শিরোনামহীন
অবসন্ন প্রভাতে আড়স্ট আমি
দরজায় হঠাৎ খটখট শব্দ,
রাতের অসম্পূর্ণ আমেজে বিভোর হয়েও
দরজার দিকে পা বাড়াই,
আম্মু বলে নাশতা করে যা;
বাসের সময় হয়ে যাচ্ছে,
মনের অপ্রতিরোধ্য দেয়ালটা ভেঙ্গে
তৈরি করে নিই নিজেকে,
ব্যাগে ভরে নিই কতগুলো নিরস কাগজের স্তুপ।
সকাল ০৭:২৫
ফুটপাতে আমি দাঁড়িয়ে
অস্হির মন তবু নিথর দৃষ্টি,
কখন যে বাস এসে চলে যাবে
আমায় দিয়ে ফাকি !!!
অবশেষে বাস আসে
আমি উঠে পড়ি ঔদ্ধত্যে
অগণিত পথচারী বিস্মিতচোখে
তাকিয়ে রয়
মেধাবী এই আমি শিহরিত হই স্বভাবতই
ক্লাসে এসে সামনে বসি
সবাই ভাবে ভাল ছাত্র
ক্লাসটিচারের সন্তুষ্ট দৃষ্টি আমার দিকে নিবদ্ধ
আমি শান্তমনে শুনে যাই ক্লাসলেকচার,
খাতায় অবিরত দাগকাটে
আমার ক্লান্তিহীন কলম
নিমিষেই ভরে যায়
খাতাটার সবটুকু সীমানা,
আমি রোমাঞ্চিত হই নিজেরই অজান্তে ।
বিকেল ০৫:০০
ল্যাব থেকে বের হয়ে ছুটে যাই ক্যাফেটেরিয়ায়,
কফির কাপে এক চুমুকেই
মুছে ফেলতে চাই সবটুকু ক্লান্তি,
বিকেলের পড়ন্ত মায়াবী রোদ
আমার চোখে খেলা করে;মুক্তির হাতছানি দেয়,
বাসের জন্য ছুটে যাই আমি
বাড়ি ফিরতে হবে যে আমায়
বাথরুমে শাওয়ারের নীচে
নিজেকে উজাড় করে দিই,
সবটুকু ক্লান্তি যেন আমায় দেয় ছুটি,
সন্ধ্যার শেষে সেই চায়ের টং এ
বন্ধুরা আড্ডায় মাতি,
ফেলে আসা দিনগুলোর স্মৃতি খুঁজে ফিরি,
কৈশোরের স্বর্ণালী দিনগুলো
আমায় হাতছানি দিয়ে ডাকে
দৃষ্টিসীমারেখা ঝাপসা হয়ে ওঠে দ্রুত ।
একটু পরই নিস্তব্ধতা নেমে আসে
বাড়ির পথে পা বাড়াই আমি,
অনলাইনে কিছু যান্ত্রিক সময় কাটে
খাতায় লেখা হিজিবিজি অক্ষরগুলো
আমার কাছে এক দুর্বোধ্য রহস্যময় জগৎ ।
মধ্যরাতের নিস্তব্ধতায় হারিয়ে যাই
আমার নিজস্ব মায়াবী স্বর্গে,
স্পিকার ভেঙ্গে ছুটে আসে
পিঙ্ক ফ্লয়েড আর ডায়ার স্ট্রেইটের শব্দ তরঙ্গের জোয়ার,
রাতের সীমাহীন আধারে এক অব্যক্ত যন্ত্রণা
জেগে ওঠে বুকে,
লিখতে বসি তোমায় নিয়ে
আমার সবটুকু উজাড় করে,
কিন্তু আমার কবিতার খাতায়
শব্দজট শুধু ট্রফিকজ্যামের মত
স্হবির হয়ে রয়,
শব্দ ??সেতো এক ডানাভাঙ্গা শঙ্খচিল
যে উড়তে চায় প্রতিনিয়ত
কিন্তু হয় ব্যর্থ,
রাতের নরম বিছানায় আমি হারিয়ে যাই
চোখের দুটি পাতা পরস্পরকে
আলিঙ্গন করে পরম আবেগে,
আমার বোধ যেন হঠাৎ জেগে ওঠে
বুঝতে পারি যে
জীবনের অনেকটা সময় কেটে গেছে অবচেতনায়
পড়ে আছে কিছু স্মৃতি মনের অ্যালবামে
ধুলিধূসরিত বিচিত্র খেয়ালে
অপ্রাপ্তির শূণ্যতায়........।।
----------------------------------------------------------------------------------
শিরোনামহীন(দ্বিতীয় পর্ব
অদ্ভুত,অপ্রয়োজনীয় এক বিরান প্রান্তর
কিছু ক্লীব যান্ত্রিক কাঠামো মাঝে
অনভ্যস্ত চৌকস অভিনয় মঞ্চ,
রংতুলির আঁচড়ে বিষন্নতা
রঙের প্রয়োজনীয়তা তীব্র;সম্ভাবনাও অনিশ্চিত
স্বপ্নগুলো বিবর্ণ,মলিন
শুধুই অসারতা,কিছুটা নিথর
মেঘে মেঘে প্রহর হয়েছে প্রৌঢ়
তবু মানষপ্রেয়সীর হৃদয় দুর্ভেদ্য,দৃঢ়
স্বপ্নের অবয়ব নিখুত হয়ে ওঠে
স্পষ্টতর হয় অবাঞ্চিত,অনিশ্চিত ভবিষৎ,
কিশোরের প্রতীক্ষার প্রহর ফুরোয় না
শুধুই হেটে চলা এক অচেনা পথে ।
এক নির্মম কাঁচের দেয়ালের ওপাশে স্বপ্নের আনাগোনা
তবু নির্বাক কথোপকথন
শব্দের প্রয়োজনীয়তা তীব্রতর হয়ে ওঠে
অতি আকাঙ্খিত চাহনি
বিরক্তির চিহ্ন স্পষ্ট;তবুও পুনরাবৃত্তি অবিরত
কিছুটা নব্যবিনোদনস্পৃহা প্রণোদিত করে
অথচ কতটা সত্য!!!!!!!!!!!!!!
মাকড়সার জালের মত গাঢ়ীভূত হয় স্বপ্নের পটভূমি
অস্পষ্টতাও বাড়ে;তবুও বিরামহীন
সময়ে বাধা পড়ে না,
এতটা নির্বাক,এতটা অক্লান্ত সৃষ্টিচেতনা
অথচ ব্যর্থতার আনাগোনা স্পষ্ট,
হৃৎপিন্ডের ক্লান্ত ভেতরে চলে মৃত বুলেটের বিষাদ সংগীত,
খুন জমে হতে থাকে কঠিন ।
সংক্ষিপ্ত , সীমাবদ্ধ মঞ্চে একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি
অথচ কতটা আকাঙ্খিত!!!!!!!!!!!!!!!!
খোলা জানালায় অবিরত দর্শকের পরিবর্তন
সময়ের কাছে চলে আসা বারংবার
কখনো অপেক্ষা কখনোবা ধীর পদক্ষেপ;
কালের আবর্তে অমলিন পান্ডুলিপি অক্ষত রয়ে যায়
এক উন্মাদ স্পৃহা;তবুও চলে নিয়ন্ত্রিত কলক্ষেপণ
কিশোরটি আজ নিঃস্ব
সময়ের স্রোতে ভেসে গেছে তার সবকিছুই
তবু তার দৃষ্টিসীমানা জুড়ে আজও রঙিন পৃথিবীর স্বপ্ন......।।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা মার্চ, ২০১০ দুপুর ২:২৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




