আইয়ুব বাচ্চুর প্রতিভা নিয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। তাঁর অনেক গানই আমার খুব প্রিয়। তবে তাঁর দম্ভ মাঝে মাঝেই তাঁর গায়ক হিসেবে সুনামকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। আইসিসি সেলিব্রেশন কন্সার্টে মাইলসের গান গাওয়া নিয়ে তিনি যে ‘পলিটিক্স’ করেছেন সেটাই এর সাম্প্রতিক উদাহরণ।
আইসিসি সেলিব্রেশন কন্সার্টে দায়সারা ভাবে তিনি বেসুরে কিছু গান পরিবেশন করলেন। মনে হচ্ছিলো তিনি নিজের জনপ্রিয় গান গুলোকে নিজেই হত্যা করছেন। তবে পরিবেশনা শেষে তাঁর “হঠাৎ’ বাংলা প্রীতিটা চোখে লাগল। গান শেষে নেমে যাওয়ার আগে তাঁকে বলতে শুনলাম – “থ্যাঙ্ক গড্” আপনারা কষ্ট করে বাংলা গান শুনতে এসেছেন। “লাভ্ ইউ, বাই "- তাঁর বাংলা ভাষার চর্চা আর প্রীতিটা যে ভান্ডামী ছিল তা বেশ ভালই বুঝা গেল।
বাচ্চুর ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে বিভিন্ন হোটেল আর অনুষ্ঠানে ইংরেজী গান পরিবেশন করে। তাঁর ব্যান্ডটির নাম ‘এল আর বি’ – বাংলা কোন নাম নয়। আর সেটিও কপি করা নাম। ১৯৭৫ সালে গঠিত ‘Little River Band বা LRB’ নামের একটি অস্ট্রেলিয়ান ইংলিশ রক্ ব্যান্ডের অনুকরণে নিজের ব্যান্ডের নামকরণ। তাঁর মুখে বাংলা ভাষা প্রীতি আর স্বকীয়তার বুলি বেনান লাগে।
আইয়ুব বাচ্চুর ফেসবুক পেজে নিজের লেখা ‘বামবা’ থেকে সদস্যপদ প্রত্যাহারের চিঠিটি পড়লাম। সেটিও ইংরেজীতে লেখা, যা কিনা একজন বাংলা ভাষার দরদীর চিঠি হিসেবে বাংলায় হতে পারত। লজ্জাজনক বিষয় হচ্ছে চিঠিতে বেশ কিছু হাস্যকর গ্রামার ভুল আর ত্রুটিপুর্ন শব্দচয়ন প্রকট ভাবে চোখে পড়ে, যে সব ভুল আজকাল ক্লাশ সেভেন এর বাচ্চারাও করে না। এমন একটি চিঠি পাবলিক করার আগে একজন জনপ্রিয় গায়কের উচিত ছিল কাউকে দিয়ে প্রুফ রিডিং করিয়ে নেয়া। সদস্য সচিবকে লেখা চিঠির/আবেদন পত্রের শেষে তিনি (বোধ করি স্রোতাদে উদ্যেশ্যে) লিখেছেন ‘see you all somewhere around the world’ যা চিঠির বক্ত্যব্যের সাথে মোটেও সামঞ্জস্যপুর্ন নয়। যা স্পষ্টতই প্রমান করে এটা একটা পাবলিশিটি স্টান্ট্ ছাড়া আর কিছুই নয়।
দেশের একজন শীর্ষ আর জনপ্রিয় গায়কের কাছ থেকে আমারা এসব সস্তা ভুল আর সেন্টিমেন্ট আশা করি না। আরও আশা করি তিনি তাঁর আচার-আচরনে দাম্ভিক না হয়ে আরও বিনয়ী আর ‘পিপলস ম্যান’ হবেন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৩৩