নব্বই দশকের শেষের দিকে, যখন বাংলাদেশ তখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেভাবে পদার্পণ করেনি, তখন এদেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা ছিল তুঙ্গে। সেই সময় আমি ভারতের সমর্থক ছিলাম। সমর্থনের মাত্রা এতটাই প্রবল ছিল যে, ভারত হেরে গেলে রাতের ঘুম নষ্ট হয়ে যেত। বিশেষ করে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ হলে উত্তেজনা অন্য মাত্রা পেত। চারপাশে পাকিস্তান সমর্থক বেশি থাকায়, ভারত হেরে গেলে ট্রলের শিকার হতে হতো।

তবুও অস্বীকার করার উপায় নেই, সেই সময় পাকিস্তানের দল ছিল এক অসাধারণ কম্বিনেশন। ওয়াসিম আক্রাম, ওয়াকার ইউনুস, মুশতাক আহমেদ, সাইদ আনোয়ার—এদের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের খেলা দেখার অভিজ্ঞতাই ছিল ভিন্নরকম। তাই বর্তমান সময়ে পাকিস্তান ক্রিকেটের দুরবস্থা দেখে সত্যিই মায়া লাগে। একসময় যে দলের জয় খারাপ লাগত, আজকাল সেই পাকিস্তান হারলে খারাপ লাগে, আর জিতলে ভালোই লাগে।

বর্তমান সময়ে আফগানিস্তান ক্রিকেটের দিকেও নজর রাখতে ভালো লাগে। মনে হয়, ভবিষ্যতে এই দল আরও বড় কিছু করতে সক্ষম হবে।
বাংলাদেশের কথা উঠলেই মনটা ভারী হয়ে যায়। দেশে খেলার মাঠ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে, আর তরুণদের হাতে ক্রিকেট ব্যাট নয়, স্মার্টফোন। আড্ডায় গল্প নেই, আছে শুধু পর্দায় অবিরাম স্ক্রলিং। এই অবস্থা হতাশাজনক হলেও এর চেয়েও ভয়ঙ্কর হলো—তরুণদের এক বড় অংশ রাজনৈতিক অস্থিরতায় জড়িয়ে পড়ছে।

কখনো তাদের ব্যবহার করা হয় সস্তা রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে, কখনো তারা মাঠের খেলার পরিবর্তে রাজপথে সংঘর্ষে নেমে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেখানে গবেষণা, শিক্ষার পরিবেশ আর খেলাধুলা বিকশিত হওয়ার কথা, সেখানে ছাত্ররা জড়িয়ে পড়ছে দলীয় কোন্দলে, মারামারিতে, এমনকি প্রাণঘাতী সহিংসতায়। অল্প বয়সে যারা বই হাতে বা খেলাধুলার মাঠে থাকার কথা, তারা রাজনৈতিক ‘ক্যারিয়ার’-এর আশায় জীবন ধ্বংস করে ফেলছে।
ফলস্বরূপ একটি প্রজন্ম শিক্ষা, সংস্কৃতি ও খেলাধুলায় পিছিয়ে পড়ছে। যে শক্তি দেশকে এগিয়ে নেয়ার কথা, সেই তরুণ শক্তিই বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আজকে মোবাইল আসক্তি, কালকে রাজনৈতিক হানাহানি—এই দুই মিলেই তরুণদের স্বপ্ন ভেঙে যাচ্ছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


