মধ্যরাত্রি পার হয়ে গেছে । হঠাত ইচ্ছা হলো বাইরে বের হতে । বর্তমান বাসাটার একটা বড় সুবিধা হলো রাতেও বের হওয়া যায় । হাতিরঝিল দিয়ে হাটতে হাটতে রেললাইনে এসে বসে আছি । ঠান্ডা লাগতেছে , একটু চা হলে বেশ ভাল হতো । কিন্তু যতদুর চোখ যায় কোথাও কেউ নেই । মাঝে মাঝে একটা ইদুর দৌড়াদৌড়ি করতেছে । মশা লাগছে ভালোই । হঠাত দেখি চায়ের ফ্লাক্স হাতে এক চা ওয়ালা আসতেছে । এসে পাশেই বসলো ।
ঃমামা, চা খাইবেন ?
ঃ হুম , এক কাপ দেন ।
চা পান করতে করতে গলপ শুরু করলাম । চা তার স্বাদ কেমন যেন অদ্ভুত ।কেমন যেন একটা অদ্ভুত গন্ধ । বাট গন্ধটা কিসের ঠিক মনে পড়ছে না । চারপাশের পরিবেশটা কেমন যেন গুমোট বাধা । চা ওয়ালা হঠাত জিজ্ঞেস করলো
ঃ মামা, কখনো লাশের চা খাইছেন ?
আমি চমকে উঠি ।
ঃ লাশের চা মানে ?
ঃ লাশের চা পাতা দিয়ে বানানো চা ।
ঃসেটা আবার কি ?
ঃ মাঝে মাঝে বিদেশে যখন মানুষ মারা যায় , গরীব মানুষ হইলে তাগো লাশ চাপাতা দিয়া নিয়া আসে । চা পাতা দিয়ে রাখলে লাশ পচেনা । এই দেশে আসার পর কিছু খারাপ মানুষ সেই চা পাতা বিভিন্ন দোকানে বেইচা দেয় । দোকানদারেরাও বেশি লাভের আশায় না যাইনা সেই চাপাতা কিনে নিয়ে চা বানায়া বিক্রি করে । সেইডারেই কয় লাশের চা ।
ঃ অদ্ভুত, আগেতো কখনো শুনিনি ।
ঃ শুনবেন ক্যামনে , এইডা ঢাকার শহর । এইখানে রোজ রোজ কতকিছু ঘটে । শুধু বিদেশ থেকে আনা লাশ না, দেশেও অনেক লাশ চা পাতা দিয়ে রাখে পরে সেইডা দোকানে বিক্রি করে দেয় ।
মাথাটা গুলিয়ে আসতে শুরু করে । হঠাট দেখি চাওয়ালা হাটা শুরু করলো । একটা ট্রেন আসতেছে । ট্রেনের সামনে গিয়ে হঠাত চা ওয়ালা উধাও । আর তখনই মনে পড়ে গেলো, আরে আমি যে চা খেলাম এটার গন্ধতো অনেকটা লাশের মতই ।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৪১