আমরা অনেকেই মাহমুদুর রহমানকে জেলে নেওয়ার ঘটনাকে খুব হালকা মনে করতেছি। ভাবতেছি এইটা জাস্ট একটা আইনি প্রক্রিয়া।
আমরা ভুল ভাবতেছি। মাহমুদুর রহমানের জেলে যাওয়ার ঘটনা বাংলাদেশের জন্য একটা অশনি সংকেত।
তবে মাহমুদুর রহমানের জেলে যাওয়ার ঘটনা অনেকগুলো বিষয় আমাদের সামনে খোলাসা করে।
এর মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি দেশে হাসিনা না থাকলেও হাসিনার খোদাদের ক্ষমতার হাত এখনো যথেষ্ট শক্তিশালি আছে। সেই সব খোদারা দিনকে দিন আরো শক্তিশালী হতে পারে। এর ফলে যে সমস্ত বুদ্ধিজীবীরা প্রকৃত অর্থে দেশের গণমানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন তাদের ভবিষ্যৎ খুব সহজ হবে না। বিশেষত যারা হাসিনার খোদাদের বিরুদ্ধে কাজ করবে তাদের পথ আগের মতই পিচ্ছিল হবে।
অর্থাৎ বুদ্ধিজীবীতার ক্ষেত্রে এখনো প্রথম আলো – ডেইলি স্টার মার্কা দুই নম্বরি কারবারই চলবে। আপনার প্রফেসর ইউনুসের সরকারে উপদেষ্টাদের পেছনে তাকালে দেখবেন এদের অনেকেই এই গোয়লেরই মাল।
এর মানে হচ্ছে গণ-অভ্যুৎত্থান বা গণবিপ্লব এইটা আস্তে আস্তে বেহাত হইতে শুরু করেছে। জুলাই বিপ্লব দেশের মানুষের মনে যে আশা-আকাঙ্খার জন্ম দিয়েছে তার সম্মুখে এই ঘটনা বিরাট একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন দিয়ে দিয়েছে। দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন থাকলে মাহমুদুর রহমান কখনো জেনে যাইতেন না।
মাহমুদুর রহমানরা ফ্যাসিবাদের সামনে নিউক্লিয়ার বোমার মত বিধ্বংসী। সুতরাং ফ্যাসিবাদের বান্দারা মাহমুদুর রহমানকে জেলে নিবো, পারলে ফাঁসিতে লটকাইবো এইটা স্বাভাবিক। কিন্তু মুক্ত গণতান্ত্রিক দেশে মাহমুদুর রহমানকে জেলে যাওয়ার মানে হইল আসলে দেশ মুক্ত ও গণতান্ত্রিক হয় নাই। এখনো অন্তত হাসিনার খোদারা এতটুকু শক্তিশালি যে ওরা মাহমুদুর রহমানকে জেলে নিতে পারে।
মাহমুদুর রহমানের এই জেলে যাওয়া মূলত বাংলাদেশেরই এক অর্থে জেলে যাওয়া।
আইনের কথা বলতেছেন, একই মামলায় শফিক রেহমানকে অব্যাহতি দেওয়া হইছে। কিন্তু মাহমুদুর রহমানকে দেওয়া হয় নাই। সুতরাং যত সহজে আমরা আইন আইন করতেছি, বিষয়টা ওরকম না।
ভবিষ্যতের বাংলাদেশের রাজনীতি ঠিক কোন পথে যাবে সেইটার একটা ইংগিত এই ঘটনার মাধ্যমে পাওয়া যায়।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৫০