গভীর রাত।চারদিক নিস্তব্ধ।মাঝে মাঝেমাঝে দু-একটা গাড়ির শব্দ শোনা যাচ্ছে।রাত গভীর হলেও অমাবষ্যার পর প্রথম পূর্নিমার আলোতে চারদিক উদ্ভাসিত।গুলিস্তানেরর এই সরু গলিতেও চাঁদের আলো উজ্জ্বল মহিমায় ভাস্বর।পাশের আরেকটা গলি থেকে দুই যুবক বের হয়ে এল।দূর থেকে দেখেও বোঝা যায় এরা খুব একটা সুবিধার নয়।মুখ দিয়ে একে অপরের প্রতি খিস্তি ছুড়ে দিচ্ছে আর উন্মাদ হাঁসি হাঁসছে।কিছুক্ষণ আগে এক ছোকরার কাছ থেকে তার মানি বেগ চুড়ি করেছে।বেগে কিছু টাকা আর একটা চিঠি ছিল।হাসির কারন ঐ চিঠি।
চিঠিটা তালিব নামের এক ছোকরার হাতে।ছোট হলেও এই বয়সে অনেক কুকর্ম সে করেছে।তিনটা খুনের মামলা আছে তার নামে। সে চিঠিতে লেখা উক্তিগুলো অভিনয় করে রসিয়ে রসিয়ে পরছে,'বাবা, তুমি চিন্তা কোরো না..........।'
তালিবের পাশের ছেলেটার নাম মাজিদ।ওর এসব পছন্দ হচ্ছেনা,কিন্তু কিছু বলতেও পারছেনা।চিঠিতে বাবার কথা সুনে ওর নিজের ও বাবার কথা মনে পরে যাচ্ছে।বাবা ওকে পড়াশুনা করতে শহরে পাঠিয়েছিল।কিন্তু শহরে এসেই ঝামেলাতে পড়ল ও।ও যে মেসে উঠেছিল তালিব ও সেখানে থাকত।ওর খাটের নিচে একটা বস্তায় কিছু অস্ত্র ছিল।ও কিছুই জানত না।পুলিশ হঠাৎ রেট করল আর ওকে ধরে নিয়ে গেল।অথচ তালিবের কিছুই হল না।তালিব বলল,'যদি আমাদের সাথে যোগ দাও,তাহলে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করতে পারি।' আর কোনো উপায় ছিল না মাজেদের।রাজি হয়ে গেল সে।এরপর নানা অপকর্মে জড়িয়ে গেল সে।পুলিশের খাতায় নাম উঠল,পত্রিকাতে ছবি ছাপা হল।বাবা হয়ত শুনেছিল,একদিন শুনল বাবা আত্মহত্যা করেছে।
চাঁদের আলোতে ওর মনটা কেমন পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে।মনে পড়ে গেল বাবা ওকে অমাবষ্যার পরের প্রথম পূর্ণিমার আলোতে ঘুরিয়ে আনত আর বলত,'এই আলোতে জাদু আছে রে...মন পরিষ্কার হয়ে যায়।
ওরা এক ঝুপড়ি দোকানের বেঞিতে শুয়ে পড়েছিল।তালিবের প্রতি মাজিদের ঘৃণা তীব্র হতে থাকল।তালিব ঘুমিয়ে পড়েছিল।হঠাৎ কি হল মাজিদের;মন বলে উঠল,'মার, মেরে দে তালিবকে;ও তোকে নষ্ট করে দিয়েছে।পাশে পড়ে থাকা লোহার দন্ডটা তুলে নিয়ে মাজিদ ঘুমন্ত তালিবের মাথা লক্ষ্য করে মারতে শুরু করল।
মাজিদ এখন রাস্তায়।চাঁদের আলোয় ওর মনটা কেমন পরিষ্কার হয়ে গেছে,আর একটা ঘোরের মধ্যে আছে সে-আগামীকাল থেকে যে তার নুতন জীবন শুরু হবে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



