somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শ্রদ্ধেয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

১৬ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৭ মার্চ, ২০১৫

জানি এই চিঠি আপনি পাবেন না কোনদিন। কিন্তু গৌরীপ্রসন্ন লিখে গেছেন- শোন একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি প্রতিধ্বনি আকাশে বাতাসে ওঠে রঙ্গি। সেইসব লক্ষ মুজিবের জন্য এই চিঠি যারা আপনার সোনার বাংলা গড়তে লড়াই করে যাচ্ছে।
আপনি আমাদের শিখিয়ে গেছেন কিভাবে অধিকার আদায় করতে হয়। কিভাবে মাথা তুলে বাঁচতে হয়। যুদ্ধবিদ্ধস্ত একটি দেশ। ব্রীজ-কালভার্ট সব ভাঙ্গা। মাত্র ১ বছরে আপনি সেইসব ব্রীজ-কালভার্ট মেরামত করেছেন। মাত্র সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে আপনি আমাদের সুন্দর সংবিধান, জাতিসংঘের সদস্যপদসহ বিভিন্ন সংঘ এর সদস্যপদ উপহার দিয়েছেন যা আমাদের সার্বভৌমত্ব এর পরিচয় ফুটিয়ে তুলেছে। আপনি বাঙ্গালিদের এতই ভালোবাসতেন যে একদম অন্ধভক্ত ছিলেন। শত অপরাধ করলেও আপনি এই বাঙ্গালিদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। আমরা আপনার ক্ষমার দৃষ্টান্ত দেখতে পাই যখন যুদ্ধাপরাধী বাঙ্গালিদের আপনি সাধারণ ক্ষমা ঘোষনা করলেন এই বলে- তায়েফের ময়দানে আমাদের নবীও তায়েফবাসীকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন।
বাংলায় প্রবাদ আছে- প্রদীপের নিচে অন্ধকার। এই বাঙ্গালিরাই আপনার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো। আবার এই বিশ্বাস ঘাতকতার দলে কিছু মুক্তিযোদ্ধারাও ছিল! আপনাকে বারবার ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে সাবধান করে দেয়া হয়েছিল । কিন্তু আপনি বিশ্বাস করেন নাই। কোন বাঙালি আপনার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করবে তা আপনি বিশ্বাস করেন নাই। এত বিশ্বাস আপনার কি করে হল? তা সবার প্রশ্ন?
আমি আপনার অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ে আমার যতটুকু ধারণা হয়ত এই কারণেই আপনি বাঙ্গালিদের এত বিশ্বাস করতেন। একবার আপনি নৌকায় করে কোথায় যেন যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আপনার নৌকায় ডাকাত ধরলো। সব কিছু লুট করে নিবে। পরে তারা যখন জানতে পারলো এটা আপনার নৌকা তখন ডাকাতদল মাঝির উপর অনেক রাগ করলো। কেন সে আগে বলে নাই এটা মুজিবের নৌকা। ডাকাতরাও আপনাকে সমীহ করে চলত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন- মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ। আবার হুমায়ূন আজাদ বলে গেছেন- বাঙ্গালিদের উপর বিশ্বাস রাখা বিপদজনক।
আপনি বাঙ্গালিদের বিশ্বাস করতেন দেখে নিজের বাসস্থানে থাকতেন। কঠোর নিরাপত্তার সেই গনভবনে থাকতেন না। অনেককেই বলতে শুনি নরওয়ের প্রেসিডেন্ট সাইকেলে করে অফিসে যায়। অমুক প্রেসিডেন্ট লোকাল বাসে করে অফিসে যায়। আমাদের বঙ্গবন্ধুও তো সাধারণ মানুষের সাথে মিশে চলতেন। আমরা বাঙ্গালিরা কি পেরেছিলাম তাকে সেই বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে?
তবে বাঙ্গালিরা একবার এক হয়ে গেলে তাদের দমিয়ে রাখা অসম্ভব। এখন বাঙ্গালিদের এক করার দায়িত্ব সেইসব লক্ষ লক্ষ মুজিবদের। নতুন তরূণ সমাজকে দেশকে প্রাধান্য দিয়ে জেগে উঠতে হবে। আমার প্রিয় একজন শিক্ষক আবু হেনা রেজা হাসান স্যার উদাহরণ হিসেবে বলতেন- ভারত যদি স্বামী হয় তবে তার বিভিন্ন রাজ্যগুলো হচ্ছে সতীনের মত। এক রাজ্য অন্য রাজ্যকে দেখতে পারেনা। চুলোচুলি লেগে আছে কিন্তু যখন স্বামীর স্বার্থে আঘাত লাগে তখন সব সতীন এক হয়ে যায়। এই দেশকে সামনে এগিয়ে নেবার জন্য আমাদের সবাইকে এক হয়ে যেতে হবে। ব্যক্তিস্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে হবে।
১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী যখন আক্রমন করলো তখন বঙ্গবন্ধু চাইলেই পারতেন দেশ ত্যাগ করে পালিয়ে যেতে বা পাকিস্তানের কথামত শর্তে রাজি হয়ে বিলাসিতা গ্রহণ করতে। কিন্তু তিনি বাঙ্গালিদের কথা ভুলেন নাই। নিজের কথা না ভেবে এই বাঙ্গালিদের কথা ভেবে তিনি ধানমন্ডির নিজের বাসায় অবস্থান করছিলেন। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা উপহার দিয়ে গেছেন এখন আমাদের দায়িত্ব এসেছে দেশকে গড়ার।
আসুন সকল বিভেদ ভুলে আমরা বাঙ্গালিরা আবার এক হই। দ্বিজেন্দ্রলাল রায় বলে গিয়েছিলেন- সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি। আমাদের জন্মভূমির সেই হারানো সুদিন ফিরিয়ে আনতে আমি তরুণ সমাজকে জাগ্রত হবার জন্য অনুরোধ করছি। চলুন আমরা একই বৃন্তের মৃণাল ধরে বিকশিত হই। এই দেশকে সোনার বাংলা করে তুলি।
বাঙ্গালিদের পক্ষ থেকে শেখ পরিবারসহ আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করছি কারণ আমরা আপনার বিশ্বাস রক্ষা করতে পারি নাই। সেইসাথে অনুরোধ করবো বর্তমান এই তরুণ প্রজন্মের উপর আরেকবার বিশ্বাস রাখতে। বর্তমান তরুণ প্রজন্মের সাথে আছে শক্তিশালী তথ্য প্রযুক্তি। যে প্রযুক্তি তিউনিশিয়ায় বিপ্লব ডেকে এনেছিল যা আরব বসন্ত নামে পরিচিত। তারা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সবাইকে এক প্লাটফর্মে একত্রিত করতে পারবে। এই তরুণ প্রজন্মকে তথ্য বিকৃতি করে বিভ্রান্ত করা যাবে না কারণ সকল তথ্য তাদের কাছে আছে। তাই তরুণ প্রজন্মের উপর আরেকবার বিশ্বাস করুন। এই তরুণ প্রজন্ম এই দেশকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ আপনি পৃথিবীতে আগমন করেছিলেন। আজকের এই শুভক্ষণে কবির ভাষায় প্রার্থণা করি-
যতকাল রবে পদ্মা, মেঘনা
গৌরী, যমুনা বহমান,
ততকাল রবে কীর্তি তোমার
শেখ মুজিবুর রহমান।

ইতি
আপনার একজন অনুরাগী বাঙালি
আলামিন মোহাম্মদ
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×