১৬-১৭ কোটি জনসংখ্যার এই বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবির কমতি নেই। আমার মনে হয় "যথেষ্ট" এর চাইতে কিছু বেশি। আমাদের বুদ্ধিজীবিরা সাধারণত দুই ভাগে বিভক্ত। এক পক্ষ অন্য পক্ষের জন্য পার্শ্ববর্তি কিনবা নিকট - দুরবর্তি দেশের দালাল বলে পরস্পরকে সম্ভোধন! করেন । কিন্তু সম গোত্রের কাছে প্রত্যেকের দেশপ্রেম মাতৃ ভক্তির চাইতে ও বেশি।
বিষয়বস্তু ও অবস্থানঃ
চেতনা সমৃদ্ধ সংস্কৃতি মনা উচ্চ প্রগতিশীল বলে দাবিদার দেশ বিদেশের গন্ডা - ডজন ডিগ্রীধারী কিছু বুদ্ধিজীবির সম্পর্কে কিছু বলার চেষ্টা করছি। উনাদের কেউ কেউ কোন কালে কোন বিশেষ কিছু লিখিয়া দেশ উদ্ধার করেছেন এখন বিদেশে বসে প্রতি সপ্তাহে দেশের কয়েকটা কাগজে ডলারের বিনিময়ে কলাম প্রসব করেন। কেউ দেশে থেকে সময় অসময় দু চারটা বাণী দিয়ে দেশোদ্ধার করেন। মাঝে মাঝে নৃত্যের কৃত্য কিনবা ছন্দের দ্বন্দ বিষয়ক টক - ঝাল শোতে অংশগ্রহন পুর্বক নিজের স্বদেশ প্রেমের বেলুন উড়াতে গিয়ে অন্যের বেলুন ফুটা করেন। যদি ও দেশের মরনপন সমস্যায় এরা কথিত "ঊটপাখির ন্যায় বালিতে মাথা গুজিয়া" থাকেন। এরা চাটনির ঝোল টুকুও চেটে নিতে রাজনীতিবিদ নামের আরেক শ্রেণীর বৃহত্তর পরজীবির পিছনে অবস্থান নেন। প্রত্যক্ষ লাভ বা পরোক্ষ লাভ ছাড়া এনাদের হস্ত প্রসারিত হয় না, দৃষ্টি খুলে না, পা চলে না।
লক্ষন ও চরিত্র
আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবি অনেকটা পরজীবি স্বভাবের। এরা মোটা ফ্রেমের চশমা পড়েন, চুল থাকলে কিঞ্চিত আউলা ঝাউলা করে রাখেন। নাকের নীচে, ঠোটের উপড়ে কাচা - পাকা, মোটা সোটা গোফ যথেষ্ট সমঝদার একটা ভাব এনে দেয়। গোফের নীচের ঠোট দুখানার কিঞ্চিত সম্প্রসারন - সঙ্কোচনে মাঝে মাঝে এমন ভাব আনেন দেখলে মনে হয় "ভাগ্যিস জন্মে ছিলাম, না হলে এমন লোকের দেখাই পেতাম না"। কথায় - বার্তায় উনারা প্রকাশ করেন ( কিনবা অপ্রকাশিত রাখেন) ১৬-১৭ কোটি অভাগা, অশিক্ষিত, অসভ্য, ইতর বাঙ্গালির সাত জনমের ভাগ্য উনারা বিলেত - বিভুয়ের আরাম আয়েশ, নিরাপত্তা, সম্মান সম্ভ্রমের তোয়াক্কা না করে অশিক্ষিত, ক্ষেত, ধর্মান্ধ জাতিকে শিক্ষিত, সভ্য ও স্যেকুলার/ ধার্মিক করার মহান দীক্ষায় দীক্ষিত হয়ে এই ম্লেচ্ছ দেশে নিতান্ত বেঁচে বর্তে শিক্ষা তথা সভ্যতার আলো প্রজ্জ্বলিত করছেন।
আদর্শঃ
উনারা চেতনার আদর্শ সৈনিক। সংস্কৃতির প্রভাবে চেতনাকে সমুন্নত রাখতে পারলে ভবিষ্যতে কি পরিমান সমৃদ্ধি বেড়িয়ে আসবে এবং তাঁর ফল কি হবে তাই তারা গভেষনা পরবর্তি প্রয়োগ করেন। আমাদের মত ম্লেচ্ছ (ঐসব শিক্ষিতের ব্যাবহারে অনুমিত) এদেশের বেশিরভাগ জনগন তেমন চেতনা বান নহে। সংস্কৃতি বুঝার জন্য শরীরের নির্দিষ্ট স্থানে কতটুকু অনাবৃত রাখলে জাগরন বেরিয়ে আসে তা জানে না। তাই উনারা সময় সময় তালিম দেন কি করিলে কি হইবে টাইপের।
তবে উনাদের আচরন অনেকটা এক চোখা টাইপের হয়। মোটা ফ্রেমের চশমা পড়লেও মারাত্নক চশম খোর বিবৃতি দেন।
মুল্যবোধঃ
উনাদের জ্বিহ্বাটা স্ব-গোত্রিয় রাজনৈতিক দলের নেতা নেত্রির পদলেহনে এত ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ঝাল কে ঝাল, টক কে টক আর মিষ্টি কে মিষ্টি বলে স্বাধ নেবার ক্ষমতা হারিয়েছেন অনেক আগে। স্ব গোত্রিয় মতাদর্শীর কৃত তিক্ত স্বাধকেও পরম যত্নে দেবতার প্রসাদের মত অমৃত বলে চালিয়ে দেন। আর এই ক্ষেত মার্কা আম-জনতাকে বুঝান "বেটা খেতে জানিস না তাই স্বাধ পাস না, পরম ভক্তিতে খা (সয়ে যা), উন্নতিতে কাজ দিবে" উনারা উনারা প্রতিপক্ষের ব্যাপারে পান থেকে চুন খসে পড়লে গেল গেল বলে ধুয়ো তুলেন। স্থানীয়, জাতীয় থেকে আন্তরজাতিক মাধ্যমে লম্বা চওড়া কলাম লেখেন। দীর্ঘ, নাতিদীর্ঘ, স্বল্পদৈর্ঘ ছবি, ছায়া ছবি তৈরি করে বিশ্বকে দেখিয়ে বেড়ান তাদের জাতি কত নিচু। সেখান থেকেই উনি কত উচুতেই না উঠেছেন!!!
ঊপসংহারঃ
এসব বুদ্ধিজীবিরা অনাধিকাল থেকে বোকার সামনে বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করলেও এখন কোন কোন বুদ্ধিজীবির কোমরের গিট খুলে যাবার উপক্রমন হয়েছে। তবে কিছু কিছু উঠতি বুদ্ধিজীবি ভবিষ্যতের পাথেয় সংগ্রহে উনাদের পারামর্শ অনুযায়ি চলেন। কোমরের গিট মূলত তারাই ধরে রেখেছেন ।
দ্রষ্টব্যঃ বুদ্ধিজীবিদের (নিজেকে মনে করলে) না পড়লেও চলবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



