কালামুল্লাহ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক সম্মানিত যে ব্যক্তি অধিক মুত্তাক্বী।
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এ অর্জিত তাক্বওয়া রমাদ্বান শরীফ-এর পরবর্তী মাসগুলিতেও বজায় রাখতে হবে।
অর্থাৎ রমাদ্বান শরীফ-এর পরবর্তী মাসগুলিতেও সর্বপ্রকার অশ্লীল ও শরীয়ত বিরোধী কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে।
তবেই হাক্বীক্বী কামিয়াবি অর্জন করা ও নাযাত লাভ করা সম্ভব হবে।
যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম, সাইয়্যিদুল আউলিয়া, ইমামুল আইম্মাহ, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক সম্মানিত যে ব্যক্তি অধিক মুত্তাক্বী।”
আর এ মুত্তাক্বী হওয়ার জন্য বা তাক্বওয়া অর্জন করার জন্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এর রোযা দান করেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের জন্য রমাদ্বান শরীফ-এর রোযা ফরয করা হলো যেরূপ পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল। আর এই রমাদ্বান শরীফ-এর রোযার মাধ্যম দিয়ে তোমরা অবশ্যই মুত্তাক্বী হবে বা তাক্বওয়া অর্জন করতে পারবে।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, রমাদ্বান শরীফ-এর মূল শিক্ষা হচ্ছে তাক্বওয়া। অর্থাৎ নেক কাজে মশগুল থাকা ও শরীয়ত বিরোধী তথা হারাম নাজায়িয কাজ থেকে বিরত থাকা। তাই প্রত্যেকের দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে, রমাদ্বান শরীফ-এর ন্যায় রমাদ্বান শরীফ-এর পরবর্তী মাসগুলিতেও মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ নির্দেশগুলো মেনে চলা।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, বান্দা-বান্দীরা তো জানে না যে, তারা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট মকবুল হয়েছে কিনা? যদি না হয় তবে তো তাদের মকবুল হওয়ার জন্য এখনো বেশি বেশি তওবা ইস্তিগফার করা উচিত। কেননা, হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে, হযরত কা’ব ইবনে উজরাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, (একদিন) রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, (হে ছাহাবায়ে কিরাম) আপনারা মিম্বরের নিকটবর্তী হোন। আমরা সকলেই মিম্বরের নিকটবর্তী হলাম। অতঃপর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মিম্বর শরীফ-এর প্রথম সিঁড়ি মুবারক-এ পা মুবারক রাখলেন তখন তিনি বললেন, ‘আমীন’। যখন দ্বিতীয় সিঁড়ি মুবারক-এ পা মুবারক রাখলেন তখন তিনি বললেন, ‘আমীন’। যখন তৃতীয় সিঁড়ি মুবারক-এ পা মুবারক রাখলেন তখন তিনি বললেন, ‘আমীন।’ অতঃপর যখন মুবারক নছীহত শেষে মিম্বর শরীফ থেকে অবতরণ করলেন তখন আমরা জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আজকে আমরা আপনার যবান মুবারক থেকে এমন কিছু কথা শুনলাম যা এর পূর্বে কখনো শুনিনি।
তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, (আমি যখন প্রথম সিঁড়ি মুবারক-এ পা মুবারক রাখলাম) তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি এসে আমাকে বলেন, ‘ওই ব্যক্তি হালাক, জাহান্নামী যে ব্যক্তি রমাদ্বান শরীফ-এর মাস পাওয়ার পরও নিজের গুনাহখতা ক্ষমা করাতে পারেনি। আমি বললাম ‘আমীন’।
(অতঃপর যখন আমি দ্বিতীয় সিঁড়ি মুবারক-এ পা মুবারক রাখলাম) হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে বলেন, যার সম্মুখে আপনার নাম মুবারক উচ্চারণ করা হয় অথচ সে আপনার প্রতি ছলাত-ছলাম পাঠ করে না সে ধ্বংস, জাহান্নামী। আমি বলি ‘আমীন’। অর্থাৎ সে নিশ্চিত ধ্বংসপ্রাপ্ত ও জাহান্নামী।
(অতঃপর যখন তৃতীয় সিঁড়ি মুবারক-এ পা মুবারক রাখলাম, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমাকে বলেন, ‘ওই ব্যক্তি হালাক, জাহান্নামী যে ব্যক্তি তার মাতা-পিতা দুইজনকে অথবা একজনকে বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা অবস্থায় পাওয়ার পরও খিদমত দ্বারা তাদেরকে সন্তুষ্ট করে জান্নাত লাভ করতে পারলো না। আমি বলি ‘আমীন’।
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, এ হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রমাদ্বান শরীফ পাওয়ার পরও যে ব্যক্তি রমাদ্বান শরীফ-এর হক্ব আদায় করে নিজের গুনাহখতা ক্ষমা করাতে পারেনি সে হালাক। যদি সে এর থেকে খালিছ তওবা ইস্তিগফার না করে। আর একারণেই আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি ঈদের দিনেও মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে কান্নাকাটি করেছেন। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে, ঈদুল ফিতরের দিনে হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হযরত উমর ফারূক আলাইহিস সালাম উনার নিকট গেলেন। গিয়ে দেখলেন, ঘরের দরজা বন্ধ করে তিনি কাঁদছেন। হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আরজ করলেন, হে আমীরুল মুমিনীন আলাইহিস সালাম! আপনি কাঁদছেন অথচ লোকেরা ঈদের আনন্দে মুখর। হযরত উমর ফারূক আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, “আনন্দে মুখর ব্যক্তিরা যদি বুঝতো তারা কি নিয়ে আনন্দ মুখর বা খুশী প্রকাশ করতেছে। অতঃপর পুনরায় তিনি কাঁদতে কাঁদতে বললেন, তাদের আমল যদি কবুল হয়ে থাকে তবে তারা আনন্দ করুক। আর যদি কবুল না হয়ে থাকে তথা বর্জিত হয়ে থাকে তবে তারা কাঁদুক। কিন্তু আমি জানি না, আমার আমল কবুলের পর্যায়ভুক্ত অথবা না।”
মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, মূলকথা হলো- পবিত্র রমাদ্বান শরীফ-এ অর্জিত তাক্বওয়া রমাদ্বান শরীফ-এর পরবর্তী মাসগুলিতেও বজায় রাখতে হবে। অর্থাৎ রমাদ্বান শরীফ-এর পরবর্তী মাসগুলিতেও সর্বপ্রকার অশ্লীল ও শরীয়ত বিরোধী তথা হারাম কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে এবং বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করতে হবে। তবেই হাক্বীক্বী কামিয়াবি অর্জন করা ও নাযাত লাভ করা সম্ভব হবে। আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে দায়িমীভাবে তাক্বওয়ার উপর ইস্তিকামত থাকার তাওফীক দান করুন। আমীন!