আমি বলা মাত্রই তুমি ছাড়বে,
উচ্চস্বরে বললাম আমি ।
চারিদিকে এলোমেলো বাতাসে মেঘেদের উড়াউড়ি,
সাথে তোমার চুলের বয়ে চলা;
চমৎকার এই বিকেলটা কেমন জানি হাহাকার মেশানো !!
নাটাইয়ের হাতলটা আমার কাছে,
ঘুড়ি হাতে অনেক দূরে দাঁড়িয়ে তুমি
আনমনে ছটফট করছো, দূর থেকেই আমি সেটা বুঝতে পারছি
একটুখানি ঝড়ো বাতাসের অপেক্ষা !!
খানিক বাদেই ঘুড়িটা আকাশ মাঝে উড়ে বেড়াতে লাগলো,
মেঘ ছুঁই ছুঁই অবস্থা
দেখে মনে হচ্ছে, এক্ষুনি মেঘের পরশ ছুঁয়ে যাবে ঘুড়িটা!
পাশাপাশি দাঁড়িয়ে মেঘ আর ঘুড়ির খেলা দেখছি দুজন ।
হাতের মাঝে ধারালো এক ছুরি
যেই ঘুড়িটা মেঘ ছুঁবে,
এক টানে কেটে ফেলবো নাটাইয়ের টানটানে সুতোটা;
মেঘ, ঘুড়ি আর বাতাসের পাগলামো দেখার বিচিত্র ইচ্ছে দুজনার।
ছুরি ছেড়ে তোমায় জড়িয়ে নিলাম আমার মাঝে
ফিসফিস করে বললাম, যতক্ষণ না ঘুড়িটা মাটি ছোঁবে
ততোক্ষণ তুমি থাকবে আমার মাঝে ।
আমার কথা শুনেই হয়তো নামতে থাকা ঘুড়িটা
হঠাৎ ঝড়ো বাতাসে পুনরায় মেঘ ছুঁতে উঠলো
এই দেখে তুমি, আরো ভীষণভাবে জড়াতে লাগলে আমার মাঝে ।।
চিত্রপট পাল্টে গেলো মুহূর্তে!
বৃষ্টির ঝুমঝুম শব্দেই হয়তো ঘুম ভাঙ্গলো আমার ।
পিপাসার্ত চোখে খুঁজতে লাগলাম তোমাকে,
আমার শূণ্য বিছানার মাঝে
অনেকদিন পর আবারও পুরানো সেই স্বপ্নটা !
বারান্দার বাতিটা নিভু নিভু জ্বলছে,
সেইদিকে তাকিয়ে আনমনে হাত বাড়িয়ে
ঘরের দেয়ালটা স্পর্শ করলাম ।
পুরানো রোগগুলো বোধহয় আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে,
দেয়ালটা ছুঁয়েই বসে রইলাম আমি ।
অনেকগুলো বাড়ি পরেই ছিলো তোমাদের বিশাল বাড়িটা,
দোতলায় উঠার সৌভাগ্য হয়নি কোনোদিন আমার ।
তবু যেদিন জানলাম, তোমার বিছানাটাও দেয়ালের সাথে লাগানো,
সেদিন থেকেই আমার দেয়াল ছোঁয়ার রোগ !!
আনমনে কিংবা ঘুমের মাঝে তুমি দেয়াল ছোঁবে,
তোমার সেই স্পর্শ অনেকগুলো দেয়াল পেরিয়ে
আমার দেয়াল ছুঁয়ে যাবে !
কি অদ্ভূত ছিলো আমার ইচ্ছেরা
দেয়ালের ঠান্ডা পরশটা কতোবার
হাতের মাঝে লাগিয়ে গাল ছুঁয়েছি, তোমার স্পর্শ ভেবে ।
তুমি কি জানো ?
তোমায় ছোঁয়ার জন্য পৃথিবীর অন্য প্রান্তে
কেউ একজন গভীর রাত অবধি
আজও দেয়াল ছুঁয়ে বসে থাকে ।।

( ছবি সোর্স: গুগল )

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


