মামা কি ব্যাপার খাচ্ছেন না কেন?
কি হলো?
দেখ, কৃষ্ণচূড়া গাছটি থেকে কি রকম আগুন ঝরছে,
আমার লাল ভাল লাগেনা, কিন্তু গাছটি কে অন্য রকম লাগছে, মনে হচ্ছে আমি যদি কৃষ্ণ চূড়া গাছ হতাম।
এটা হচ্ছে গাছটির আসল রুপ। সারা বছর গাছটি ঘুমিয়ে থাকে, এই সময়টিতে এসে তার রুপ দিয়ে পৃথিবীকে ঝলসে দেয়।
আপনি কি তার রুপে মুগ্ধ হয়ে অন্য মনস্ক?
না, আমি চিন্তিত ভারতের নির্বাচন নিয়ে। গুজরাট খ্যাত মিস্টার মোদি মনে হয় ক্ষমতায় চলে যাবে।
তাতে আমাদের সমস্যা কি?
আরে তুই তো দেখছি কিছুই জানিস না। মোদি ক্ষমতায় আসছে...... এই খবরে কট্টর হিন্দুরা আসামে এই পর্যন্ত ৩২ জন মানুষ হত্যা করেছে। ওখানে কারফিউ চলছে তিনি হুংকার দিচ্ছেন অভিবাসী বাঙালীদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে মহান ভারত থেকে বের করে দিবেন। দুই দেশের জাতীয় সঙ্গিতের রচিয়তা একজন। পশ্চিম বাংলার লেখকরা এই দেশে খুবই জনপ্রিয়। ক্ষেত্র বিশেষ ওপারের তুলনায় এপারে তাদের পাঠক বেশি। ফেলুদা পড়েনি এদেশের মানুষ খুব কম আছে। মহান ভারতের সাথে সম্পর্ক বাংলা দেশের জন্ম লগ্ন থেকে। এত কিছুর পরও হুংকার দিচ্ছেন কেন?
আমি বেফাস বলে ফেললাম, মুসলিম নিধন নাকি সামরাজ্যবাদ?
বুঝতে পারছিনা দুটার একটা তো হবেই। আবার নাও হতে পারে অধিক প্রাপ্তি কখনো কখনো মানুষকে বদলে দেয়।
মামা, অঢেল ক্ষমতাও মানুষকে হিটলার বানিয়ে দেয়।
ভাগিনা সমস্যা আরো আছে মিস্টার মোদির দলের আরেক নেতা সুব্রহ্মানিয়াম বলেছেন। আমাদের রক্ত কেনা মাতৃভূমির খুলনা থেকে সিলেট পর্যন্ত একটা সরল রেখা টেনে এক তৃতীয়াংশ জমি সরাসরি ভারতের দখলে নিবেন। তারা বাংলাদেশী কথিত অনুপ্রবেশকারীদের সেখানে পূর্ণবাসিত করবেন।
আমি বললাম, কি চমৎকার কথা, কইলেই হইলো, বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ কি আঙ্গুল চুষবে? আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা এখনো ফিকে হয়ে যায়নি মামা।
ভাগিনা, মিস্টার মোদি যদি মসনদে চলে যায় কিছু একটা ঘটতে পারে। এই কৃষ্ণচূড়া গাছটি তার সময়ে এসে তার আসল রূপ ধারন করে। এ দেশেরও যদি দেশ রক্ষার সময় এসে যায় বাঙালীরা আসল রুপ ধরতে দেরি করবে না।
আমি আর নান্টু মামা ধর্মসাগর পারে বসে আছি। এতো বাতাসের ভিতরও আমি ঘামতে লাগলাম। আমি মামার দিকে তাকিয়ে দেখি মামার দু চোখ কৃষ্ণচূড়ার মত লাল হয়ে যাচ্ছে। হাতে নেয়া বাদামের বিচিটাকে পিষে ফেলছেন।