদি-ইত্যাদি...
>
ইপ্সিতা, উত্তর বালুবাড়ি, দিনাজপুর
-আমরা মনে করি, আকাশলীনা পুরোটাই পাঠক-লেখকের পত্রিকা। এখানে কাউকেই ছোটো করে দেখা হয় না। যে কেউ যে কোনো বিষয়ে লিখলেই আমরা তা ছাপানোর ব্যাপারে উৎসাহী হই। ধন্যবাদ।

ব্যস্ততার কারণে আকাশলীনা-র এ সংখ্যা এখনো পড়া হয়নি। তাই আপাতত কিছু বলতে পারছি না। বুকের ভেতর থেকে যে স্বপ্ন উঠে আসে, নিশ্চয় তা কখনো কুৎসিত হতে পারে না। তাই অবশ্যই এটাও ভালো হবে।
>
সাজ্জাদ হোসেন সাজিদ, পুরানা পল্টন, ঢাকা

আকাশলীনা পেয়েছি। আপনাদের সাহসকে অভিনন্দন জানাতে হয়। আমি ক্ষুদেবার্তার মাধ্যমে লেখা পাঠাতে চাই।
>
স্বাধীন পারভেজ, তেজগাঁও, ঢাকা
-প্রাপ্তি স্বীকারের জন্য আপনাকেও ধন্যবাদ। ক্ষুদেবর্তার মাধ্যমে মূলত বন্ধুর কাছে মনের কথা বিষয়ক অনুভূতিগুলো পাঠাতে পারেন। এ সংখ্যার ১৪ নং পৃষ্ঠাটি লক্ষ করুন।

আকাশলীনা-তে আরো বেশি বেশি লেখা ছাপানোর চেষ্টা করুন।
>
রুবেল কান্তি নাথ, দক্ষিণ কাট্টলী, চট্টগ্রাম
-সাধ্যের মধ্য সবটুকুই করার চেষ্টা থাকে আমাদের। অর্থনৈতিক বিষয়টা এখানে বড় বেশি বাস্তবতা। যে কারণে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের অপারগতা প্রকাশ করতে হয়।
----------------------------------------------------------------------------
রম্য]
সড়ক নং ২১৯
ইফতেখার মাহমুদ

সার্জেন্ট রহিমুদ্দিন জোয়ার্দার তাঁর মোটরসাইকেলে চড়ে এক টং দোকানে এসে, একটা পানের অর্ডার দিলেন।
তখন দুপুর আড়াইটা বাজে। এর একটু আগেই তিনি দুপুরের খাওয়া খেয়েছেন। খাওয়ার পর, এক খিলি পান না খেলে, তাঁর দিনটাই মাটি হয়ে যায়। তার ওপর এমনিতেই, আজ সারাদিনে একটা টাকাও বাড়তি আয় হলো না বলে, বেজায় মন খারাপ তাঁর। এরপর পান না খেয়ে, মন খারাপের পরিমাণটাকে আর বাড়তে দিতে চাইছেন না বলেই- পানের খোঁজে প্রায় এক কিলোমিটার মোটরসাইকেল ছুটিয়ে এতোদূর এলেন।
দোকানদারের হাত থেকে পান নিয়ে মুখে পুরতেই একটা ব্যাপার খুব নজরে এলো- রহিমুদ্দিন দেখলেন, রাস্তা দিয়ে একটা প্রাইভেট কার খুবই ধীরলয়ে এগিয়ে চলেছে। তাঁর মনে হলো, একটা রিকশার গতিও এরচেয়ে বেশি হয়।
প্রাইভেট কার বা গাড়ির মালিকের কোনো সমস্যা হয়েছে কিনা ভেবে, মোটরসাইকেল নিয়ে সার্জেন্ট রহিমুদ্দিন গাড়িটার কাছাকাছি চলে এসেছেন। তিনি গাড়িটাকে থামার নির্দেশ দিলেন।
ড্রাইভার জানালার কাচ নামিয়ে দিতেই সার্জেন্ট রহিমুদ্দিন জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি ব্যাপার, গাড়ি এতো আস্তে চালাচ্ছেন কেনো? সমস্যা কী?’
ড্রাইভার হেসে বললেন, ‘একটু আগে, এ রাস্তার মুখ দিয়ে ঢুকতেই একটা সাইনবোর্ড চোখে পড়লো। ওতে লেখা- ১৫। তাই সাইনবোর্ডের নির্দেশ অনুসরণ করে ১৫ কিলোমিটার গতিতে গাড়ি চালাচ্ছি। আর এ কারণেই আপনার মনে হচ্ছে- গাড়িটা এতো আস্তে যাচ্ছে কেনো।’
ড্রাইভারের কথা শুনে সার্জেন্ট রহিমুদ্দিন জোয়ার্দার হাসতে শুরু করলেন। এক সময়ে হাসি থামিয়ে তিনি ড্রাইভারকে বলেন, ‘১৫ মানে ১৫ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালাতে হবে- এটা আপনাকে কে বললো?’
ড্রাইভার একটু দ্বিধান্বিত হয়ে বলেন, ‘কেউ বলেনি, স্যার। আমি নিজে নিজে এটা অনুমান করে নিয়েছি।’
লোকটার বোকামি দেখে সার্জেন্ট হতাশ হয়ে বললেন, ‘১৫ মানে, ওটা ১৫ নং সড়ক।’
এ কথা বলতে বলতেই সার্জেন্ট রহিমুদ্দিন জোয়ার্দারের চোখ পড়ে গাড়ির পেছনের সিটে। ওখানে উস্কোখুস্কো চুল, রুক্ষ্ম চেহারা, ফ্যাকাসে চোখ নিয়ে এক মহিলা বসে আছেন।
এবার সার্জেন্টের মনে একটা সন্দেহ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। তিনি সোজা হয়ে ড্রাইভারকে ফের জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনার পেছনের সিটের যাত্রীকে ওমন ভয়ংকর দেখাচ্ছে কেনো? উনার সমস্যা কী?’
এবার ড্রাইভার একগাল হেসে বললো, ‘না স্যার, এর একটু আগে আমরা ২১৯ লেখা সড়ক দিয়ে এলাম কিনা!’
বিস্মিত সার্জেন্ট রহিমুদ্দিন জোয়ার্দার কী বলবেন? তিনি হা করে তাকিয়ে আছেন ড্রাইভারের দিকে... []
>
ইন্টারনেট অবলম্বনে
-------------------------------------------------------------------------------
বিশেষ রচনা]
অমৌসুমি বইমেলা
ইমরুল কায়েস

আমাদের বইমেলার মৌসুম ফেব্রুয়ারি, বাংলা মাসের হিসাবে মাঘ-ফাল্গুন। ফেব্রুয়ারির অমর একুশে বইমেলা নিয়ে আমাদের গর্ব অনেক। সময়ে, স্থানে ও গুরুত্বে একুশে বইমেলার সঙ্গে তুলনীয় কোনো বইমেলার কথা ভাবা যায় না।
এককালে একুশে বইমেলাকে টেক্কা দেওয়ার জন্য ঢাকা বইমেলার আয়োজন করা হয়েছিলো ফেব্রুয়ারির মেলার ঠিক আগে, ডিসেম্বরে। প্রথম প্রথম অনেকে চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। ভেবেছিলেন- একুশে বইমেলা গুরুত্ব হারাবে। আন্তর্জাতিক একটি মেলা হিসেবে ঢাকা বইমেলার পরিকল্পনা হয়েছিলো। সাজানো হয়েছিলো জাঁকজমক আয়োজনে।
কিন্তু পাঠকের সাড়া তেমন মেলেনি। পাঠকের সাড়া মেলেনি বলে, লেখক-প্রকাশকের সাড়াও মেলেনি। এমনকি, দেশের বাইরের প্রকাশকরা পর্যন্ত তেমন আগ্রহ দেখাননি। পার্শ্ববর্তী দেশের বাংলা বইয়ের প্রকাশকরাও পর্যন্ত তেমন আগ্রহ দেখাননি।
ঢাকা বইমেলা এখন নিবুনিবু। একুশে বইমেলাই বইয়ের মূলধারা হিসেবে শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু সমস্যা হলো, মেলার সঙ্গে বই লেখা, বই প্রকাশ, বিপণন- এমনকি, বই কেনা পর্যন্ত সব কার্যক্রমই যেনো ফেব্রুয়ারির মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। বইয়ের এই ফেব্রুয়ারি-নির্ভরতা নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত।
সারা বছরে যদি এক মাসেই পাঠকের বইয়ের কথা মনে হয়, তবে তো প্রতিদিনের বা নিদেনপক্ষে নিয়মিত পাঠাভ্যাসটুকু গড়ে উঠবে না। সবচেয়ে বড় কথা, প্রকাশনা শিল্প মৌসুমি ভিত্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না। সারা বছরের বিপণন চালু হবে না।
এমন একটা পরিস্থিতিতে, অনেকেই ভাবছেন সারা বছর নানা উপায়ে বই নিয়ে পাঠকের দোরগোড়ায় হাজির থাকার কথা। কাজটি কিন্তু সহজ নয়; কেনোনা, দেশব্যাপী বইয়ের দোকান নেই, যে দোকান আছে সেখানে মানসম্মত বই বিপণনের তেমন ব্যবস্থা নেই। দেশের প্রেক্ষাপট অনেক বড়, খোদ রাজধানী শহর থেকেও এমন দোকান উঠে যেতে বসেছে, যেখানে গেলে প্রত্যাশিত বইটি কিনতে পাওয়া যাবে। এখনো যে কয়টি দোকান আছে আজিজ সুপার মার্কেট বা নিউ মার্কেট-এ, তা কতোদিন থাকবে- সে এক বড় প্রশ্ন।
সারা বছর বই বিপণনের এই বেহাল পরিস্থিতি থেকে মনে হয়, আমরা ক্রমশ পাঠাভ্যাসবঞ্চিত জনগোষ্ঠীতে পরিণত হতে চলেছি। আমাদের বিপণি কেন্দ্রগুলোতে, এমনকি আমাদের শিক্ষাকেন্দ্রেও বই বিক্রির ব্যবস্থা নেই। অথচ তথ্যপ্রযুক্তি বিকাশের পরও, জীবনধারার পরিবর্তন সত্ত্বেও পৃথিবীর অনেক জাতি বইয়ের সঙ্গ ছাড়েনি।
আমরা মনে করি, এমন একটি পরিস্থিতিতে আমাদের বইয়ের জন্য কিছু জায়গা তৈরি করা উচিত। ঢাকার প্রকাশকদের মধ্যে অনেকে, বিশেষত তরুণরা এখন বই বিপণনের উপায় নিয়ে ভাবছেন। তারা ফেব্রুয়ারির বইমেলার বাইরে ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বইমেলার আয়োজন করছেন। বই বিপণনের এই বিকল্প আয়োজনগুলো ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে। এগুলো যতো নিয়মিত হবে, পাঠক ততোই বছরভর বইয়ের কথা ভাবতে পারবেন। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরের এমন বইমেলার নিয়মিত আয়োজন হতে পারে, মানুষের সঙ্গে বইয়ের নিবিড় সম্পর্কের সেতুবন্ধন। []
----------------------------------------------------------------------------
বন্ধুর কাছে মনের কথা]
সবুজ বাসনা
এমদাদুল হক তাসনিম

সবুজের কোমল চাদরে বেষ্টিত আমাদের গ্রাম। সবুজের গালিচা বিছানো গ্রামের সবুজাভ পরিবেশ আমাকে মুগ্ধ করে। করে বিমোহিত। প্রতিনিয়ত হাতছানি দিয়ে ডাকে, আহ্বান করে সবুজে রাঙিয়ে তুলতে। তাই আমি ছুটে যাই সবুজের বিস্তৃত মাঠে। যেখানে সবুজ ঢেলে দিয়েছে তার রূপ। বিছিয়ে দিয়েছে নরম গালিচা।
আমি দীর্ঘক্ষণ বসে থাকি সে ঘাসের কোমল গালিচায়। তখন সবুজকে স্পর্শ করি। আহা! সবুজ কতো সুন্দর। কতো কোমল। ভাবি- আমি যদি সবুজ হতাম! সবুজের বুকে দেখেছি বিচিত্র বর্ণের কতো যে পাখি। দেখেছি পাখিদের খেলা, মেলা ও ঝগড়া। আর দেখেছি রাজা নামের কালো পাখিটির ক্ষমতা। দূর্বাঘাসে উড়তে দেখেছি ঘাসফড়িং। রঙবেরঙের প্রজাপতি, পোকামাকড়... আরো কতো কী! গ্রামে যখন সন্ধ্যা হয় চারদিকে আঁধারের ঢল নেমে, তখন দেখা হয় জোনাকির জ্বলা-নেভা খেলা। জোছনা রাতে আমাদের গ্রামকে মনে হয় স্বপ্নপুরী। চারদিকে বিরাজ করে নীরবতা। ঝিরিঝিরি বাতাস নাড়িয়ে দেয় হৃদয়। দূর থেকে শোনা যায় রাখালের মন মাতানো বাঁশির সুর। পাখিদের কিচিরমিচির রব আর শুকনো পাতা ঝরে পড়ার মর্মর শব্দ।
তাই আমি গ্রাম নিয়েই কবিতা রচনা করি। গ্রামের ছবি আঁকি হৃদয়জুড়ে। []
>
ঢাকা
----------------------------------------------------------------------------
বন্ধুর কাছে মনের কথা]
দুঃস্বপ্ন
ইপ্সিতা

দুধ কলা দিয়ে আমার বাবা যে ভাই নামক কালসাপদের পুষছিলো, আজ তাদের ছোবলে আমরা জর্জরিত। তবে কি রক্তের বাঁধনের চেয়ে সম্পদ বড়? আমার লুটেরা চাচাদের হাতে চলে যাচ্ছে আমাদের বৈধ সম্পদ। ছোটো হয়ে আসছে আমাদের পৃথিবী।
মানবিকতা নামক অনুভূতিকে, বাস্তবতা নামক আরেক ঘুণপোকা এভাবেই কুরে কুরে খায়- সভ্যতা এর কি জবাব দেবে? []
>
উত্তর বালুবাড়ি, দিনাজপুর
----------------------------------------------------------------------------
আকাশলীনা
জ্যৈষ্ঠ ১৪১৮] মে ২০১১]
সংখ্যা ১১] বর্ষ ০১]

কৃতজ্ঞতা] হিমেল অনার্য
সম্পাদক] নোমান ভূঁইয়া

শব্দ বিন্যাস ও সমন্বয়] সৈয়দা সুধন্যা
প্রচ্ছদ পরিকল্পনা ও পৃষ্ঠাসজ্জা] রঙছুট
বিশেষ সহযোগিতায়]
শফিক হাসান, মহিবুল হাসান কাউসার
সাবরিনা আহমেদ
সার্বিক ব্যবস্থাপক] সাইফুল আমিন

যোগাযোগ]
+88 018 18 731377 [সাইফুল আমিন]
[email protected]

মূল্য] ১০ টাকা
[স্বপ্নের কোনো মূল্য হয় না।
তবু যাঁরা এই স্বপ্ন কিনতে চান,
তাঁদের জন্য এই নামমাত্র মূল্য নির্ধারণ]

সম্পাদক ও প্রকাশক
নোমান ভূঁইয়া কর্তৃক সার্কুলার রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা থেকে প্রকাশিত;
এবং হাতিরপুল, ধানমন্ডি, ঢাকা- ১২০৫
থেকে মুদ্রিত

একটি জয়ী প্রকাশনা
==============================================
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×