somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তারেক রহমানকে নরেন্দ্র মোদি’র নিমন্ত্রণ, মিত্র হেফাজতে ইসলাম হতাশ!!

২৮ শে মে, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভারতের ১৫তম লোকসভা নির্বাচনে কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি তথা বিজেপি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের পর বিজেপি নরেন্দ্র মোদি’কে প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচন করেন এবং নরেন্দ্র মোদি’র নেতৃত্বে গত ২৬ মে ২০১৪ তারিখে ৪৫ সদস্য বিশিষ্ট মন্ত্রিপরিষদ গঠন করে। নরেন্দ্র মোদি’র নেতৃত্বে লোকসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ এবং তাঁর নেতৃত্বে সরকার গঠনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে শুরু হয় তুলকালাম কান্ড। মহাপ্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় কার আগে কে মোদি দা’কে অভিনন্দন জানাবেন। কেউই পিছিয়ে নেই। তবে এক্ষেত্রে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় তৎসময়ে প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যমতে, প্রতিযোগিতায় অনায়াসেই প্রথম হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। যে কোন দেশের সাধারণ নির্বাচনে দেশটির যে কোন রাজনৈতিক দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ এবং ক্ষমতায়নকে কেন্দ্র করে অন্যান্য দেশের রাজনৈতিক দল, রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধানগণের পক্ষ হতে অভিনন্দন বার্তা প্রেরণ করা একটি স্বাভাবিক ও নিয়মতান্ত্রিক শিষ্ঠাচারেরই অংশ। এখানে আপত্তি বা সংশয় প্রকাশের কিছু নেই। কিন্তু, লোকসভা নির্বাচনে কট্টর হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক দল বিজেপি’র সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ, ভারতে ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ এর স্থলে রাম মন্দির নির্মাণ এবং ভারত হতে কথিত বাংলাদেশীদের বের করে দেয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রত্যয়ী নরেন্দ্র মোদি’র নেতৃত্বে সরকার গঠনকে কেন্দ্র করে আমাদের রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে যে মহাপ্রলয় বেগে দৌড় প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় সেটি ছিল বলতে গেলে অষ্টম আশ্চর্য। এটা ছিল গুরুর জন্য শিষ্যের সর্বস্ব বিসর্জনের ঘটনা। শুধু কি তাই! অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়েছে এখানেই শেষ নয়। শিষ্য সর্বস্ব বিসর্জনের পর বলতে চাচ্ছেন গুরু আরও কিছু লাগবে? আমার আফসোস, যে গতি ও দুর্বার আকাংক্ষার বশবর্তী হয়ে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা অন্য একটি দেশের নেতার দৃষ্টি আকর্ষনের প্রতিযোগিতায় নেমেছেন তার কিঞ্চিত গতিতে যদি তারা এদেশ ও জনগণের কল্যাণের প্রতিযোগিতায় নামতেন তবে আমরা নিশ্চিতভাবেই আরও এগিয়ে যেতে পারতাম।

যাক, অভিনন্দন বার্তা প্রেরণ কিন্তু দেশে অবস্থানরত নেতাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। আমাদের বিশাল মাপের যে সকল নেতাগণ চিকিৎসার নামে বিদেশে আয়েশী অবস্থানে রয়েছেন তারাও অভিনন্দন বার্তা পাঠাচ্ছেন। কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যে জানা যায়, লন্ডনে বসবাসরত বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানও মোদি’র ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন। আর তারেকের অভিনন্দন বার্তা পেয়ে নরেন্দ্র মোদিও নাকি তারেক রহমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে ভারত সফরের নিমন্ত্রণ জানিয়েছেন। খবরটি আদো সত্য কি না বা এর গুরুত্ব কতটুকু তা আমি জানি না। তবে এ খবর প্রকাশের পর বিএনপি’র ঝিমিয়ে পড়া ও হতাশাগ্রস্থ নেতাকর্মীগণ আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন। আর এ যেন “দারগা ডেকেছেন চাচি, আমি কি আর মানুষ আছি’’। এছাড়াও ভাবটা এরকম যেন, আর চিন্তাই, “সামনে আসছে সুদিন, আমরাও হব ক্ষমতাসীন’’। ভাইয়ার নিজস্ব প্রকাশনা থেকে জানা যায়, মোদি দা তাকে ভারত সফরের নিমন্ত্রণ করেছেন। তেমনটি দাদার আশির্বাদেই ভাইয়া দেশে ফিরবেন। ক্ষমতায়ও বসবেন অথবা দাদা বসিয়ে দিবেন। কিন্তু বাধ সেজেছেন হেফাজতীরা। দারুণ ক্ষুব্ধ তারা। হেফাজতীদের জন্য কিনা করেছেন তারেক রহমান। ০৫ মে ২০১৩ তারিখে ঢাকার শাপলা চত্বরে হেফাজতীদের সমাবেশসহ তাদের সমস্ত খরচের অর্থ সংগ্রহের জন্য তারেক রহমান অসুস্থ শরীর নিয়ে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ভ্রমণ করে অর্থ সংগ্রহ করেছিলেন। তারেকের পরামর্শে হেফাজতপ্রেমী তার মা সেদিনের সমাবেশে দেশবাসীকে ঝাপিয়ে পড়ার আহবান জানিয়েছিলেন। সেই ভাইয়াই কিনা আজ হেফাজতীদের ছেড়ে ত্রিশূলের দিকে দৌড়াচ্ছেন । হেফাজতীদের ভুলে গিয়ে তিনি অভিনন্দন বার্তা পাঠাচ্ছেন কট্টর হিন্দুত্ববাদী ও ইসলাম বিরোধী নেতা শ্রী নরেন্দ্র মোদিকে। এটাই কি রাজনীতি?

...............প্রশ্নের উত্তর আমার জানা নেই। জানার প্রয়োজনও নেই। দাদার নিমন্ত্রণে ভাইয়া যাবেন ভারতে। অতীতে ভাইয়ার নিমন্ত্রণে মনিশা কৈরালা আসতেন ঢাকায়। ভবিষ্যতেও হয়তো ভাইয়ার নিমন্ত্রণে দিপীকা পাড়ুকৌন আসবেন ঢাকায় এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি দুশ্চিন্তায় আছি, ঘরের শত্রুই কি বিভীষণ হবে? এমনিতেই দেশব্যাপী অপহরণ, গুম, হত্যা আর রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের থ্রিলার দেখে আতংকে আছি। ভবিষ্যতে যখন বিএনপি বনাম হেফাজতীদের মধ্যে ভয়ংকর থ্রিলার আর সাসপেন্স শুরু হয়ে যাবে তখন আমরা কোথায় যাব? কে দেবে আমাদের নাগরিক জীবনের নিরাপত্তা?
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×