ফেসবুকে চোখের সামনে যা আসে, সবকিছুই শেয়ার করা আমাদের একটা স্বভাবে পরিণত হয়ে গেছে। মনেহয় এই জিনিসটা শেয়ার না করলে মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে।
আপনারা নিজেদের টাইমলাইনে যা খুশি পোস্ট বা শেয়ার করার অধিকার রাখেন। এতে আপনাদের পূর্ণ অধিকার আছে। তবে যে জিনিসটা আপনি শেয়ার করছেন আদৌও সেটা সত্য কিনা অন্তত সে বিষয়টা নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
আমরা বাঙালিরা অনেক আবেগপ্রবণ একটা জাতি। এটা আমাদের সমস্যা না। বরং আমাদের জিনগত কারণেই আমরা এমন। কেউ একজন আবেগ নিয়ে কিছু লিখলেই সেটা দেখে আমাদের চোখে জল চলে আসে। চোখে জল আসার আগে অন্তত জেনে নিবেন আসলেই ব্যাপারটা সত্যি কিনা।
দেশের সংকটপূর্ণ সময়ে মিথ্যা জিনিসের ছড়াছড়ি যেন একটা ট্রেন্ডে পরিণত হয়েছে। সবাই চায় সে স্পটলাইটে আসুক। দেশের সবাই তাকে চিনুক, জানুক। এজন্য মিথ্যা আর আবেগ মিশিয়ে সত্যের মাথা খেয়ে নিচ্ছে। তাই যেসব জিনিস শেয়ার দিচ্ছেন, একটু বুঝেশুনে দিবেন।
সেদিন দেখলাম একলোক রক্তে চেয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিল। আরেক লোক সেটা শেয়ার দিল। মজার ব্যাপার হলো রক্ত চেয়ে পোস্ট দেওয়া হয়েছিল ২০১৩ সালে। আর মানুষটা শেয়ার দিল ২০২০ সালে। এবার চিন্তা করে দেখুন আমাদের দেশে একটা পোস্ট কতবড় প্রভাব বিস্তার করে। যে মানুষটা ২০১৩ সালের পোস্ট ২০২০ এ এসে শেয়ার দিল, তার যে সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের জ্ঞান নেই এটা নিশ্চিত।
আর এখন যদি শিক্ষিত মানুষ হয়েও আপনি কোন ভুল তথ্য শেয়ার করেন, সেটার প্রভাব কি রকম হতে পারে সেটুকু অন্তত আন্দাজ করতে পারছেন।
সবকিছু শেয়ার করার আগে নিজে সত্যটা জেনে নিবেন। আরেকজন শেয়ার করেছে মানেই সেটা সত্যি হয়ে যাবে এমনটা না।
ভালো এবং সত্য সবকিছু অবশ্যই শেয়ার করবেন। এতে সবার উপকার হবে। তবে অন্তত ইতালির স্কুল বন্ধের ঘোষণার স্ক্রিনশট নিয়ে একে অন্যকে জিজ্ঞেস করবেন না, "দোস্ত এটা কি সত্যি?"
অন্যকে আপনার এই জিজ্ঞেস করাটাই একধরনের ভাইরাল। এটা না করে যদি নিজে একটু খোঁজ খবর নিতেন তাহলে ঐ মিথ্যা গুজব সবার মাইডে তে যেত না।
সত্যটা নিজে জানতে চেষ্টা করুন। তা না হলে আবার কোন এক মহাপুরুষ বলবে- "দেশের এই তাপমাত্রায় করোনা ভাইরাস বাঁচতে পারবে না।" আর গোটা জাতি সেটা বিশ্বাস করতে শুরু করবে।
আল্লাহ সবাইকে ভালো রাখুক।
পৃথিবীকে রক্ষা করুক।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৫৩