somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিশোরীর কোমল বুকে হায়েনার দল অতপরঃ আত্মহত্যা; রাষ্ট্রপতির বন্ধু সীমান্ত শকুনের দল এবং মিলা-তন্বিদের কোমরের খেইল

১৮ ই এপ্রিল, ২০১১ সকাল ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ক্লাস নাইনের কথা।বেশ বান্দর স্বভাবের ছিলাম বলে স্যারদের ব্ল্যাক লিষ্টে ছিলাম সব সময়।ক্লাসে কিছু ঘটলে সবার আগে সন্দেহ করা হত আমাকে।প্রায় আমার ডাক পড়ত অফিসে।তিনটা বেত একসাথ করে আমাকে ইচ্ছামত ধোলাই দিত স্যাররা।এক মেয়ে বন্ধুকে আমি সব সময় আটার বস্তা ডাকতাম।একদিন ওকে দেখে আটার বস্তা বলে ডাক দেওয়ার কয়েক সেকেন্ড পরই ঘাড়ে হাতের স্পর্শ পেলাম।ফিরে দেখি হুজুর স্যার (ধর্ম স্যার)।ফলাফল,অফিসে নিয়ে গিয়ে স্যার আমাকে ২টা বেত দিয়ে ইচ্ছামত ধোলাই করল।স্কুল ছুটির পর বাড়িতে আসার আম্মুও ইচ্চামত ধোলাই দিল।বাইরে কোন ঝগড়া করে এলে দোষ না হলেও ঘরে ধোলাই খেতাম।তখন আম্মুর উপর প্রচন্ড রাগ হলেও এখন বুঝতে পারি আম্মুর এমন শাসন আমার অনেক উপকারই করেছে।আমি যদি প্রশয় পেতাম তাহলে হয়ত বন্ধুকে আটার বস্তা বলে যে প্রশ্রয় পেতাম সে প্রশ্রয় আমাকে মহিতোষ করে তুলত।শুকুন যেমন লাশের উপর ঝাপিঁয়ে পড়ে আমিও তেমন হায়েনার মত কোন না কোন কিশোরী আন্না বিশ্বাসের কোমাল বুকে কিংবা কোন না কোন শাবনুরের উপর শুকুনের মত ঝাপিঁয়ে পড়তাম।আত্মহত্যা করত কোন না কোন কিশোরী যেভাবে করেছে ১৪বছরের কিশোরী আন্না বিশ্বাস ।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ধানদিয় ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের দিনমজুর বাদল আর সারতীর মেয়ে আন্না বিশ্বাস।জামা ছিড়েঁ যাওয়ার লজ্জায় ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়ে মেয়েটি পড়াশোনা বন্ধ করে দেয়।শেষে অভাবের তাড়নায় মানুষের বাসায় কাজ করতে যায় মেয়েটি।কিন্তু মায়ের কোমল স্পর্শ বাবার ভালবাসা পেতে মরিয়া মেয়েটি চলে আসে বাসায়।গত সোমবার ডাল কেনার জন্য দোকানে যাওয়ার সময় মহিতোষদের বাড়ির পাশে যেতেই আন্না বিশ্বাসকে বাজে কাজ করার প্রস্তাব দেয় মহিতোষ।মেয়েটি বাসায় এসে বলার পর বাদল ও সারতী বিচার চাইতে গিয়ে মহিতোষদের লাঠি,ঝাড়–,জুতার বাড়ি খেয়ে ফিরে আসে ।কিছুক্ষন পর মহিতোষরা দল বেধেঁ আবার আসে বাদলের বাড়িতে এসে বাদলকে ঘর থেকে টেনে বের শুরু করে মহিতোষরা।বাদলকে বাচাঁতে গিয়ে সারতীও আন্না বিশ্বাসকে মারধর শুরু করে।এ সময় তাঁরা আন্নার জামা ছিড়েঁ তাকে ঘরের পিছনে নর্দমার পিছনে ফেলে দিয়ে বুকের উপর লাথি মারতে থাকে মহিতোষ।অতঃপর কিশোরী আন্না বিশ্বাস অপমানে আত্মহত্যা করে। (প্রথম আলো)


না, শুধু আন্না নয় এর আগেও দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কিশোরী শাবনূরকে একই গ্রামের প্রভাবশালী ওয়াজেদের বখাটে ছেলে রবিউল প্রতিনিয়ত প্রেম নিবেদনসহ কুপ্রস্তাব দেওয়ার বিচার নিয়ে রবিউলের বাবা ওয়াজেদের কাছে যায় শাবনূরের নানী মা,নানী,মামা।প্রভাবশালী ওয়াজেদ ছেলের বিচার না করে উল্টো শাবনুরের মা,নানী,মামাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। মা,নানী,মামার অপমানে এই নষ্ট সমাজের প্রতি অভিমানে আত্মহত্যা করে শাবনূর। -আমার দেশ ।ভাবলেই অবাক হয়ে যায় একজন বাবা কি করে এভাবে সন্তানের বিচার না করে উল্টো অভিযোগকারীর উপর নির্যাতন করে।
২..
যে বন্ধুদেশকে আমরা বিনাশুল্কে আমাদের দেশের উপর দিয়ে কোন টাকা ছাড়ায় চলাচলের যায়গা করে দিয়েছি সে বন্ধুদেশ আমাদের নববর্ষে কি দিয়েছে?হু আমাদের একটি লাশ দিয়েছে।তবে লাশটি টেনে হেচঁড়ে নিয়ে গেছে শুকুনের দল।গত কয়েকদিন ধরে এ নিয়ে বেশ কিছু পোস্টে আমি দেখেছি সীমান্তের শুকুনদের ১৪গুষ্টি উদ্ধার করতে ।কিন্তু আমরা কি নিজ দেশের দিকে তাকিয়েছি?আসুন একটু তাকিয়ে দেখি।

ভারত বিরোধী আগ্রাসনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে এদেশী ভারতীয় দালালদের হামলায় নিহত আবদুর রাজ্জাক যাদের হামলায় প্রকাশ্যে নিহত হয়েছিল তাদের শাস্তি মাপ করে দিয়েছে আমাদের রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান।

ওহ! কি চমৎকার আমাদের দেশপ্রেম! নিজ ঘরে শুকুন প্রেমিক শুকুন রেখে ভিন দেশের শুকুনদের ১৪গুষ্টি উদ্ধার করছি আমরা।এই না হলে বাঙালী।স্যালুট দেশপ্রেমিক স্যালুট।তোমাদের দেশপ্রেমকে ঠিক ওভাবে প্রণাম করি যেভাবে ভারতে গিয়ে কপালে হাত উঠিয়ে প্রণাম করে আসে আমাদের মতিয়া চৌধুরী।(প্রণব বাবু বুক বরাবর হাত রেখে প্রণাম করেছে আর আমাদের মতিয়া খালা আবেগ কন্টোল করতে না পেরে হাত কপালে উঠিয়ে ফেলেছন।ছবিটি কেউ দেখতে চাইলে বলবেন ।কমেন্টে দিয়ে দেব)
শকুন প্রেমী রাষ্ট্রপতির প্রিয় শকুনরা আজও ২টি লাশ ফেলেছে সীমান্তে...(৪.১৮.২০১১)


৩..



চলে গেল নববর্ষ।দেশ জুড়ে প্রতিনিয়ত নারী ধর্ষন হচ্ছে তেমনি আমরা আমাদেও সংস্কৃতিকে কোন না কোনভাবে প্রতিনিয়ত ধর্ষন করছি। ১লা বৈশাখে আমরা যে সংস্কৃতি নিয়ে ১দিনের বাঙালী সেজেছি সেই একটা দিনও আমরা আমাদের সংস্কৃতিকে ধর্ষন করার হাত থেকে বাচাঁতে পারিনি।মিলার কোমরের খেইল আর ৩ভাগের ২ভাগ নগ্ন তন্বির শিলাকি জওয়ানি কিংবা আই এম সেক্সি টাইপের গানের তালে তালে তন্বির দেহের খেইল দেখে আমরা হাত তালি দিয়েছি নিজেদের কোমারও দুলিয়েছি ।কেউ কেউ আবার সামান্য প্রতিবাদ করেছি।আমরা পাউরুটি চুরি করার অপরাধে দুটি বাচ্ছা শিশুর উপর হায়েনার মত ঝাপিয়ে পড়তে পারি কিন্তু যুগ যুগ ধরে চলে আসা আবহমান গ্রাম বাংলার উৎসবের দিনে মিলা তন্বিদের নষ্টামীর শাস্তি হিসেবে মিলা তন্বিদের স্টেজ থেকে নামিয়ে ২টা চড় দিতে পারিনা ।

যে দেশে কাপঁড় ছিড়ে যাওয়ার লজ্জায় কিশোরী আন্না স্কুলে যেতে পারেনা সে দেশে স্বল্পবসনা তন্বিদের দেহের খেইল আমাদের শরীরে আগুন ধরায়;যে দেশে ১৪ বছরের কিশোরীরা আত্মহত্যা করে আত্মসম্মান বোধের কারণে সে দেশে রাষ্ট্রপতির আত্মসম্মানবোধ বলে কিছু নেই;যে দেশে হাজার হাজার কোটি টাকা কয়েকমাসে লুটপাট যারা করে তাদের আমরা সালাম দেয় সে দেশে ক্ষুদার যন্ত্রনায় পাউরুটি চুরি করা দুটি শিশুকে আমরা বীরের মত পেঠায়।আমাদের এমন দেশপ্রেম দীর্ঘজীবি হউক এই কামনা করতে ইচ্ছা হচ্ছে কিন্তু বলতে ইচ্ছা হচ্ছেনা

হয় গর্জে উঠে বীরের মত মরো বাঙালী না হয় রাজনীতিবিদদের বেশ্যা হয়ে থাকো

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১:০৮
৩৬টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×