
সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে। তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে।
* মতভেদের জন্য আল্লাহ মহাশাস্তির কথা বলেছেন। মহাশাস্তি থেকে আত্মরক্ষা করতে অবশ্যই জানতে হবে কোনটি মত এবং কোনটি মতভেদ?
সূরা: ৪৫ জাছিয়া, ৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
৬। এগুলি আল্লাহর আয়াত, যা আমি তোমার নিকট যথাযথভাবে তিলাওয়াত করছি। সুতরাং আল্লাহর এবং তাঁর আয়াতের পরিবর্তে তারা কোন হাদিসে বিশ্বাস করবে?
সূরাঃ ৩৫ ফাতির, ৪৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪৩। পৃথিবীতে অহংকার প্রকাশ এবং কূট ষড়যন্ত্রের কারণে (অকল্যাণ)।কূট ষড়যন্ত্র এর আহলকে(এর সাথে সংযুক্ত সকল ব্যক্তি) পরিবেষ্ঠন করে। তবে কি এরা অপেক্ষা করছে পূর্ববর্তীদের সুন্নতের? কিন্তু তুমি আল্লাহর সুন্নাতে কখনও কোন পরিবর্তন পাবে না এবং আল্লাহর সুন্নতে কোন ব্যতিক্রমও দেখবে না।
সূরাঃ ২, বাকারা। ১০৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৬। আমরা কোন আয়াত মানসুখ বা রহিত করলে অথবা ভুলে যেতে দিলে তা’হতে উত্তম বা তার সমতুল্য কোন আয়াত আমরা প্রদান করে থাকি।তুমি কি জান না যে আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্ব শক্তিমান।
সূরাঃ ৫৩ নাজম, ৩ নং ও ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৩। আর সে মনগড়া কথা বলে না।
৪। এটাতো ওহি যা তার প্রতি ওহি হিসেবেই পাঠানো হয়।
* আল্লাহ এবং তাঁর আয়াতে সাব্যস্ত বিষয় মত। আল্লাহ এবং তাঁর আয়াতে সাব্যস্ত বিষয়ের পরিবর্তে উপস্থাপিত আয়াত মানসুখ এবং হাদিস বাতিল। আর সকল মনগড়া কথা গুরুতর অপরাধ। আল্লাহ এবং তাঁর আয়াতে সাব্যস্ত বিষয়ের পরিবর্তে উপস্থাপিত আয়াত, হাদিস ও সকল মনগড়া কথা মতভেদ।
সূরা: ৯ তাওবা, ১২২ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২২। আর মু’মিনদের এটাও উচিৎ নয় যে (জিহাদের জন্য) সবাই একত্রে বের হয়ে পড়বে। সুতরাং এমন কেন করা হয় না যে, তাদের প্রত্যেক বড় দল হতে এক একটি ছোট দল (জিহাদে) বের হয় যাতে অবশিষ্ট লোক ফিকাহ (দীনের গভীর জ্ঞান) অর্জন করতে থাকে। আর যাতে তারা নিজ কওমকে ভয় প্রদর্শন করে, যাতে তারা সাবধান হয়।
* আল্লাহ এবং তাঁর আয়াতে সাব্যস্ত বিষয় হলো ফিকাহ। এর পরিবর্তে আয়াত মানসুখ, হাদিস বাতিল এবং মনগড়া কথা গুরুতর অপরাধ। ফিকাহ দ্বারা কওমকে ভয় প্রদর্শন করতে এবং এর অবাধ্য হওয়া বিষয়ে সাবধান হতে আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে আদেশ করেছেন। সংগত কারণে এর বিরোধীতা সুস্পটভাবে মতভেদ হিসাবে সাব্যস্ত হবে।সুতরাং ফিকাহ হলো মত এবং এর বিরোধীতা মতভেদ। ফিকাহের উৎস কি?
সূরাঃ ৫৫ রাহমান, ১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। আর রাহমান (পরম মেহেরবান)।
২। তিনিই শিক্ষা দিয়েছেন কোরআন।
সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ২ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ।
২। তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন রাসুল পাঠিয়েছেন তাদের মধ্য হতে, যে তাদের নিকট আবৃত করে তাঁর আয়াত সমূহ; তাদেরকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমাত; এর আগে তো এরা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে।
৩। আর তাদের অন্যান্যের জন্যও যারা এখনো তাদের সহিত মিলিত হয়নি। আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।
৪। ওটা আল্লাহরই অনুগ্রহ, যাকে ইচ্ছা তিনি ওটা দান করেন। আর আল্লাহ তো মহা অনুগ্রহশীল।
# সূরাঃ ৬২ জুমুআ, ৩ নং আয়াতের তাফসির- তাফসিরে ইবনে কাছির
৩। এ আয়াতের তাফসিরে আবু হুরায়রা হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূলুল্লাহর পার্শ্বে বসে ছিলাম, এমন সময় তাঁর উপর সূরা জুমুয়া অবতীর্ণ হয়। জনগণ জিজ্ঞাস করেন হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! ‘ওয়া আখারিনা মিনহুম লাম্মা ইয়ালহাকু বিহিম’ দ্বারা কাদেরকে বুঝানো হয়েছে? কিন্তু তিনি কোন উত্তর দিলেন না। তিন বার এ প্রশ্ন করা হয়। আমাদের মধ্যে সালমান ফারসীও (রা.) ছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর হাতখানা সালমান ফারসীর (রা.) উপর রেখে বললেন, ঈমান যদি সারিয়্যা নক্ষত্রের নিকট থাকত তাহলেও এই লোকগুলোর মধ্যে এক কিংবা একাধিক ব্যক্তি এটা পেয়ে যেত।(ফাতহুলবারী ৮/৫১০, মুসলিম ৪/১৯৭২, তিরমিযী ৯/২০৯, ১০/৪৩৩, নাসাঈ ৫/৭৫, ৬/৪৯০, তাবারী ২৩/৩৭৫)।
* ফিকাহের উৎস হলেন রহমানের কোরআনের ছাত্র। যাঁরা তাঁর দিদার প্রাপ্ত। একজন আরবী রাসূল (সা.) এবং অন্যজন পারসিক। পারসিকদের মধ্যে একশত বার আল্লাহর দিদার প্রাপ্ত ইমাম আবু হানিফা (র.) ফিকাহ প্রাপ্ত। তিনি ফিকহে আকবর (সবচেয়ে বড় ফিকাহ) সংকলন করেছেন।
সূরাঃ ৪ নিসা, ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাস কর তবে তোমরা (ইতায়াত) আনুগত্য কর আল্লাহর, আর (ইতায়াত) আনুগত্য কর রাসুলের, আর যারা তোমাদের মধ্যে আমির।কোন বিষয়ে তোমাদের মধ্যে বিরোধ দেখাদিলে উহা উপস্থাপিত কর আল্লাহ ও রাসুলের নিকট। ওটা উত্তম এবং পরিনামে ভাল।
সহিহ মুসলিম, ৪৫৭৬ নং হাদিসের (কিতাবুল ইমারাহ) অনুবাদ-
৪৫৭৬। হযরত জাবির ইবনে সামুরা (রা.)কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি, বারজন খলিফা অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত ইসলাম পরাক্রান্ত অবস্থায় চলতে থাকবে। তারপর তিনি যে কি বললেন, তা’ আমি বুঝতে পারিনি। তখন আমি আমার পিতার নিকট জিজ্ঞাস করলাম তিনি কি বলেছেন? তিনি বললেন নবি করিম (সা.) বলেছেন, তাঁদের সকলেই হবে কোরাইশ বংশোদ্ভুত।
* একশত বার আল্লাহর দিদারপ্রাপ্ত পারসিক ইমাম আবু হানিফার (র.) পূর্বে ফিকহে আকবর (সবচেয়ে বড় ফিকাহ) আর কেউ সংকলন করেননি। এটি সবচেয়ে পরাক্রান্ত আব্বাসীয় কুরাইশ খলিফা হারুনুর রশিদ পরিশোধান করে অনুমোদন করেন। আর কোন ফিকাহ কোন কুরাইশ পরাক্রান্ত খলিফা অনুমোদন করেননি।সুতরাং এখন পর্যন্ত গৃহিত ফিকাহ কুরাইশ পরাক্রান্ত খলিফা অনুমোদীত হানাফী ফিকাহ। এরসাথে মতভেদ মহাশাস্তির কারণ। শিয়া কোন ইমাম পরাক্রান্ত নন। কারণ হযরত আলী (রা.) খেলাফতের একাংশ হযরত মুয়াবিয়াকে (রা.) ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। হযরত ইমাম হাসান (রা.) খেলাফত ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। হযরত ইমাম হোসেন (রা.) খেলাফত উদ্ধার করতে পারেননি। অন্য ইমামগণ খেলাফত উদ্ধার না করতে পারাদের তালিকায় আছেন। সুতরাং তাদের কোন ইমামের ফিকাহ গৃহিত ফিকাহ সাব্যস্ত হওয়ার কোন সুযোগ নাই।
সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০১। মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক। মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ মোনাফেকী রোগে আক্রান্ত। তুমি তাদের সম্পর্কে জান না। আমরা তাদের সম্পর্কে জানি।আমারা সিগ্র তাদেরকে দু’বার শাস্তি দেব। এরপর তারা মহা শাস্তির দিকে যাত্রা করবে।
সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৭। আর যারা মসজিদ নির্মাণ করেছে ক্ষতি সাধন, কুফুরী ও মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এবং ইতিপূর্বে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে যে সংগ্রাম করেছে তার গোপন ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহারের জন্য, তারা শপথ করেই বলবে তারা ভাল কিছু করার জন্যই ওটা করেছে; আর আল্লাহ সাক্ষি দিচ্ছেন নিশ্চয়ই তারা মিথ্যাবাদী।
সূরাঃ ৬ আনআম, ১৫৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১৫৩। আর এপথই আমার সিরাতাম মুসতাকিম (সরল পথ)। সুতরাং তোমরা এর অনুসরন করবে, এবং বিভিন্ন পথ অনুসরন করবে না, করলে তা’ তোমাদেরকে তাঁর পথ হতে বিচ্ছিন্ন করবে। এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিলেন যেন তোমরা সাবধান হও।
সূরাঃ ৪ নিসা, আয়াত নং ১১৫ এর অনুবাদ-
১১৫। কারো নিকট সৎপথ প্রকাশ হওয়ার পর সে যদি রাসুলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনদের পথ ব্যতিত অন্যপথ অনুসরন করে, তবে সে যে দিকে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে ফিরিয়ে দেব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব, আর উহা কত মন্দ আবাস।
* সাহাবায়ে কেরাম (রা.) রাসূলের (সা.) ফিহাহের অনুসারী ছিলেন। ক্ষতি সাধন, কুফুরী ও মুমিনদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বানানো মোনাফেকের হাদিস রাসূলের (সা.) ফিহাহের বিনাশ সাধন করেছে।সুতরাং এখন হানাফী ফিকাহ ছাড়া মানার মত আর কোন ফিকাহ নাই। এ ফিকাহের পরিবর্তে কোরআন মানসুখ, হাদিস বাতিল ও মনগড়া কথা গুরুতর অপরাধ সাব্যস্ত হবে। এখন মত হলো হানাফী ফিকাহ এবং মতভেদ হলো এর বিরোধীতা করা। যারা এ অকাজ করে তারা আল্লাহর সিরাতাম মুসতাকিম ছেড়ে জাহান্নামে চলে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৬:৫৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



