রাজনৈতিকভাবে মতিউর রহমান চরম সুবিধাবাদী একটি চরিত্র । ১৯৬২ সন থেকে ১৯৫৯ সন পর্যন্ত ছাত্র জীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন । ১৯৭৩ সন হতে ১৯৯০ সন পর্যন্ত তিনি সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন । জানা যায় তিনি ১৯৭৬ সালে অনুষ্ঠিত সিপিবি’র ৪র্থ সম্মেলনে তৎকালীন কমরেড ফরহাদ ও মনি সিং এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে দলের নেতৃত্ব দখলের চেষ্ঠা করেছিলেন । এছাড়া সিপিবি’র গোপন সিদ্ধান্তসমূহ ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসে ফাঁস করে দেয়ার ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়ায় সিপিবি ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন তার উপর নজরদারী শুরু করেছিল । এ জন্য তাকে পার্টিতে ডাবল স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে বিবেচনা করা হতো । পরবর্তীতে সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের পতন ঘটলে মতিউর রহমানের সুবিধাবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এবং তিনি সিপিবি’র রাজনীতির সাথে সম্পর্ক চিহ্ন করে সুবিধাবাদী রাজনীতির ফায়দা হাসিলের চেষ্ঠায় লিপ্ত হয়ে বর্তমানেও তা বহাল রেখেছেন ।
মতিউর রহমান একজন বিতর্কিত ও সুবিধাবাদী সাংবাদিক । পেশাগতভাবেও তার এই চরিত্র তিনি বহাল রেখেছেন । ১৯৭০ সন থেকে ১৯৯১ সন পর্যন্ত মতিউর রহমান সিপিবি’র দলীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘একতা’ এর সম্পাদক ছিলেন । পাশাপাশি এ সময়ে তিনি কমিউনিস্ট সোভিয়েতপন্থী প্রকাশনা World Marxist Review এর বাংলাদেশ এডিশনের সম্পাদক ছিলেন । ১৯৯১ সনে তিনি দৈনিক আজকের কাগজ পত্রিকায় যোগদান করেন । কিন্তু তার সুবিধাবাদী চরিত্র ও পত্রিকার মালিক কাজী শাহেদ আহমেদ এর সাথে মতিবিরোধের কারণে পরবর্তীতে ১৯৯২ সনে আওয়ামী লীগ নেতা সাবের হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন দৈনিক ভোরের কাগজ পত্রিকায় যোগদান করেন । ভোরের কাগজ পত্রিকার তৎকালীন সম্পাদক নাঈমুল ইসলামকে কৌশলে সরিয়ে দিয়ে তিনি উক্ত পত্রিকার সম্পাদক হয়েছিলেন এবং ১৯৯৭ সন পর্যন্ত উক্ত পদে বহাল ছিলেন । পরবর্তীতে দৈনিক আজকের কাগজের মতো দৈনিক ভোরের কাগজের মালিক সাবের হোসেন চৌধুরীর সাথে মতবিরোধের কারণে উক্ত পত্রিকা হতেও বেরিয়ে আসেন । এরপর ১৯৯৮ সনের নভেম্বর মাস হতে তিনি প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন ।
মতিউর রহমান বরাবরই বিতর্কিত, কৌশলী হলুদ সাংবাদিকতা ও সুবিধাবাদী সাংবাদিকতার সাথে জড়িত রয়েছেন । প্রথম আলো পত্রিকার মাধ্যমে তার এই হলুদ সাংবাদিকতা ও সুবিধাবাদী চরিত্র মাঝে মাঝেই প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়েছে । এ ব্যাপারে প্রথম আলো পত্রিকায় বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত বিতর্কিত সংবাদসমূহের কিছুটা উল্লেখ করা যেতে পারে । ১৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে প্রথম আলো’র তৎকালীন ক্রোড়পত্র আলপিন- মহানবী (সাঃ) কে ব্যাঙ্গ করে একটি কার্টুন ছাপা হয়েছিল । এর জন্য দেশব্যাপী চরম প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে মতিউর রহমান দেশবাসীর নিকট প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন । গত ০৫ জানুয়ারি ২০১৪ তারিখের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহিলাগণ কর্তৃক ভোট দেয়া নিয়ে প্রথম আলো পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে একটি ছবি ছাপা হয় । উক্ত ছবিতে ফটোশপ করে সকল মহিলার কপালে সিঁদুর এঁটে দেয়া হয়েছিল । প্রথম আলো পত্রিকার এরূপ সাম্প্রদায়িক উস্কানীর ফলে বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীরা যশোর, দিনাজপুর ও গাইবান্ধায় হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেক বাড়ী-ঘরে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর চালিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি করেছিল । দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন পত্রিকার সম্পাদকীয় পাতায় জামায়াত-শিবিরের লবিষ্টগণ কর্তৃক ‘বাংলাদেশের উপর অবরোধ আরোপ করা হতে পারে’ শিরোনামে লিখাকে উক্ত পত্রিকার সম্পাদকীয় মন্তব্য হিসেবে প্রথম আলো পত্রিকায় সংবাদ পরিবেশনপূর্বক প্রতারণার আশ্রয় নেয়া হয়েছিল । বাস্তবে উক্ত লেখাটি সম্পাদকের মন্তব্য ছিল না ।
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান রাজনৈতিকভাবে একটি বিতর্কিত ও প্রশ্নবোধক চরিত্র । অতীতে তিনি কমিউনিস্ট তথা সোভিয়েত এর এজেন্ডা বাস্তবায়নে নিয়োজিত ছিলেন । পরবর্তীতে তিনি হয়ে যান ডাবল স্ট্যান্ডার্ড । নিকট অতীত থেকে বর্তমানে তিনি বিশেষ একটি দেশের অথবা কতিপয় দেশের বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য একটি মিশনে নিয়োজিত রয়েছেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে । বিগত ১/১১ সরকার প্রতিষ্ঠার পূর্বে ও পরে তার চরিত্র ছিল বিতর্কিত । মাইনাস টু ফর্মূলা বাস্তবায়নের নেপথ্য কুশিলবদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম । অবশ্য ঢাকার সাংবাদিক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের একটি কথা বিশেষভাবে প্রচলিত আছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই মতিউর রহমান - ড. ইউনুস অতীতেও কাজ করেছেন এবং বর্তমানেও তাদের তৎপরতা থেমে নেই । তাদের রাজনৈতিক লক্ষ্য এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও প্রায়শই এক ।
বলতে কিছুটা সংকোচ হচ্ছে, না বলেও পারছিনা আমাদের ড. ইউনুস স্যার যেমন সমকামিতার পক্ষে, তেমনি মতিউর রহমান ভাইও কিছুটা বহুকামিতার পক্ষে । মতিউর রহমান ভাই ও ‘পারসোনা’ নামক হাইফাই বিউটি পার্লারের মালিক ও বিউটিশিয়ান কানিজ আলমাস এর সম্পর্কের ব্যাপারে অনেকের মুখে মুখরোচক কথা শোনা যায় । কানিজ আলমাসের বিরুদ্ধে অতীতে পত্র-পত্রিকায় এবং পুলিশি তদন্তেও প্রকাশ পেয়েছিল যে পারসোনা নামক বিউটি পার্লারে যে সকল মহিলা রুপ চর্চার জন্য আগত মহিলাদের বিশেষ মুহূর্তের ছবি ধারণ করা হতো । বিষয়টি পত্রিকায় ব্যাপকভাবে প্রকাশিত হলেও এক্ষেত্রে মতিউর রহমান এবং প্রথম আলোর ভূমিকা ছিল কিছুটা নীরব এবং কানিজ আলমাসের পক্ষে । ঐ ঘটনার চারদিন পর প্রথম এই বিষয়ে প্রথম আলো নিউজ দেয়!! আর রিপোর্ট করলেন ঘটনার চারদিনে সবাই যা জেনেছে, তার উল্টাটা!!! এবং চারদিন পর কানিজ আলমাসকে রক্ষার জন্য এই নিউজ কিসের ইঙ্গিত বহন করে?? অনেকেই এর পিছনে কানিজ আলমাস এবং মতিউর রহমান বিভিন্ন স্থানে একান্তে সাক্ষাৎ ও নিবিড় অন্তরঙ্গতাকেই দায়ী করেন । আবার অনেকে বলেন এ ব্যাপারে মতিউর রহমান ভাইকে দোষারোপ করে লাভ নেই । মতিউর রহমান ভাই তো ব্যাসিক্যালি...।।।