somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেহেনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন আজ।

০১ লা মে, ২০০৯ সকাল ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ এই স্লোগান দেয়ার দিন আজ। আজ মহান মে দিবস। বিশ্বব্যাপী মেহনতি মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের স্মরণীয় দিন। আজকের দিনটি ‘মে দিবস’ নামে পরিচিত। মে দিবস পালন উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। আজ সরকারি ছুটির দিন। বন্ধ থাকবে সংবাদপত্র অফিসও। মে দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক বিশেষ নিবন্ধ, সম্পাদকীয় ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বেতারসহ বিভিন্ন টিভি চ্যানেল বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
১৮৮৬ সালের এইদিনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো নগরীর শ্রমিকরা দৈনিক আট ঘণ্টা কর্মসময় নির্ধারণ ও ন্যায্য মজুরির দাবিতে সর্বাত্মক ধর্মঘট শুরু করে। তখন আমেরিকা ও ইউরোপে হতভাগ্য শ্রমিকদের দৈনিক ১৪ ঘণ্টা থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করতে হতো। ‘ওভার টাইম’র নিয়ম ছিল না। সংশ্লিষ্ট মালিকরা শ্রমিকদের যতদূর
সম্ভব খাটিয়ে নিতো। কিন্তু মজুরি দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো ন্যায়নীতির ধার-ধরতো না। এ ধরনের জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় শ্রমিকরা; দৈনিক সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে শুরু করে ধর্মঘট। এইদিন যে আন্দোলনের সূচনা হয়, তা চূড়ান্ত রূপ নেয় ৩ এবং ৪ মে। এই দুইদিনে শিকাগোতে পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারায় ১০ শ্রমিক। আহত হয় অনেকে। পুলিশ বহু শ্রমিককে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মধ্যে ৬ জনকে পরে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়। কারাগারে বন্দিদশায় আত্মহনন করেন একজন শ্রমিক নেতা। শ্রমিক আন্দোলনের এই গৌরবময় অধ্যায়কে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ১৮৯০ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে মে দিবস। প্রতি বছরই মে দিবসে বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষরা নতুন করে বঞ্চনার বিরুদ্ধে অধিকার প্রতিষ্ঠার শপথ গ্রহণ করে। শ্রমিকদের অধিকারসহ মানবাধিকারের বিষয়ও এইদিনের বিভিন্ন আলোচনায় এসে পড়ে।
শিকাগো শহরের ঐতিহাসিক শ্রমিক আন্দোলনের পর শতাধিক বছর পেরিয়ে গেছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইতিমধ্যে বিশ্বের শ্রমিকদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষার নিমিত্তে বহু আইন প্রণীত হয়েছে। বাংলাদেশেও এ ধরনের আইন আছে। কিন্তু সমাজের সর্বস্তরে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করা যায়নি এখনো। অভিযোগ আছে, অধিকাংশ গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে নারী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দেয়া হয় না। দেয়া হয় না প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ন্যায্য ওভারটাইম। শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ উন্নত করার ব্যাপারেও অনেক মালিক উদাসীন। মহান মে দিবসে আমাদের প্রত্যাশা, বিশ্বব্যাপী শ্রমজীবী মানুষের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত হোক; বন্ধ হোক সর্বস্তরের শ্রমিকদের ওপর সবধরনের জুলুম-নির্যাতন। আজকের দিনে সারা দুনিয়ার মেহনতি মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে শিকাগোর সেই আত্মত্যাগী শ্রমিকদের স্মরণ করি; নিবেদন করি তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা।
মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের মহিলা ও যুব কমিটি, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশন, জাতীয় শ্রমিক জোট-বাংলাদেশ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন-বাংলাদেশ, গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্পরক্ষা জাতীয় মঞ্চ, স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ফেডারেশন, ঢাকা মহানগর সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগ, জাতীয় শ্রমিক জোট, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ পোশাক শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক ঐক্য, জাতীয় শ্রমিক লীগ, জাতীয় ঐক্যমঞ্চ, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল, জাতীয় শ্রমিক-কর্মচারী জোট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ শ্রমজীবী কেন্দ্র, বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী লীগ, জাতীয়তাবাদী গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক জোট, জাতীয় গণতান্ত্রিক শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, বাংলাদেশ কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, জাতীয় পার্টি এবং গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরাম নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০১২ সকাল ১১:২৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×