somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ত্রিভুজ প্রেমের অর্থ অন্যকে মেরে নিজেও মরা

২১ শে অক্টোবর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ত্রিভুজ প্রেমের বলি অনেকেই হয়েছেন। তবে সবচেয়ে আলোচিত ছিল বোধহয় বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা। ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা। এ ঘটনা রিফাতের স্ত্রী মিন্নির সামনে ঘটেছিল। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, মিন্নি রিফাতকে বাঁচাতে চেষ্টা করছে। গুরুতর আহত অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান।

২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নিসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। মিন্নি যে রিফাতকে বাঁচাতে চেষ্টা করেছে, এটা ছিল আসলে নাটক।

গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে পুরান ঢাকায় গলা কেটে হত্যা করা হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদকে (২৫)। কলেজছাত্রী বর্ষার (১৯) প্রেমিক মাহির (১৯) তার গলায় ছুরি চালানোর সময় জোবায়েদের ছাত্রী বর্ষা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে সবকিছু নিজ চোখে দেখেছে। জোবায়েদ প্রাণভিক্ষা চাইলে বর্ষা বলে, তুমি না মরলে আমি মাহিরের হব না। বর্ষা তার মৃত্যু নিশ্চিত করে যায়। তখন জোবায়েদ বাঁচার জন্য দরজায় কড়া নাড়লেও কাউকে পায়নি। 

বর্ষা গত পরশু জোবায়েদের সঙ্গে কথা বলে তার অবস্থান জানতে চায় বর্ষা। পরে সে তথ্য মাহিরকে জানায় সে। বাসার নিচে আসামাত্রই জোবায়েদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় মাহিরের। সে জোবায়েদকে জিজ্ঞেস করে, আপনি বর্ষার সঙ্গে সম্পর্ক করেন কেন? একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। তখন মাহির তার গলায় ছুরিকাঘাত করে। 

জোবায়েদ বর্ষাকে একবছর ধরে প্রাইভেট পড়াত। গত চার মাস থেকে জোবায়েদকে পছন্দ করত বর্ষা। একপর্যায়ে প্রেমের সম্পর্কও তৈরি হয়। এর আগে ঘটনার প্রধান আসামি মাহিরের সঙ্গে ৯ বছরের প্রেম ছিল বর্ষার। মানে ক্লাস সেভেন থেকে তাদের সম্পর্ক। ভাবা যায়! জোবায়েদকে বর্ষা যে পছন্দ করে, বা তাদের মধ্যে সম্পর্ক আছে তা জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হয় মাহির। সম্প্রতি আবার জোবায়েদকে আর ভালো লাগত না বর্ষার। মুড সুইং আর কী! বর্ষা এ ঘটনা তার সাবেক প্রেমিক মাহিরকে জানায়। এরপর বর্ষার জীবন থেকে জোবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে মাহির। আর এক্ষেত্রে তাকে সহায়তা করে বর্ষা। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে বর্ষা মাহিরকে বলেছে, স্যারকে তুমি মেরে ফেলো, আমি আর সহ্য করতে পারছি না। মাহির তার বন্ধু আয়লানের সাথে হত্যার পরিকল্পনা করে আগানগর বউ বাজার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ এলাকা থেকে ৫০০ টাকা দিয়ে একটি সুইচ গিয়ার চাকু কিনেছিল।

এই যে ত্রিভুজ প্রেম নামক ছেলেখেলা; এর অর্থ কী! আবার এমনও হতে পারে ছেলেটা তাকে জোর করছিল সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে। ছেলেটা হয়তো ক্ষমতা খাটাতে চেয়েছিল। পুলিশের ভাষ্যে এমন হওয়ার সম্ভাবনা কম অবশ্য। তাও বললাম, কারণ মেয়েটা যে বলছিল, তুমি না মরলে আমি মাহিরের হব না- এটা কিন্তু অন্য কিছু বোঝায়। যদি এমন হয়ই, তাহলে ছেলেটা নিশ্চয়ই ভুল করেছে। নয় বছরের সম্পর্ক যার সাথে সে তো ছেড়ে দেবে না। সতর্ক হওয়া দরকার ছিল। 

আবার অনেক জায়গায় ছড়িয়েছে মেয়ের মা-বাবা নাকি জগন্নাথের ছেলেটার সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিল। এটা সত্যি হলে এ নিয়েও গণ্ডগোল হতে পারে। আবার কোথাও দেখলাম, মাহিরের কাছে নাকি গোপন ভিডিও ছিল, তা নিয়ে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে গলায় ছুরি লেগে যায়। যদিও এসব সত্য হওয়ার সম্ভাবনা কম।

শিকারিরা তো শিকারের জন্য ওঁৎ পেতে থাকে। সে জন্য শিকারকে অবশ্যই সতর্ক হওয়া উচিত। কিন্তু এখন দিনকাল এমন হয়েছে কেউ ধৈর্য ধরে না। ঝটপট ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। পরে ভোগে। এই যে বর্ষা বা মাহির- এরা যে ঘটনাটা ঘটাল তারা কি ভেবেছে পার পেয়ে যাবে? সুখে-শান্তিকে থাকবে? মিন্নি কি পার পেয়েছিল? মাহিরের সর্বোচ্চ শাস্তিই হবে। বর্ষার কমসে কম যাবজ্জীবন হবে। একজনকে মেরে নিজেরাও অকালে মরবে।

ছবি: ইন্টারনেট
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:০৯
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×