এবারের রোযার ঈদ ঢাকায় করার প্ল্যান ছিল। কিন্তু মা’র অনুরোধ এবং একইসাথে কাকতালীয়ভাবে ট্রেনের টিকেট পাওয়ায় প্ল্যান পরিবর্তন করতে হলো। আমার এক বন্ধুলোক, তার অনেক কষ্টে পাওয়া ট্রেনের টিকেটটি আমাকে দিতে বাধ্য হলো কারণ, ট্রেন ছাড়ার সময় ছিল ১৭ আগস্ট, ভোর ৬ টা, এদিকে তাকে ১৭ তারিখ-শুক্রবার অফিস করতেই হবে; হাজিরা দিয়ে তারপর তাকে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিতে হবে।
বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পারলাম, ঢাকা-রাজশাহীর রেললাইনে কোন এক ট্রেনের বগি লাইনচ্যূত হওয়াতে...সব ট্রেনই লেট। রেলের এক কর্মকর্তার সাথে কথা বলে আগের রাত ১০টার দিকে জানতে পারলাম যে, আমার যে ট্রেনটিতে যাবার কথা সেটি ৪/৫ ঘন্টা লেট। যাইহোক ভোররাতে ষ্টেশনের দিকে রওনা দেবার রিস্ক থেকে বেচে গেলাম। এই প্রথম ট্রেন লেট হবার বিষয়টিকে শাপেবর বলেই মনে হলো। যাইহোক সেই বন্ধুকে জানালাম যে, ট্রেন লেট, পরে সিদ্ধান্ত হলো যে, যেহেতু ট্রেণ লেট তাই উনি অফিসে হাজিরা দিয়ে সকাল ১১ টা নাগাদ চলে আসবে আর আমরা দুইজনে সিট ভাগাভাগি করে একসাথে গল্প করতে করতে যাবো।
যাইহোক ১৭ তারিখ সকালে প্রথম আলোর লিড নিউজ দেখে ট্রেনে যাবার শখ মিটে গেল। তবু ঠিক করলাম, ট্রেন যখন লেটই তাহলে হয়তো সকাল ১০ টার দিকে ষ্টেশনের দিকে রওনা দিলেই হবে। কিন্তু রাতে ঘুম কম হবার কারণে, তার উপর আবার ভোরবেলা সেহরি খেয়ে ঘুমানোর অববহিত পরেই বাড়িওয়ালি এসে ঘুম ভাঙানোয় [1] একটু বিরক্ত হয়েই ফোন অফ করে দিলাম আরেক ঘুম।। ফোনে অটো পাওয়ার অন অপশন সিলেক্ট করার পরেও এলার্ম মিস করলাম-আমার ঘুম ভাঙলোনা । ঘুম যখন ভাঙলো তখন সেলফোনটি অন করে দেখি গোটা দশেক মিসড কল এলার্ট মেসেজ। এক একটি মেসেজে ৮২-৮৩ টা মিসকল! কারণ, টিকেট আমার কাছে, আর সেই বন্ধুলোকটি ষ্টেশনে পৌঁছানোর পর থেকেই আমাকে ক্রমাগত কল করেই গেছে। কল ব্যাক করে জানলাম সে ১১.৩০ এর দিকেই ষ্টেশনে পৌঁছে গেছে। টিকেট দেখে তাকে সিট এবং কোচ নম্বর বলাতে তার সিটে যেয়ে বসতে পারলো... অবশেষে ।অথচ, এরকম ঈদের ২/১ দিন আগে-পরে বা এর কাছাকাছি সময়ে তার সিটের কাছে পৌঁছাতে পারাই এক অবাক ঘটনা। ট্রেনটির ছাড়ার সময় ভোর ৬ টা হওয়াতে এবং অপেক্ষা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে অনেক যাত্রী ফিরে যাওয়াতে এই অভাবনীয় শূণ্যতার সৃষ্টি হয়েছিল বলে ধরে নিলাম আমরা। তার সাথে কথা বলে আরো জানতে পারলাম, ট্রেনটিতে ধারনাতীত কম ভিড়, শুধু দুই/একজন দাঁড়ানো যাত্রী ছিল।সে আমাকে পরামর্শ দিলো ২.৪০ এ সিল্কসিটি এবং ৪ টার সময় একটি ঈদ স্পেশাল ট্রেন উত্তরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে-এবং আমি যেন এগুলোর যে কোনটি ধরার চেষ্টা করি। বিআর-তে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম, কোন ট্রেনই আজ আর ইফতারের আগে উত্তরের ক্ষ্যাপে যেতে পারবেনা।
সাবির্ক পরিস্থিতি চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিলাম, ট্রেন যাক ট্রেনের মতো, আমি যাবো আমার মতো।
ঠিক ৩.১৫ তে কল্যণপূর আসতে পারলাম, বিভিন্ন কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলাম...বাই এনি চান্স..কোন সিট কি ফাঁকা আছে ভাই? কমন জবাব এবং অভিজ্ঞতা হলো, রাজশাহীর কোন বাসের টিকেট নাই...সিটও ফাঁকা নাই, সবাই সময় মতোই আসতেছে...কাজেই, শূণ্যস্থান পূরণের কোন সুয়োগ পাওয়া গেল না। গ্রীণলাইন সার্ভিসের রংপুরগামী বাসের টিকেট আছে...কিন্তু টিকেটের দাম অত্যধিক...একইসাথে আমি মাঝপথে নামলেও রংপুরের+ঈদ+এসি চার্জ দিতে হবে [2]। দেখলাম বিআরটিসির একটি ডাবলডেকার দাঁড়ানো। প্রায় সব সিটই খালি। জানতে পারলাম এটাও রংপুর যাবে। কিন্তু ছাড়বে ইফতারের পর আর সিরাজগঞ্জ ‘রোডে’[3] নামলেও বগুড়া পর্যন্ত’র ভাড়া+ঈদ চার্জ দিতে হবে। ডাবলডেকারের চিন্তা বাদ দিলাম, দীর্ঘ যাত্রার জন্য ডাবলডেকার বোধহয় ভালো না!
আমি চিন্তা করে দেখলাম আমার জন্যে এসি বাসে যাওয়াটাই মঙ্গল [4]
রাজশাহী এবং বগুড়াগামী বিভিন্ন বাসের কাউন্টারে ঘোরাঘুরির পরে বগুড়ার ‘এস. আর’ পরিবহনের কাউন্টারের পাশেই দেখলাম ‘আগমনী’ নতুন পরিবহন সার্ভিস দিচ্ছে..ঢাকা-বগুড়া-রংপুর রুটের জন্য। এদের কাউন্টারের সামনে এস.আর এর একটি এসি বাস যাত্রী উঠাতে ব্যস্ত দেখে আবারো জিজ্ঞেস করলাম...বাই এনি চান্স...টিকেট হবে কি? এরপর গেলাম আগমণি কাউন্টারে। কাউন্টারের লোক তার চার্ট বের করলে আমি বেশ ভালো করে খেয়াল করে দেখলাম, রাত ১১.৩০ এর বাসের এক সিট ফাঁকা, তবু সে কোথায় যেন ফোন করে নিশ্চিত হয়ে জানালো রংপুর গামী এসি বাসের টিকেট আছে কিন্তু বগুড়াগামী বাসের কোন টিকেট নাই। আমি পুনরায় অনুরোধ করায় উনি আরেকজায়গায় ফোন করলেন, পাশের সহকর্মীকেও জিজ্ঞেস করলেন তার কাছে কোন টিকেট আছে কিনা (সম্ভবত আগে থেকেই কেটে রাখা)। বগুড়ার বাসেরও টিকেট পাওয়া গেলনা। উনি এস আর পরিবহনের একটি বাস দেখিয়ে বললেন, দেখেনতো ঐটাতে খোজ নিয়ে...যদি কেউ মিস করে...। কাউন্টারে যেয়ে জানতে পারলাম কেউ মিস করে নাই, সবাই অনেক আগে থেকেই এসে বসে আছে...আর আমাকে ঐ বাসের গাইডের সাথে কথা বলতে পরামর্শ দিলো। গাইড জানালো, সে তার নিজের সিটটি দিতে পারে...তবে সে এই বাসে যা্বেনা, এই বাসের গাইডের সিট(গাইডের জন্য সামনের দিকে বামপাশে বেশ ছোট আকারের একটি সিট থাকে) ইতিমধ্যোই বিক্রি হয়ে গেছে। সে পরের বাসে যাবে, ৪.৩০ এ যেটা ছেড়ে যাবে সেইটাটে । আমি তার সিটে যেতে পারি তবে আমাকে নওগাঁ’র ভাড়া দিতে হবে। আমি হালকা নিগোশিয়েশনের চেষ্টা করতেই বলল...তার এই সিট বিক্রির টাকার ভাগ সবাইকেই দিতে হবে্ এমনকি মালিককেও, যদি বাস দুইবার যাতায়াত করে তো একবারের পুরো টাকাই মালিককে দিতে হবে এবং আরেকবারের টাকা গাইড+ড্রাইভার+হেলপার পাবে। গাইড আরো জানালো যে, বাসটি নতুন, গতকালই প্রথম রাস্তায় নামানো হয়েছে। সার্বিক বিবেচনায় এই বাসটিতে ভ্রমণই বুদ্ধির কাজ বলে মনে হলো।
ট্রাফিক জ্যামের কারণে ৪.৩০ এর বাসটি আসতে বেশ দেরী করলো এবং ঠিক সন্ধ্যা ৬ টায় যাত্রা শুরু হলো আমাদের। আমাকে কোন টিকেটও কাটতে হলোনা । শুধু পকেটে ছিল ট্রেনের সেই টিকেট (ধুমকেতু/ঙ/৪৫)। গাইড আমাকে চন্দ্রা পর্যস্ত মূল সিটে বসা যাবে বলে C3 সিটে বসালো। সাভার পাড় হওয়া মাত্রই মাগরিবের আযান শুনতে পাওয়ায় পানি মুখে দিয়েই গাইডকে অনুরোধ করলাম ইফতারের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট (প্রধান/৩নং)এ বাস থামাতে, যদিও লোকজন আযান দেবার সাথে সাথেই বাস থামাতে উদগ্রীব ছিল কিন্তু যৌক্তিক কারণেই কেউ আমার অনুরোধে বাগড়া দিলোনা (আমার অনুরোধে অবশ্য যুক্তি ও আবেগ উভয়ই ছিলো)। শেষপর্যন্ত বাস ডেইরি ফার্ম গেটে [5] থামানো হলো।
কেবল ডিপজলের হোটেলেই ইফতারী বিক্রি হচ্ছিল। ডিপজল আমাকে দেখেই তার ডিপ-জলি হাসি দিয়ে আমার কুশলাদি জানতে চাইলো। আরেকজন দোকানি মামুনও এগিয়ে (মামুন কে আমি শিশু দেখেছিলাম-এখন সে পরিপূর্ণ যুবক)এসে আমার খবরাদি নিলো। অনেকদিন পর ক্যাম্পাসে ইফতার করতে ভালোই লাগলো। যদিও পুরোই ফাঁকা ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসে থাকাকালীন রোযার দিনগুলোতে এখানেই ইফতার করতাম প্রতিদিন।
ইফতার করে বাসে উঠার পর এলইডি স্ক্রিনে ৩ ইডিয়টস চালানো হলো...কিন্তু শান্তিমত পুরোটা দেখতে পারলাম না, চন্দ্রা তে আসতেই আমাকে মূল সিট ছেড়ে গাইডের সিটে বসতে হলো যা প্রায় স্ক্রীনের নিচেই আর এটা বেশ যৌক্তিক কথা যে ‘বাতির নিচেই অন্ধকার’ যা আমি আবারো টের পেলাম।
নবীনগর থেকে সিরাজগঞ্জ ‘রোড’ পর্যন্ত কোনরকম ট্রাফিক জ্যাম চোখে পড়লোনা। শুধু শান্ত গতিতে ইদের যাত্রী বোঝাই বেসামরিক যানের এক বিশাল বহর বলেই মনে হলো।
টাঙ্গাইল পাড় হবার পর থেকেই ঝিমুনি তারপর সামান্য ঘুমিয়েও পড়েছিলাম...গাইডের সিটের পাশের স্টিলের রডের ঈষৎ গুতো মাথায় লাগায় সে ঘুম ছেড়ে যায় অবশ্য। তিনজন বাচ্চার প্রবল হিসি পাওয়াতে এবং তাদের বাবাদের অনুরোধে ড্রাইভার অনিচ্ছা সত্বেও বাস থামাতে বাধ্য হয়, কারণ ৫ মিনিটের জন্য থামলেও ৩০ মিনিট পেছনে থাকতে হবে আর গাড়িগুলো বেশ নিয়ম মেনেই লাইনধরে চলছিল-রেলাইন হলেই সময় নষ্ট হবে, আবার, নতুন গাড়ি বিধায় থামানো অবস্থায় অন্য যানবাহনের ঘষা খাবারো ভয় ছিল, অধিকন্তু নিয়মমাফিক চালানোতে এবং ট্রাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের বেশ মনোযোগ ছিল বলেই সবকিছু দেখে মনে হয়েছে।। চন্দ্রার মোড় থেকে যে দুইজন যাত্রী উঠেছে...তাদের জন্য বাস থামানো হয়নি, গতি ধীর করা হয়েছিল কেবল। যেতে যেতে শুধু একটা বিষয় দেখে একটু মন খারাপ হয়েছে...কাভার্ড ভ্যানে ও শিপিং কনটেইনারে করে লোকজনের বাড়ি ফেরা-যদিও পেছনের একটি দরজা খোলা।
সিরাজগঞ্জ রোডে নামলাম ঠিক রাত ১০.০০ টায়, শুনতে পেলাম স্থানীয় থানার ওসির পক্ষে যাত্রী সকলকে একা একা কোন প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাসের যাত্রী হয়ে উঠতে নিষেধ করা হচ্ছে। বাস থেকে নেমেই মনে হলো এক কাপ চা খাই আর এই অবকাশে এখানকার বর্তমান দুনিয়ার হালচাল বুঝি। দোকানদার জানতে চাইলো দুধ চায়ে আদা দিবে কি না...আমি প্রথমে না করলেও পরে হ্যাঁ বললাম, আদা দিয়ে দুধ চা বেশ লাগলো, দোকানিকে বিষয়টা বলতে যেতেই সে নিজে থেকেই জানতে চাইলো দুধ-আদা চা কেমন লাগছে ভাই? আমি বললাম, বেশ ভালো... চা খেতে খেতে একটু চোখ কান খোলা রেখে চিন্তা করলাম বাঁকি পথ কিভাবে যাবো। চায়ের দোকানি জানালো একটু আগেই একটা বাস ছেড়েছে..বনপাড়া-নাটোরের,...।
আরো কিছু সময় বসে খেয়াল করলাম...একটি লেগুণা...এবং এর হেলপার বনপাড়া...বনপাড়া বলে ডাকাডাকি করছে। ‘রোড’ থেকে আমাকে যেতে হবে আরো প্রায় ৪২ কিলোমিটার চলনবিলের মধ্যে দিয়ে...নামতে হবে বনপাড়া পাবার ১৩ কিলোমিটার আগেই। চলনবিলের খোলা হাওয়ায় অন্তত গরমের জন্য এসি প্রয়োজন বলে মনে হলো না।
রোড থেকে বাড়ির দিকে যাত্রাপথের সামান্য পরেই তাড়াশ (ত্রাশ>তাড়াশ কি না কে জানে)এবং চাটমোহর থানার মাঝামাঝি জায়গা। এই মহাসড়কটি তৈরী হবার আগে এলাকাটি ছিল বেশ দূর্গমিএবং বিপদসঙ্কুলও বটে। এখনকার মান্নাননগর এরপরে ৯ নং ব্রীজ ( যেন ৯ নং বিপদ সংকেতের আরেক নাম) এবং তৎসংলগ্ন এলাকাই হবে হয়তো। এগুলোর অবস্থান দুইটি থানার বাইরের নাকি মধ্যেবর্তী কোন স্থান হওয়াতে...হয়তো কোন থানাই ওই এলাকাকে নিজেদের এলাকা বলে স্বীকার করতো না। এখনো বোধহয় এ ধরনের দায় এড়ানোর জটিলতা আছেই; যে কারণে এই এলাকা হয়তো্ একদা ছিল ‘সর্বহারাদের’ এবং অপরাধীদেরও অভয়াশ্রম এবং এই ধারা এবং ঐতিহ্য অব্যহতই মনে হলো। সাম্প্রতিককালের বেশ কিছু মোটরবাইক ছিনতাই এবং খুনের ঘটনার জন্য মান্নাননগর এবং এর আশেপাশের এলাকা বেশ বিপদজনক বলে জানালো লেগুনার সহকারী।
রাত ১০.৩০ এ লেগুনা ছাড়লো...বাড়ির কাছের স্টপেজ-রাজ্জাক মোড়ে নেমে রিকশা ভ্যান নিলাম বাড়িতে যাবো বলে। ভাইয়ের বাসা থেকে চাবি নিয়ে যখন পৈতৃক ভিটের গেটের তালা খুলি তখন ঠিক রাত ১১.৩০ মিনিট। সবকিছু হলো ঘড়ির কাঁটা ধরেই, মসৃণ ঝামেলাহীন নিরাপদ ভ্রমণ, ৪ রকম যানবাহনে(রিকশা+বাস+লেগুনা+রিকশা-ভ্যান)। শুধু ভোর ৬ টার ট্রেনের বদলে সন্ধ্যা ৬ টার বাস ।
পাদটীকা
1. বাড়িওয়ালি এসেছিল, গ্যাস/পানি ও বিদ্যুত লাইন অফ এবং দরজা জানালা ঠিকমতো বন্ধ করার কথা মনে করিয়ে দেওয়া সহ গত এক মাস আগে ভেঙে যাওয়া একটি পানির কল যে অবশেষে আমাকেই ঠিক করে নিতে হবে এই রায় দিতে, এই এক মাস রান্নাঘরের কলের পানি বন্ধ, পানি টেনে কাজ করা বেশ কষ্ট।
2. বাসে করে যাবার ক্ষেত্রে যে কোন জায়গায় নামলেই শেষ ষ্টেশনের ভাড়া দিতে হবে-বিষয়টি মেনে নিতে আমার কষ্ট হয়। আবার অবাকও লাগে, যেমন শেওড়াপাড়া থেকে কারওয়ান বাজার যেতে হলেও মিরপুর ১২ থেকে মতিঝিলের যে ভাড়া সেটা পুরো দিয়েই যেতে হয়। আবার ৩৬ নং বাসে শেওড়াপাড়া থেকে শিশুমেলা পর্যন্ত যে ভাড়া দিতে হয় সেটাই মিরপুর ১২ থেকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের ভাড়া। পুরো পথের ১/৫ অংশ গেলেও একই ভাড়া দিতে হবে এ এক আজব নিয়ম। তাহলে সরকার ও বাসমালিকেরা কেনই যে প্রতি কিমি হারে ভাড়া হিসেব করে!
3. রোডঃ সিরাজগঞ্জরে যে মোড় থেকে নলকা-হাটিকুমরুল সংযোগ সড়কের শুরু, ডানে বগুড়া, বামে উল্লাপাড়া এবং সোজ।বনপাড়া-নাটোর-রাজশাহী। সমগ্র রোডের একটি বিশেষ জায়গার নাম রোড এটি কনফিউশন তৈরী করেছিল একদা আমার মনে।
4. লং জার্নিতে আমি ধুলোবালি এভোয়েড করার চেষ্টা করি, আমার চোখে ড্রাই আই সিনড্রোম থাকায়, চোখে ন্যাচারালি যে পরিমাণ পানি তৈরী হবার কথা তা হয়না, এতে চোখের অটোমেটেড ধুলোবালি পরিষ্কার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, যে কারণে ধুলোবালিপূর্ণ যাত্রার অববহিত পরেই চোখে ইনফেকশন হয়। চোখের এই ধুলোবালি পরিষ্কার প্রক্রিয়া অক্ষুন্ন রাখতে আমাকে প্রতিমাসে প্রচুর নকল চোখের পানি বা আর্টিফিসিয়াল টিয়ার্স (আই ড্রপ) টাকা দিয়ে কিনতে হয়। এবং দেশি নকল চোখের পানিতে ভালো কাজ না হ্ওয়াতে বেলজিয়াম বা আমেরিকার তৈরী নকল চোখের পানি ব্যবহার করতে হয়, একসময় ‘এ্যালকনের’ ‘ন্যাচারাল টিয়ার্স’-(ব্র্যান্ড নেম) ব্যবহার করতাম, দাম ছিল ১২৫ টাকা, তারপর ২৫০>৪৫০>৭০০> মার্কেট আউট... এরপর দেখি পাকিস্তানের তৈরী একই প্রডাক্ট...আগেরগুলা সম্ভবত বেলজিয়াম অরিজিন ছিল...একসময় দেখলাম পাকিস্তানের ‘ন্যাচারাল টিয়ার্স’ও পাওয়া মুশকিল।....একদিন শেওড়াপাড়া থেকে হেঁটে হেঁটে মিরপুর ১২ পর্যন্ত দুই পাশের সবগুলো মেডিসিন স্টোর খুজেও আর্টিফিশাল টিয়ার্স না পাওয়াতে লাজ ফার্মা থেকে ‘সিসটেইন’ (আমেরিকার তৈরী আর্টিফিশাল টিয়ার্স) নিয়ে ব্যবহার শুরু করি...এইটা অসাধারণ কাজ করে...মোটামুটি আসল চোখের পানির অনুভূতি...পরে সিসটেইনের ভক্ত হয়ে গেলাম...একসময় দেখি এটার দামও দ্বিগুন হয়ে গেছে... এফোরডেবল না, আবার সবসময় মার্কেটে এভেইল্যা্বল ও না। তারপর সিসটেইন বাদ দিতে হলো। এখন ‘রিফ্রেশ টিয়ার্স’ নিয়ে আছি..এটাও ইউএস প্রোডাক্ট, এলারগনের /Allergan, Inc. এর তৈরী তবে সিসটেইনের চেয়ে দাম কম, কাজও ভালোই করে।
5. সেই প্রথমবর্ষে পড়াকাল থেকে আজ পর্যন্ত খেয়াল করছি। বাসের হেলপার/কন্ডাক্টরেরা জাবি গেটকে (৩নং/প্রধান) ডেইরি গেট বলতেই ভালোবাসে !

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





