somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যেভাবে হেফাজতিরা আল্লাহর উপর পুর্ণ বিশ্বাস ফিরে পেলেন...

১২ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চট্টগ্রামে গনজাগরন মঞ্চের সমাবেশ ঠেকিয়ে প্রথম লাইমলাইটে আসে হেফাজতে ইসলাম। গত ৬ই এপ্রিল হেফাজতে ইসলাম ঢাকায় লংমার্চে বড়ধরনের জনসমাগম করে তাদের বিশাল শক্তিমত্তা সম্পর্কে জানান দেয়। ভোটের হিসাব করে রাজনৈতিক দলগুলো হুমড়ি খেয়ে পড়ে হেফাজতের সেবায়।এর বাইরেও তারা অনেকের করুনা লাভ করে এই ভাবনা থেকে যে হেফাজতিরা সমাজের অবহেলিত অংশের প্রতিনিধিত্ব করে, তারা ধর্মকে ভালোবাসে, আর ভালোবাসে আল্লাহ আর তার নবীকে। এর বাইরে কিছু দুর্বল ঈমানের লোকও তাদের সমর্থন দেয় এইভেবে যে, এবার যদি ইসলামের কোন গতি হয়! কিন্তু সাধারন ধর্মপ্রান মানুষ প্রথম থেকেই বলে আসছেন- ইসলামের হেফাজত করবেন স্বয়ং আল্লাহ, মানুষকে ইসলামের হেফাজত করার দ্বায়িত্ব দেয়া হয়নি।

হেফাজতিরা কারও কথায় কর্নপাত না করে ইসলামের হেফাজতের দ্বায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নেয়, লংমার্চ শেষে সমাবেশে তারা ১৩ দফা দাবি তুলে এবং দাবি তুলেই ক্ষান্ত হয়নি, সেটা সমাজ মেনে নিচ্ছে কিনা বা এই দেশের উপযোগী কিনা তার তোয়াক্কা না করে পুরু রাষ্ট্রকেই চ্যালেন্জ করে বসে।এইদিকে সরকারও তাদেরকে বেশী ঘাটাঘাটি করার সাহস করেনি তাদের ধর্মীয় লেবাসের কারনে। তাদের লংমার্চের বিশাল অর্থের যোগানদাতা কে সে প্রশ্ন তোলার সাহসও কেও করেনি।তারপর বগুরা সমাবেশে আল্লামা শফীর হেলিকপ্টার যাত্রা এবং ঐ সমাবেশ থেকে ৫ই মের পর সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি মানুষ ভালভাবে নেয়নি।

৫ই মে অবরোধ শেষে শর্তসাপেক্ষে তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার অনুমতি পায়। তাদের সমাবেশে আসার কথা ছিল তজবি হাতে, কিন্তু তাদের হাতে ছিল লাঠিসোটা আর হাতবোমা। তারা কথা দিয়েছিল, তাদের দাবি জানিয়ে সন্ধ্যায় চলে যাবে মতিঝিলের ব্যাস্ততম এলাকা থেকে। কিন্তু সারাদিন তারা ঐ এলাকায় বিভিন্ন হকারদের দোকান-পাট এমনকি কোরআন , পার্টি-অফিস, গাড়ি, ব্যাংক, ভাংচুর জ্বালাও-পোড়াও করে গেছে। তাদের দানবীয় হিংসায় ঐ এলাকার অফিসফেরত লোকজন ভয়ে, আতংকে কুকড়ে যায়, পৈত্রিক-প্রান নিয়ে কোনভাবে পালিয়ে আসে, আবার অনেকে বেঘোড়ে প্রান হারায় । তারপরও প্রশাসন অপেক্ষা করছিল, সমাবেশ শেষ করে তারা সন্ধ্যায় চলে যাবে। কিন্তু সব শর্ত ভঙ্গ করে তারা ঘোষনা করে, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা একচুলও নড়বে না। ধর্মনীতি প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে তারা রাজনীতি তে জড়িয়ে পড়ে। তাদেরকে যৌথবাহিনী অপারেশন শুরুর আগমুহুর্ত পর্যন্ত অনুনয় বিনুনয় করে টলাতে পারেনি, তার প্রতিজ্ঞা করে এসেছে শহীদ হবে । কিন্তু অপারেশন শুরুর ১০ মিনিটের মধ্যে এই ভিডিওতে তাদের সব ঈমানী জোশ ফুড়িয়ে যায়।

আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম, ইসলামের হেফাজতকারী স্বয়ং আল্লাহ, কিন্তু তারা সেই দ্বায়িত্ব তাদের নিজেদের কাধে তুলে নেয়, কেউ রাজনৈতিক লোভের কারনে, কেউ অর্থনৈতিক লোভের কারনে । এখন তাদের এই জমায়েতকে কেন্দ্র করে যার ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার মাস্টারপ্ল্যান করে রেখেছে, পরদিন হয়তবা সেটা সরকারের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যেত, দেশে দীর্ঘকালীন অরাজকতা দেখা দিত, সেটার দায়ভার নিশ্চয়ই হেফাজতিরা নিত না।

তবে মানুষ মাত্রই ভুল করে, ধর্মকারীরাও ভুল করে। আশার কথা হচ্ছে হেফাজতিরা তাদের ভুল একটু একটু করে বুঝতে পারছেন এবং তাদের কারও কারও সেই ভুলের মাশুলও দিতে হয়েছে- এ যেন "একে পাপ করে, দশে পৈড়া মরে"। ইসলাম ধর্মের কোথাও কোরান বা নবীকে অবমাননার বিচার ভার মানুষের হাতে দেয়া হয়নি। আল্লামা শফী, তাদের ডাকা হরতাল প্রত্যাহার করে নিয়েছেন এবং বলেছেন- "জুলুম নাস্তিকের ভার আল্লাহর উপর দিলাম"। আল্লাহ পাকের হেদায়েত হোক কিংবা পুলিশের মাইরের ভয় হোক অবশেষে তারা সত্যটা উপলদ্ধি করতে পেরেছেন সেটাই বড় কথা।আশা রাখি তাদের এই বিশ্বাস দীর্ঘজীবি হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:৩৯
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রোড জ্যাম ইন ভিয়েতনাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৭



আমার ধারনা ছিল জটিল জ্যাম শুধু বাংলাদেশেই লাগে । কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল । ভিয়েতনামে এরকম জটিলতর জ্যাম নিত্য দিনের ঘটনা । ছবিটি খেয়াল করলে দেখবেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×