somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সব দেশ মিলিয়ে প্রায় দেড় লাখের মত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে

১৭ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ইউরোপের কয়েকটি দেশে করোনার বিস্তার বাড়ছে। এ অবস্থায় ইতালির পথ অনুসরণ করে জরুরি বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে স্পেন ও ফ্রান্স। স্পেনে জরুরি কেনাকাটা, ওষুধ ক্রয় কিংবা কাজ ছাড়া মানুষদের ঘরের বাইরে বের হওয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। শনিবার সেদেশে দুই হাজারের বেশি মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৭৫৩ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮৮ জন। শনিবার রাতে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানচেজের স্ত্রী বেগোনা গোমেজের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবং তার স্ত্রী মাদ্রিদে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে আছেন এবং স্বাস্থ্য বিভাগের বেঁধে দেওয়া নিয়ম-কানুন মেনে চলছেন বলে সরকারের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।অন্যদিকে ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৯১ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৪০০। দেশটিতে ক্যাফে, রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল এবং বেশির ভাগ দোকানপাটই এখন বন্ধ। ধর্মীয় ভবনগুলো খোলা থাকবে, তবে জনসমাগম এবং অনুষ্ঠানসমূহ বাতিল করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও বন্ধ থাকবে। অন্যদিকে ইতালিতে গত সোমবার থেকে লকডাউন চলছে। দেশটিতে শনিবার ১৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৪৯৭ জন। চীনের পর দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ হাজার ১৫৭ জন। করোনার কারণে অবরুদ্ধ ইতালির বিভিন্ন শহরের বাসিন্দারা নিজেদের বাড়ির জানালা ও বারান্দা থেকে একসঙ্গে গান গেয়ে, গিটারে সুর তুলে নিজেদের মধ্যে সাহস সঞ্চারিত করার পাশাপাশি কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে লড়াই করা চিকিত্সক ও নার্সদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

যদিও এর উৎপত্তিস্থল চীনে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে তবে এখন পুরো বিশ্বজুড়ে এটি মহামারি আকার ধারণা করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বের প্রায় ১৩২টি দেশে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতি ভাইরাসটিতে নতুন করে ৪২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৭৯৫ জনে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও প্রায় ১০ হাজার মানুষ। আমাদের দেশে প্রথম তিন জন আক্রান্ত হলেও তাদের সবাই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। কিন্তু নতুন করে আবারও দুজন আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে বিশ্বব্যাপী নানান সুরক্ষা গ্রহণ করা সত্যেও আমাদের দেশে এখন প্রবাসীদের প্রবেশ থামছে না। ফলে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশ ফেরতদের কোয়ারেন্টিনের রাখার ব্যবস্থা করলেও তা মানসম্মত নয় এবং সেখানে প্রবাসীরা থাকতেও চাইছেন না। ফলে অনেকেই হোম কোয়ারেন্টিনে থাকছেন। কিন্তু তা কতটা ঝুঁকি মুক্ত এটাই এখন চিন্তার বিষয়।

এই কোয়ারেন্টিন প্রক্রিয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম উদাহরণ দিয়ে বলছেন, “একটা বালতিতে রাখা মাছের বাচ্চাকে আপনি ধরতে পারবেন। কিন্তু বালতি থেকে যখন তাদের পুকুরে ছেড়ে দেবেন, তখন তাদেরকে আর ধরা যাবে না।”

হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বিদেশ থেকে আসা বাংলাদেশিদের আপত্তির পর তাদের ছেড়ে দেওয়া নিয়ে একথা বলেন বিএসএমএমইউর সাবেক এই উপাচার্য।

আড়াই মাস আগে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর ওই শহর থেকে আসা বাংলাদেশিদের ঢাকার আশকোনার হজ ক্যাম্পে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণের পর তাদের ১৪ দিন পর ছাড়া হয়েছিল।

চীন থেকে দ্রুতই বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে করোনাভাইরাস; কভিড-১৯ রোগীর সন্ধান মিলতে থাকে ইউরোপেও।

কিন্তু চীনের উহান থেকে আসা বাংলাদেশিদের পর আর কাউকে সরকারিভাবে কোয়ারেন্টিনে না রেখে তাদের বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়। তার মধ্যেই ইতালি থেকে আসা দুজনের মধ্যে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ধরা পড়ে, তাদের একজনের স্বজনের দেহেও তা ছড়ায়।

এরপরও ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টিনের পরামর্শই দিয়ে যাচ্ছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর)। আর উপসর্গ কারও মধ্যে দেখলে তাকে হাসপাতালে আইসোলেশনে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছিল।

যাদের মধ্যে রোগের লক্ষণ রয়েছে, তাদের হাসপাতালে আলাদাভাবে রেখে চিকিৎসা দেওয়াটাই আইসোলেশন। আর যাদের মধ্যে কোনো লক্ষণ নেই, কিন্তু তারা আক্রান্ত এলাকা থেকে এসেছেন কিংবা কোনো কভিড-১৯ রোগীর সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাদের নিজেদের আলাদা রাখার প্রক্রিয়াটি হল কোয়ারেন্টিন।

আইইডিসিআরের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ২ হাজার ৩১৪ জন বিদেশফেরত হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। হাসপাতালে ‘আইসোলশনে’ আছেন ১০ জন।

গত ২১ জানুয়ারি থেকে রোববার দুপুর পর্যন্ত ৬ লাখ ৬ হাজার ১২ জন বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে এসেছেন। তাদের ১৪ দিন হোমে কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হলেও অনেকই ঘরের বাইরে যাচ্ছেন, ঘুরছেন, যা আতঙ্কিত করছে অন্যদের।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন- করোনাভাইরাসের উৎপত্তি আমাদের দেশে নয়। ফলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি দেশের বাইরে থেকেই আসছে, আসবে। এই অবস্থায় বিদেশ থেকে কেউ ভাইরাসটি নিয়ে আসছেন কি না, তা চিহ্নিত করার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে। শুরুর দিকে যে তিনজন আক্রান্তের খবর এসেছে, তাদের দুজন বিদেশ থেকে আগত। একজন তাদের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হয়েছেন। অর্থাৎ প্রথমবার স্ক্রিনিংয়ে তাদের চিহ্নিত করা যায়নি। তাই বিদেশ থেকে আগতদের মাধ্যমে যাতে ভাইরাসটি ছড়াতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

ডা. নজরুল ইসলাম এ প্রসঙ্গে বলেন, “বিদেশ ফেরতরা যদি হোম কোয়ারেন্টিনের নিয়ম সঠিকভাবে পালন করেন, তাহলে ঠিক আছে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে ,আমরা যাদের বাড়িতে থাকতে বলছি, তারা সেটা ঠিকভাবে পালন করতে পারছে কি না?”

এই অসচেনতার কারণে রোগ দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এই ভাইরোলজিস্ট। আবার বাংলাদেশের বাড়িগুলোতে কোয়ারেন্টিন সফল হবে কি না, তা নিয়ে তার ঘোর সংশয় রয়েছে।

“বাসায় কোয়ারেন্টিনের সময় কেউ না কেউ তাকে সেবা-শুশ্রূষা করছে। যারা এ কাজটা করছে তারা তো প্রশিক্ষিত না, বাসারই লোক। তাদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা উপকরণও নেই। সেবাদানকারী পার্সোনাল প্রকেটশন না নিলে তারাও ইনফেক্টেড হয়ে যেতে পারে।”

ইতোমধ্যে গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, ইতালি থেকে আসা অনেকেই এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিডি নিউজের রিপোর্টে বলা হয়, নরসিংদীর পলাশ উপজেলার একটি গ্রামে সম্প্রতি কয়েকজন ইতালি থেকে ফিরেছেন। একজন এসেছেন এক সপ্তাহ আগে। তারা এলাকায় ঘোরাফেরা করায় আশপাশের মানুষের মধ্যে অস্বস্তি কাজ করছে।

ওই গ্রামের একজন বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তারা বাজারে যাচ্ছে, চায়ের দোকানে আড্ডা মারছে। তারা আমাদেরই আত্মীয়-স্বজন। এ কারণে প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও চক্ষুলজ্জায় কেউ কিছু বলছে না।

“কিন্তু সবার মধ্যেই একটা অস্বস্তি-আতঙ্ক কাজ করছে। হয়তো তারা এই রোগের জীবাণু বহন করছেন না, তারপরও সতকর্তা হিসেবে বাড়িতে অবস্থান উচিৎ ছিল।”

আরও বিভিন্ন জেলায় বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের অবাধ বিচরণের খবরও গণমাধ্যমে এসেছে।

একারণে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে নির্দিষ্ট স্থানে কোয়ারেন্টিন করার পরামর্শ দেন অধ্যাপক নজরুল। তার মতে, হাসপাতাল ছাড়াও স্থানীয় পর্যায়ে স্কুল-কলেজ খালি করে সেখানে লোকজনকে রাখা যেতে পারে।


তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
এবং বাংলাদেশের কয়েকটি পত্রিকা থেকে নেয়া ।

সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১২:৫১
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের দাদার দাদা।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৫৫

বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী।

আমার দাদার জন্মসাল আনুমানিক ১৯৫৮ সাল। যদি তার জন্মতারিখ ০১-০১-১৯৫৮ সাল হয় তাহলে আজ তার বয়স... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেনে নিন আপনি স্বাভাবিক মানুষ নাকি সাইকো?

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:১৮


আপনার কি কারো ভালো সহ্য হয়না? আপনার পোস্ট কেউ পড়েনা কিন্তু আরিফ আর হুসাইন এর পোস্ট সবাই পড়ে তাই বলে আরিফ ভাইকে হিংসা হয়?কেউ একজন মানুষকে হাসাতে পারে, মানুষ তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×