
গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর এলাকা থেকে এক কিশোরকে আটক করেছিল পুলিশ। তার পরনে ছিল প্যান্ট-কোট-টাই। হাতে ছিল একটি ব্যাগ। সে আসলে স্কুলছাত্র ছিল। তার ব্যাগে ছিল মুক্তিযুদ্ধের বই। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করা তার নেশা। ধানমন্ডির ৩২-এ সে গিয়েছিল ইট সংগ্রহ করতে। পুলিশ তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে। সে নিশ্চয়ই বড় অপরাধ করে ফেলেছিল!
গত বছরের জুলাইতে এরচেয়ে একটু বড় একজনকে পুলিশ আটক করেছিল। তার জন্য মানুষের কান্নাকাটির শেষ ছিল না। তার বিরুদ্ধে আবার পুলিশ হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। অথচ এই যে কিশোর, সে শুধু দুটো ইট আনতে গেল, তার জন্য পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে গেল? বেশিক্ষণ আটকে রাখেনি অবশ্য। পুলিশের দয়ার শরীর। ছেলের মায়ের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।
একইদিন আরো একটা ঘটনা ঘটেছিল। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির সামনে মারধরের শিকার হন সালমা ইসলাম (৪০) নামে এক মধ্যবয়সী নারী। তাকে লাঠি দিয়ে পেটাচ্ছিল জান্নাত খান নামে ২০-২২ বছর বয়সী এক নারী। সে একসময় নার্স ছিল। সেসব ছেড়ে এখন এনসিপির রাজনীতি করে।
মজার ব্যাপার হলো, সে একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করত। এখন ‘মোর খ্রিষ্টান দ্যান পোপ’ হয়ে গেছে। ছাত্রলীগের লুঙ্গির নিচে এত বছর থাকা সৈনিকের যেমন এখন বিরাট বিপ্লবী হয়ে গেছে। তো যে মহিলাকে পেটাচ্ছিল, তিনি বোরখা পরিহিত ছিলেন। যে পেটাচ্ছে সে কিন্তু বেপর্দা। তাও তার সমর্থন বেশি। অথচ অন্য সময় হলে বিরাট হৈচৈ পড়ে যেত। ধর্ম অবমাননাও হতে পারত। রাজনীতিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে, এখন ধর্মও ফেইল। আমার প্রশ্ন হলো, নিরস্ত্র একজন মহিলা কী এমন করছিলেন বা করতে পারতেন?
যাহোক, মারধরের শিকার সালমা ইসলামকে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির বিবিএ তৃতীয় বর্ষের ছাত্র আবু সাইদ মু. সাইম হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভাবা যায়? পুলিশ মোবাইল চেক করলে এখন আর মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হয় না। গত একবছরে এত এত মানুষ মারধরের শিকার হলো, হত্যাকাণ্ডের শিকার হলো, এত এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটল, তাও এখন আর আকাশ-বাতাস কাঁপে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




