somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংবিধানে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন: সুশাসনের জন্য পদক্ষেপ

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমান সংবিধান পুনর্লিখন বা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এটি পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। না হলে, নতুন সরকার এটিকে অনির্বাচিত বা অবৈধ সরকারের সংবিধান হিসেবে বাতিল করতে পারে। তবে সংবিধান যদি সময়োপযোগী ও জনকল্যাণমূলক উপায়ে পরিবর্তন করা হয়, বিশেষ করে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য, তা দেশের জন্য একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। নিম্নে এমন কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ করা হলো যা বাংলাদেশে দুর্নীতিমুক্ত সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে।


১. দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: যিনি ইতিপূর্বে দুই বা ততোধিকবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন, তিনি পুনরায় নির্বাচন করতে পারবেন না।

২. সাজাপ্রাপ্তদের নির্বাচন নিষিদ্ধ: যিনি কোনো অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

৩. দলীয় পদে অভিজ্ঞতা: যিনি দলের কোনো পদে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেননি, তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদে মনোনীত হতে পারবেন না।


৪. দুর্নীতির প্রমাণ: যার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ রয়েছে, তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

৫. দলীয় প্রধানের নিষেধাজ্ঞা: দলীয় প্রধান সরকারপ্রধান হতে পারবেন না, দলীয় ও সরকারী দায়িত্ব পৃথক করতে হবে।

৬. সম্পদের যৌক্তিক উৎস: প্রার্থীর সম্পদের উৎস যৌক্তিক না হলে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

৭. মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ: যার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে, তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

৮. পরিবেশের ক্ষতি: প্রার্থীর মালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠান যদি পরিবেশের ক্ষতি করে, তবে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন না।

৯. শিক্ষাগত যোগ্যতা: প্রার্থীর ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে।

১০. বিদেশে চিকিৎসার রেকর্ড: যদি প্রার্থী কোনো রোগের চিকিৎসার জন্য দেশে ব্যবস্থা থাকলেও বিদেশে চিকিৎসা নেন, তাহলে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হবে।

১১. দলীয় গণতন্ত্র: দলীয় প্রধানকে অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা হিসেবে নির্বাচিত হতে হবে।

১২. গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের রেকর্ড: যার বিরুদ্ধে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের রেকর্ড রয়েছে, তার প্রার্থীতা বাতিল করা হবে।

১৩. মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মকে পুঁজি করে নির্বাচন: যারা মুক্তিযুদ্ধ বা ধর্মকে পুঁজি করে নির্বাচন করবেন, তাদের প্রার্থীতা বাতিল করতে হবে।

১৪. প্রার্থীর সন্তানদের শিক্ষা: প্রার্থীর সন্তানদের ন্যূনতম মাধ্যমিক পর্যন্ত দেশের ভেতরে লেখাপড়া করতে হবে, নতুবা তার প্রার্থিতা বাতিল হবে।

৫. বায়োমেট্রিক ভোটার আইডি: নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বায়োমেট্রিক ভোটার আইডি বাধ্যতামূলক করা।

১৬. ডিজিটাল ভোটিং ব্যবস্থা: নির্বাচন প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল ভোট প্রদানের ব্যবস্থা চালু করা।

১৭. ইশতেহার ভঙ্গের শাস্তি: পূর্ববর্তী নির্বাচনে ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করলে, তিনি পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।


১৮. কালো টাকা সাদা করা: যিনি কালো টাকা সাদা করেছেন, তার প্রার্থীতা বাতিল হবে।

১৯. ডিজিটাল লেনদেন বাধ্যতামূলক: রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে ডিজিটাল লেনদেন বাধ্যতামূলক করা।

২০. শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল: সাংসদ ও মন্ত্রীদের শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করতে হবে।

অতিরিক্ত সুপারিশ:
• ক্ষমতার অপব্যবহার: যারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে, তাদের রাজনীতি থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করা।
• স্বচ্ছ নির্বাচনী তহবিল: প্রার্থীদের নির্বাচনী তহবিলের উৎস প্রকাশ করতে বাধ্য করা।
• জনগণের জন্য জবাবদিহিতা: প্রতিটি জনপ্রতিনিধিকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর জনগণের সামনে তাদের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

এই ধরনের পদক্ষেপ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হলে, তা বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন যুগের সূচনা করতে পারে এবং দুর্নীতিমুক্ত সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৪৪
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিছু হিন্দু অখন্ড ভারত চায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮




মুসলিম অখন্ড ভারত শাসন করেছে তখন তারা ছিলো সংখ্যা লঘু। খ্রিস্টান অখন্ড ভারত শাসন করেছে, তারা তখন সংখ্যা লঘু মুসলিম থেকেও সংখ্যা লঘু ছিলো। তারপর মুসলিমদেরকে সাথে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। টাইম ম্যাগাজিনের আগামীর ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় বাংলাদেশের নাহিদ ইসলাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১২




নাহিদের ভাষ্য, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম– অবশ্যই তার অবসান হতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গল্প প্রকাশিত হবার পর নিষিদ্ধ হয়

লিখেছেন জাহিদ শাওন, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৫০


এক কাপ চা, শীতের সন্ধ্যায় বেশি ঝালের ভর্তায় মাখানো চিতই পিঠার অজুহাতে বুকপকেটে কতবার প্রেম নিয়ে তোমার কাছে গিয়েছিলাম সে গল্প কেউ জানে না।
আজকাল অবশ্য আক্ষেপ নেই।
যে গল্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধী চেষ্টা করেছিলেন বাংলাদেশের মিলিটারীকে ক্ষমতা থেকে দুরে রাখতে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৩:২৪



১৯৭১ সালের জেনারেশন'এর কাছে ইন্দিরা (১৯১৭ - ১৯৮৪ ) ছিলেন ১ জন বিশাল ব্যক্তিত্ব; যু্দ্ধ লেগে যাওয়ার পর, উনি বলেছিলেন যে, বাংগালীরা ভালো ও নীরিহ জাতি, তিনি এই জাতিকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - পর্ব ৩

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:২৩

জুলাই ১৮: ছাত্রলীগের হামলা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা এবং ঢাবি প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে ১৭ই জুলাই কমপ্লিট শাট ডাউন কর্সুচী ঘোষনা করে বৈষম্যিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×