somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্কুল জীবন ২.২

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লিখব লিখি করেও অনেকদিন ধরে আমার স্কুল জীবন নিয়ে লেখা হয় না। আজ অনেকদিন পরে এই নিয়ে লিখলাম। আজ আমি লিখব আমার লাইফের সেরা স্কুল ধানমন্ডি গভঃ বয়েজ হাই স্কুল এ পড়াকালীন সময়ের কথা……..(ক্লাস-২-৫)। যেহেতু অনেকদিন আগের কথা তাই পুরোটা মনে নাই। কিন্তু কিছু কিছু কাজ আছে যেইগুলার জন্য আমি বজ্জাতের হাঁড়ি উপাধিও পাইসি।
যাই হোক কাহিনী শুরু করি…….. ক্লাস টু তে থাকতে প্রথম আমার বন্ধু হইল ৩ জন। বলাই বাহুল্য আমি ছিলাম তাদের মধ্যে সবচেয়ে বোকা । আর আমার একটা বড় সমস্যা ছিল আমি খুবই ভুলমনা। দেখা গেল ম্যাডাম ক্লাসে বেতনের কথা বইলা দিসে কিন্তু আমি বেতন নিতে ভুইলা গেসি। এই কইরা ম্যাডামরে প্রায় একমাস ঘুরাইসিলাম বইলা মনে পড়ে। তো যেহেতু আগের স্কুলে আমি ছিলাম ফাস্ট বয় তাই আমি মনে করসিলাম এইখানেও বুঝি তাই হইতে পারব কিন্তু পরীক্ষা একখান দিয়াই টের পাইলাম আসল কাহিনী। যাই হোক খারাপ করি নাই সেই পরীক্ষায়। 5th হইসিলাম। কিন্তু এর পরের টার্মগুলাতে যা হুইল তা অতীব বিস্ময়কর। প্রথম টার্ম এ 5th হইলও পরের টার্ম এ ৭ম আর তার পরের টার্মে ১০ম। এই ঘটনা ঘটল আরও টানা ২ বছর। এর মধ্যে আরেকটা কথা না বললেই নয় ততদিনে আমি আর বোকা নাই হালকা পাতলা চালাক হইসি। কিন্তু চালাকি করতে গিয়া বেতের বাড়িও খাইসি।
ঘটনাটা হইল এইরকম…..একদিন আমাদের ক্লাসে (ক্লাস-৩) টিচার আসে নাই। তো আনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর দেখি কেউ আসে না আর পাশের ক্লাস থেইকাও হাউ কাউ এর আওয়াজ পাওয়া যায়। তো ক্যপ্টেন ২ জন গেল টিফিন আনতে। কিন্তু যথা সময় মত না আসায় আমি ক্লাসের বাইরে গেসিলাম দেখতে। অনেকেই মানা করল যাইতে। কিন্তু আমারে দমায় কে?? হঠাৎ আমার পশ্চাদ্দেশে আগুনের হল্কা লাগল বইলা মনে হইল। পিসনে চায়া দেখি পাশের ক্লাসের স্যার বিশাল মোটা জালি বেত নিয়া দাড়ায়া আছেন। আমি কনও মতে ক্লাসে দৌড় দিয়া আইসা বেঞ্চে গড়াগড়ি মারলাম। অনেক কষ্টে সেই ব্যাথা দূর হইসিল।(আমার প্রথম বেত খাওয়া )।
অই সময়ে সবচেয়ে দুঃখজনক ছিল অঙ্কের নিয়ম। এই স্যার এক নিয়ম দিলেন তো অই ম্যাডাম আরেক নিয়ম। একজনের নিয়মে অংক করলে আরেকজন কাইটা দেয়, আর বাসায় ঝাড়ি খাইতে খাইতে আমাদের অবস্থা খারাপ।
যাই হোক এত সব ভালোর মধ্যে খারাপ ও ছিল বেশ কিছু দিক। যেমন অনেক স্যারেরা পড়া না পারলে মাইর তো দিতেনই উপরন্তু অনেকে গালাগালিও করতেন। যেমন এক স্যার বলতেন, “শুয়োরের _____” ড্যাশ এ কি বসবে তা আপনারাই বসায়া নিয়েন। তবে এইতুকু বলতে পারি আপনি যা ভাবতেসেন তা না।
তবে ভাল স্যার যে ছিলেন না তা একেবারেই বলব না। আমি গভীরভাবে শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করব আমাদের গণিত শিক্ষক মঞ্জুরুল স্যারকে। উনার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি।
আজকে ক্লাস ফোর এ পড়ার সময়কার একটি ঘটনা বলে শেষ করব। মানুষ যে মাঝে মাঝে কতটা নিচু মানুষিকটার প্রমাণ দেয় তা এই গল্পটা দিয়েই বুঝতে পারবেন।

আমাদের স্কুলে ক্লাস থ্রিতে পড়ার সময় একজন নতুন ধর্ম স্যার এসেছিলেন। তিনি প্রথম প্রথম সবাইকে অনেক গল্প বলে আকৃষ্ট করেছিলেন। পরে যেটা হল সবাই তার কাছে পড়তে গেল। তো আমি বা আমার আম্মা চিন্তা করেছিলাম যে ধর্ম বাইরে পড়ার কি দরকার। বাসায় পরলেই তো হল। কিন্তু আমার এক বন্ধু আর তার মা সব সময় আমাদের প্ররোচিত অই স্যারের কাছে পড়ার জন্য। কিন্তু না পেরে আমার বন্ধুটি যা করলো তা হল সে স্যার এর কাছে গিয়ে আমার এবং আমার আর এক বন্ধু নিতুলের নামে নালিশ দিল যে সবাই যে স্যার এর কাছে পড়তে যায় এই জন্য আমরা নাকি তাকে ব্যবসায়ী বলেছি। এইটা শোনার সাথে সাথে স্যার আমাদের ডাকলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন আমরা এই কথা বলেছি কিনা। আমরা স্বভাবতই স্বীকার করলাম না। তিনি আমাদের অনেক উপদেশ বানী দিয়ে ছেড়ে দিলেন।
এরপর নিতুল এই স্কুল ছেড়ে চলে গিয়েছিল। কিন্তু আমি যাইনি। আর এরপর যতদিন আমি অই স্কুলে ছিলাম ততদিন আমাকে স্যার এর কটূক্তি সহ্য করতে হয়েছে। আমি জানি স্যার কেবল আমাকে ভুল বুঝেই এই কাজ করেছেন। তাই আমি আজও তাকে শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আমার অই বন্ধুটির সাথে আমার ভাল সম্পর্ক ওইদিনই শেষ। আমি আর কোনও দিনই তাকে বিশ্বাস করতে পারিনি।

(চলবে)
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আইনের ফাঁকফোকর-০৩

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

যেকোনো চাকরির নিয়োগের পরীক্ষা চলছে। সেটা পাবলিক সার্ভিস কমিশন, বিভিন্ন সংস্থা, বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক বা উপজেলা পর্যায়ের কোনো কার্যালয়ে হতে পারে। এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হতে পারে। একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

গল্পঃ অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি

লিখেছেন ইসিয়াক, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১২

(১)
মাছ বাজারে ঢোকার মুখে "মায়া" মাছগুলোর উপর আমার  চোখ আটকে গেল।বেশ তাজা মাছ। মনে পড়লো আব্বা "মায়া" মাছ চচ্চড়ি দারুণ পছন্দ করেন। মাসের শেষ যদিও হাতটানাটানি চলছে তবুও একশো কুড়ি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সিকান্দার রাজার চেয়ে একজন পতিতাও ভালো।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৭

সিকান্দার রাজা কোকের বোতল সামনে থেকে সরিয়ে রাতারাতি হিরো বনে গেছেন! কিন্তু তাকে যারা হিরো বানিয়েছেন, তারা কেউ দেখছেন না তিনি কত বড় নেমকহারামি করেছেন। তারা নিজেদেরকে ধার্মিক বলে দাবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×