somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাঘের মাসি বিড়াল ;)

০৮ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাঘ বড় হলেও বিড়াল বাঘের মাসি। বাঘ থাকে বনে আর বিড়াল থাকে মানুষের বাসাবাড়িতে। তেমনি এক গেরস্তোর বাড়ী একটা পোষা বিড়াল ছিলো। মাছ দুধ খেয়ে বেশ নাদুস নুদুস হয়ে উঠেছিল। খায়-দায় ঘুরে-ফেরে মনীবের পায়ের কাছে মেঁউ মেঁউ করে। একদিন হলো কি বিড়ালটা বাইরে ঘুরতে বার হলো। ঘুরতে ঘুরতে একটা ফুটফুটে খরগোশের সাথে পরিচয় হলো। :) খরগোশটা কান দুটো খাড়া করে ছুটে এলো বিড়ালের কাছে আর বলল্, “কি হে বিড়াল, তুমি দেখছি পরের বাড়ীতে খেয়ে দেয়ে বেশ নাদুস-নুদুস হয়েছো।”

বিড়াল ধমক দিয়ে বলল্, “দেখ পুচকী খরগোশ ছোট মুখে বড় কথা বলিস না, আমি হলাম বাঘের মাসি।” B-) বাঘের মাসি শুনে ছোট্ট খরগোশ চোখ দুটো পুট পুট করে তাকিয়ে নেজটা নাড়িয়ে জোড় পায়ে আদাব জানিয়ে বলল্, “মাসি তুমি বাঘের কেন, তুমিতো তবে আমারও মাসি। :D আমিও তো এ বনেই থাকি। তুমি একদিন চলো আমাদের জঙ্গলে। কত বড় বড় হাতি আছে, আছে আরও কত জন্তু। আমার সাথে দেখে আসবে নিজ চোখে।” :)

বিড়াল রাজী হয়ে গেলো। একদিন সকালে খরগোশ এসে ডাকা-ডাকি করতে লাগলো, ও মাসি ও মাসি। মাসি বের হয়ে এলো খরগোশের সাথে। যাচ্ছে-যাচ্ছে অনেক-অনেক দূর। সেই বনে যেখানে থাকে অনেক রকমের জীব-জন্তু। বিড়াল পৌঁছে গেলো বনের ধারে। বিড়ালের খুব কষ্ট হল। কেননা সেতো কোন দিন এতো হাঁটেনা। মনিবের খায়, নরম বিছানায় ঘুমায়, সত্যিই কষ্ট। কিন্ত খরগোশের কোন কষ্ট নেই। সে ঐ বনের মধ্যে ছুটাছুটি করে। দুপুর গড়িয়ে গেলো খিদেতে পেট চোঁ চোঁ করছে। “কি ব্যাপার? কিছু খাবার পাবোনা”, সে খরগোশকে বলল্। X(( খরগোশ বলল্, “আমি ঘাস-পাতা যা পেলাম খেয়ে নিলাম। তোমাকে কি দেবো মাসি? :P চল দেখি নদীর ওপারে গ্রাম আছে, সেখানে গেরোস্ত বাড়ী গিয়ে কিছু পাওয়া যায় কিনা?” বিড়াল বলল, তার আগে এই জঙ্গলে কারা থাকে তাদের সাথে আমার একটু পরিচয় করিয়ে দাও।” :| খরগোশ দৌড়ে গিয়ে বলল, “হাতিকে ধরার জন্য লোকজন আসছে লাঠি সোটা নিয়ে। শীঘ্রই পালাও।” বিড়াল বসেছিল ওদের দেখার জন্যে, আর অমনি একটা হাতির পায়ের তলায় পড়ল বিড়ালটা আর পটাস করে নাড়ি-ভুড়ি বের হয়ে গেলো। :(( খরগোশ এসে দেখল বিড়ালের একি অবস্থা। বলে, “মাসি একি হল।” ;) মাসি একগাল হেসে বলল, “আরে ও কিছু না। তোমার হাতি দেখে হাসতে হাসতে পেটটা ফেটে গেল।” :D

মশা জঙ্গলে এসে ঘুরে ফিরে খেয়ে দেয়ে বড় হয়েছে। মশার শুড় আছে। আর হাতির ও শুড় আছে। আচ্ছা মশাই, তুমিতো আমার বুনপোর সাথে দেখা করালে না। X(( খরগোশ মাথায় হাত রেখে বলল, “ওরে বাবা বাঘ।:(( ওনার সামনে আমি গেলেই তো আমাকে টুস করে খেয়ে ফেলবে, তার চেয়ে চল আর দেরী না করে পরের গ্রামে গিয়ে দেখি কিছু পাওয়া যায় কিনা?”:-/

এরপর নদীর ঘাটে গেল দুজনে। নদী পার হতে হবে। খরগোশ তো সাঁতারে বেজায় পঁটু। B-) কিন্তু বেচারা মাসির উপায় হবে কি? বলল মাসি চিন্তা নেই যা ক্ষিদে পেয়েছে চল সাঁতার দিয়ে চলে যাই। যেই বলা, সেই কাজ। খরগোশ লাফ দিয়ে পানিতে পড়ল এবং ঠিক ঠিক করে ওপারে গিয়ে উঠল। বিড়াল মাসির পানিতে নামার অভ্যাস নেই। সে বেচারা ভিজে শরীরটা ভারী হয়ে গেছে। কিছুতেই সাঁতরাতে পারছে না। তারপর পেটের নাড়ীটা নিয়ে মাছে টানাটানি করছে। একবার ডোবে, একবার ভাসে,- এইভাবে অতি কষ্টে তীরে গিয়ে উঠলো।:(( খরগোশের আবার রৌদ্রের তাপে গায়ের পানি ঝরে গেছে। মাসিকে দেখে কাছে গিয়ে বলল, “কি হল মাসি, অমন উঠানামা করছিলে কেন?” মাসি বলল, “আরে নদীতে পানি কতটুকু তাই মেপে দেখছিলাম।” B-) এরপর গ্রামের ভিতরে তো যেতে পারলো না তারা যে সব পাগলা কুকুর গুলো তাড়া দেয়রে বাবা। X( তাই খরগোশ বলে, “মাসি আমি আসি, তুমিও আসো, বেশতো দেখা হল সব।” ;) বিড়াল অনেক কষ্টে মনিবের বাড়ীতে পৌঁছলো। বাড়ীর ভিতর মেউঁ মেউঁ করে ঢুকতেই সবাই দেখে আগের সেই মিনি বিড়ালের চেহারা নেই- মরা, বিশ্রী, গন্ধ বলে সবাই তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল। :((বিড়াল অতএব মাসি বেচারা না খেয়ে, না দেয়ে পথে পথে পড়ে মরে থাকলো।

তাই আমার দাদী বলত যে যেমন সে তেমন থাকাই ভালো। :)

আমার মনে হয় অনেক সুন্দর লেখার জন্য অনেক দক্ষতার দরকার যা দিয়ে সৃষ্টি হবে সুন্দর সুন্দর নাটক, গল্প আর উপন্যাস। আমার অবস্থা ওই বসত বাড়ীর বিড়ালের মত। যেখানে তোমরা বসবাস করছ বাঘ্র হয়ে যেখানে তোমাদের প্রতিটি কথায় রয়েছে জীবন, সংসারের প্রত্যশিত আশা আকাঙ্খা, সজীবতা ও হাসির ঝর্নায় উচ্ছল হয় মনপ্রাণ :D , রিক্ততার বেদনায় চোখ থেকে বেয়ে পড়বে দুফোটা চোখের জল ঝরা ফুলের পাপড়ির মত :((, তবেই না হয় লেখা। :D :D

যাই হয় তোমাদের এতো সুন্দর সুন্দর বাঘ্র আকৃতির লেখার অরণ্য আমি অতি ক্ষুদ্র সেই বসত বাড়ীর বিড়ালের মত! তারপরও কিন্তু আমি মাসি… :P :P :P

~~~ সবাইকে শুভেচ্ছা ~~~
:D সবকিছুর জন্য স্বপ্নজয় ভাইয়া আর কিছুনা আপুকে ধন্যবাদ! :D


সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:১৫
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×