মানুষ আসলেই কেন সুইসাইড করে! জীবনের উপর কতটা বিরক্ত হলে একজন মানুষ নিজেকে হত্যা করতে পারে!
ঐ মানুষগুলোর অনুভূতিগুলো অনুভব করা খুব কঠিন। তবে অনেক চেষ্টা করছি জানার জন্যে। শ’খানেকের মতো সুইসাইড নোটও পড়েছি। তবে একটা কাগজের লেখা দিয়ে মানুষের হৃদয়ের গভীরতা জানা খুব সহজ না। মানুষগুলো যখন সহ্যের শেষ রেখায় পৌঁছে যায়, চারপাশের মানুষগুলোর আচরণও যখন আর স্বাভাবিক মনে হয় না ঠিক তখনই তার মাথায় মৃত্যুর এই চিন্তা চলে আসে। তারা তখনই ভাবতে শুরু করে মৃত্যু সবকিছুর সমাধান করে দিবে। এই ‘নেগেটিভ’ চিন্তা মাথায় চলে আসলে সেটা অবশ্যই শেষ পরিণতি দেখিয়ে ছাড়ে। ‘নেগেটিভ’ কিংবা খারাপ চিন্তা আমাদের মস্তিষ্ককে বেশি আকৃষ্ট করে।
আপনি কখনও খেয়াল করছেন কিনা জানি না-
আমাদের রাস্তাগুলোর পাশে প্রায়ই লিখা থাকে ‘এখানে ময়লা ফেলা নিষেধ’ কিন্তু মানুষজন ময়লা দিয়ে সেই সাইনবোর্ডটি সবার আগে ঢাকে। আজকে রাস্তায় বের হলে কয়েক জায়গায় দেখবেন। আমি যদি এখন আপনাকে বলি চোখ বন্ধ করে দুই মিনিট আপনার বাবার কথা কখনোই চিন্তা করবেন না কিংবা চোখ বন্ধ করে আপনার বাবার চেহারা একবারও কল্পনা করবেন না। আমার বিশ্বাস আপনি পারবেন না। কারণ আমাদের মস্তিষ্ক এই এই ‘নেগেটিভ’ চিন্তাগুলোকে বিশেষভাবে দেখে। আর এজন্যই কেউ একবার সুইসাইড করার সিদ্ধান্ত নিলেই, মস্তিষ্ক তাকে দিয়ে সেটা করিয়ে ছাড়ে।
এবার ধরে নিলাম আপনার জীবনে অনেক সমস্যা। খুব কাছের মানুষটাও আপনার সাথে ভালো ব্যবহার করছে না। তাই আপনি সুইসাইড করার সিদ্ধান্ত নিলেন। ঐ মানুষটাকে শিক্ষা দেয়া কিংবা বোঝানোর জন্যে যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন। আপনি যথারীতি নিজেকে হত্যাও করে ফেললেন। আর এখন ঐ মানুষটিও নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। এখন আপনার জন্য চোখের জল ফেলে। আপনার শূন্যতা খুব গভীরভাবে অনুভব করে।
তবে লাভ কি!
আপনি তো এসবের কিছুই দেখতে পারলেন না!
আপনি যে তাকে কতটা ভালোবাসতেন তা হয়তো সে বুঝতে পেরেছে তবে আপনি তা কখনোই জানতে পারলেন না। কারণ আপনি তো মাটির নিচে।
আপনার মরার পর মানুষটা একসপ্তাহ খুব দুঃখ করলো। তবে আমাকে বিশ্বাস করুন মানুষটি আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে; ঠিক আগের মতোই। আমি বুকে হাত দিয়ে এটা বলতে পারি কারণ মানুষের ধর্মই এমন। আপনার বাবা-মা কিংবা পরিবারের অবস্থার কথা বাদই দিলাম। তবে যে মানুষ দুজন না থাকলে আপনি পৃথিবীতে আসতেই পারতেন না; সুইসাইড তো অনেক দূর! মরার আগে অন্তত একবার তাদের কথা একবার চিন্তা করে নিবেন। তাঁরা তো আপনাকে নিজ হাতে মরার জন্যে জন্ম দেয়নি!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৪২