বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিষোদগারের চর্চা নতুন নয়। শেখ হাসিনার শাসনামলে যেমন এই অপসংস্কৃতির বিকাশ ঘটেছে, তেমনি পূর্ববর্তী সময়েও নেতিবাচক বক্তব্য, ব্যক্তিগত আক্রমণ ও চরিত্রহননের রাজনীতি ছিল। তবে তখনও মতাদর্শের চর্চা ও ন্যূনতম সৌজন্যবোধ কিছুটা রক্ষিত ছিল।

কিন্তু ২০২৫ সালের জুলাইয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন তথাকথিত "জনতার সরকার"-এর ঘোষণাপত্রে একটি বিপজ্জনক মোড় দেখা যায়। এতে আওয়ামী লীগকে 'দুর্নীতিগ্রস্ত', 'স্বৈরাচারী' ও 'জাতির জন্য অভিশাপ' বলে আখ্যায়িত করা হয়। এটি কেবল রাজনৈতিক সমালোচনা নয়, বরং একটি দলের ঐতিহাসিক ভূমিকাকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিষোদগারের চেষ্টা। এই ভাষা রাজনৈতিক মেরুকরণকে তীব্রতর করেছে, যা ইতিহাসে বিরল।
ড. ইউনূস ক্ষমতায় আসার পর বিষোদগার ও চরিত্রহননের কৌশল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। এখন বিরোধীদের যুক্তি দিয়ে পরাস্ত করার চেয়ে হেয়প্রতিপন্ন করাই লক্ষ্য। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচকদের বিরুদ্ধে গুজব, হুমকি ও ট্রল ছড়ানো রাষ্ট্রীয় নীতির অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে মুক্ত মতপ্রকাশ, গণতান্ত্রিক বিতর্ক ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা কোণঠাসা

ড. ইউনূসের শাসনকালে বিষোদগারের মাত্রা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তিনি ও তাঁর সহযোগীরা প্রতিপক্ষকে কেবল মতবিরোধী নয়, ব্যক্তিগত আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করছেন। গণমাধ্যম থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বক্তৃতায় ভাষার শালীনতা লোপ পেয়েছে। অপমান, বিদ্বেষ ও প্রতিশোধস্পৃহাই যেন রাজনীতির মূল ভাষা হয়ে উঠেছে।

এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ৫০ বছরেও বাংলাদেশের রাজনীতি সুস্থ ধারায় ফিরবে না। আদর্শ ও যুক্তিভিত্তিক বিতর্কের স্থলে যদি বিদ্বেষ প্রধান হাতিয়ার হয়, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রাজনীতিকে সম্মানজনক পেশা বা জনসেবার মাধ্যম হিসেবে দেখবে না।
এ থেকে উত্তরণের জন্য প্রগতিশীল চিন্তাবিদ, বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ ও তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথা, বিষোদগারই হয়ে উঠবে আমাদের রাজনৈতিক পরিচয়ের একমাত্র প্রতীক।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


