গাড়ির জানালা নিচে নামাতে নামাতেই আঁতকে উঠলো মস্তিষ্ক।
জ্যামের জটিল সমীকরণে-
ধূলিময় বাতাস, এদিক ওদিক স্বার্থপরতার ফুটপাথ, ময়লা আর ড্রেনের গন্ধ সুতীব্র আঘাত নিয়ে এলো .....
মনে হলো, কাঁচ উঠিয়ে বাইরের দুনিয়ার ছোটলোকি আগ্রাসন বন্ধ করে দিই।
এসি-র শীতল হাওয়ায় শরীর সিটে হেলিয়ে একটু চোখ বুজলেই-
পৌঁছে যাবো বিলাসী স্বপ্নের স্বর্গালোকে।
সেখানে যন্ত্রনা থাকবে না ... থাকবে ভোগবিলাসী শান্তি।
হয়তো লুসিফারের অসীম করুনায় জানালা বন্ধ করা হলো না ...
আতিপাতি চোখ ঠাঁই নিলো-
ফুটপাথে দুমড়ানো মুচড়ানো শরীরের ভাঁজে ভাঁজে।
কেউ ছিন্নভিন্ন কাথা, কেউ বা ছালার আবরণে,
অধিকাংশই উদোম আদিম অণুকরনে
মূল্যহীন খুলিটাকে ঠেলে দিয়েছে মহামূল্যবান ইটের গাঁথুনিতে।
এখান থেকে যখন দেখছি ... মনে হচ্ছে ...
কি পরিতৃপ্তি! কি সম্ভোগ! কি আনন্দের বন্যায় বেঘোরে ঘুমোচ্ছে ওরা!
আসলে–
পেটজুড়ে ছুঁচোর লাথি সামলাতে এই অমানুষিক তৃপ্তি না নেবার বিকল্পই বা কই!
নিজেকে বেশ ভাগ্যবান মনে হল,
আত্মতুষ্টির তীর্যক হাসিকে মুখোশ পড়ালাম ... আল্লাহ্ ভালো রাখছে।
সৃষ্টিকর্তা রূপসী বাংলা দিতে পারে,
দিতে পারে সেখানে থাকবার উপযোগী সুন্দর সুন্দর মুখ ...
আর দিতে পারে আত্মতুষ্টির মুখোশের সাথে সাথে
ওই ভুখা কঙ্কালগুলোর উপর পিচ ঢালাইয়ের প্রশস্ত রাস্তা।
এখন কেউ সংবিধানকে ধর্মীয় গ্রন্থ বানাতে তৎপর, কেউ নিজ নিজ জীবনচরিত!
সঙ হিসেবে পড়ে রয় শুকনো হাড়সর্বস্ব শরীর, পড়ে রয় বিনোদনের উপকরণ হিসেবে!
জ্যাম কেটে গেলে ছুটে চললাম আবার ...
আবার হয়তো পথিমধ্যে শয়তানের আসামী হয়ে কড়া নাড়বো কখনো নিজের বদ্ধ দুয়ারে।
হয়তো আবারও আত্মতুষ্টির বেড়া গড়ে তুলতে চাইবো মুখোশের অন্তরালে।।
ক্রমাগত নিজেকে বড় জাহির করার প্রবণতার অদম্য গতির পিছনে পড়ে রইলো-
একজন মানুষের কথা,
কয়েকদিন টানা বর্ষনে বৃষ্টির কাব্যিক আবদন ফুরিয়েছে ...
এখন শুধু শহরের ড্রেন উপচানো কর্দমাক্ত পানির কথা মনে পড়ে।।
কৃতজ্ঞতা :: অঞ্জন দা।।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




