somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আনাফ ও ফ্যামিলি পেস্ট্রি কেক

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সকাল বেলা স্কুলে এসেই আনাফের মন খারাপ হয়ে গেলো যখন সে শুনলো সাকিব আর শ্রেয়া সৌলমেট হয়ে গেছে। শ্রেয়াকে আনাফ অনেক দিন থেকে খুব লাইক করে কিন্তু শ্রেয়া এত্ত মুডি যে ওর সাথে ঠিক মত কথাই বলে না। এরমাঝে সাকিব কিভাবে যে এত্ত ক্লোজ ফ্রেন্ডশিপ করে সৌলমেট হয়ে গেলো কিছু বুঝতে পারলো না আনাফ। মন খারাপ করে সে সেদিন টিফিনই খেলো না, মেন্টাল ম্যাথ বইটা ব্যাগে থাকার পরেও ক্লাসের সময় খুঁজে পেলোনা আর ছুটির আগ পর্যন্ত একটু পর পর শ্রেয়া আর সাকিবকে দেখতে থাকলো।

সেদিন বাসায় এসে আনাফের কিচ্ছু ভালো লাগছিলোনা। ডরেমনের কার্টুন, প্লে স্টেশনের খেলা, ফ্রিজে থাকা বিদেশি চকলেটের স্বাদ সবই তার কাছে কেমন বাজে বাজে লাগছিলো। তার মা অফিস থেকে এসে তাকে বারকয়েক জিজ্ঞেস করলেন তার কি হয়েছে কিন্তু সে কিছুই বলল না। রাতে সে কোন রকমে হোমওয়ার্ক শেষ করে, অল্প কিছু খাবার খেয়ে নিজের রুমে শুয়ে পড়লো।

প্রতিদিন রাতেই সে এমন করে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ে আর নানান কিছু ভাবতে থাকে... সেদিনও আনাফ ভাবছিল স্কুলে তার তেমন কোন বন্ধু নেই। কেন জানি সে কারো সাথে মিশতে পারেনা। সবাই কেমনে কেমনে জানি একে অন্যের ভালো বন্ধু হয়ে যায়, কিন্তু তাকে কেউই পছন্দ করে না। এইভাবে মটকা মেরে ঘুমিয়ে থাকতে থাকতে কত রাত হল আনাফ জানেনা। যখন তার চোখটা ঘুমে একটু লেগে এলো তখন সে শুনতে পেলো কেউ কলিং বেল বাজিয়েছে। নিশ্চয়ই আব্বু! আনাফ ঘুমের রেশ নিয়ে পাশ ফিরলো, ঠিক তখুনি তীক্ষ্ণ কন্ঠের কথায় তার ঘুমের সবটুকু রেশ কেটে গেলো...আম্মু তার আব্বুর সাথে কথা বলছে।
-আজও দেরি করে এসেছ?
- অফিসের পরে মিটিং ছিল, নতুন প্রজেক্টে হাত দিয়েছি সেই সব নিয়ে কথা বলতে গিয়ে রাত হল। সময়ের খেয়াল ছিলনা।

-আমি ফোন করেছি কয়বার বলতো? কয়টায় আসবে ফোন করে বলতে পারতে না? তুমিও জব কর আর আমিও করি। কই আমি তো এমন করিনা... আসলেই কি মিটিং এ ছিলে নাকি কই ছিলে কে জানে!!!
-বাজে কথা বলবে না লাবন্য...আনাফ শুনতে পাবে। আমি কোন কাজ করেছিলাম, কি কাজে ছিলাম তা তুমি বুঝবে না...

-আনাফ ঘুমাচ্ছে। তোমার ছেলে প্রতিদিন রাতে খেতে বসার সময় তোমার কথা জিজ্ঞেস করে। সকালে ও উঠার আগে তুমি কাজে চলে যাও আর রাতে ওর ঘুমানোর পরে তুমি আসো। ছুটির দিনেও তোমাকে পাওয়া যায় না...ওর প্যারেন্টস মিটিং এ আমি একাই যাই। একজন বাবা কি এমন জঘন্য ইরেস্পন্সিবল হয় নাকি তার সন্তানের প্রতি! সংসারের প্রতি! ছিঃ...
-লাবন্য...এই বছরের মধ্যে ফ্ল্যাট কিনতে হবে, সামনে প্রমোশনের ব্যাপার আছে, আমার দম ফেলার সময় নেই। এরমাঝে যদি তুমি এসব উলটা পালটা কথা বল, ইম্যাচিউর বিহেভ কর তাহলে কিভাবে হবে? বাসায় এসে প্রতিদিন এসব সস্তা ইমোশন দেখতে ভালো লাগে না আমার...

-সস্তা ইমোশন??? লাবন্য কয়েক মুহূর্তের জন্যে যেন কথা খুঁজে পায়না। স্ত্রী-সন্তান কে সময় দিতে বলা সস্তা ইমোশন? তোমার জন্যে আমি রাত জেগে বসে থাকি সেটাও সস্তা ইমোশন? রিয়াদ, আমিও জব করি, তোমার মত আমিও যদি এমনি করে প্রতিদিন রাত সাড়ে এগারোটায়, বারটায় বাসায় আসতাম তখন কি করতে?

-ওহ! ফর গড সেক চুপ কর। তোমার জায়গায় হলে আমি তোমার সমস্যাটা বুঝতে চেষ্টা করতাম, ধৈর্য ধরতাম আর আনাফ কে বলতাম- বেটা, তোর মা আজকাল ব্যস্ত কিন্তু আমি আছি তোর পাশে। একটু সবুর কর কিছু দিনের মাঝে আমরা তিন জন মিলে অনেক আনন্দ করবো।

-হাহ! তাই নাকি!!! এইসব বলা সহজ কিন্তু সহ্য করা কঠিন। তোমার মত এত গুছিয়ে মিথ্যে কথা আমি বলতে পারবো না...আমি তো আবার সস্তা ইমোশনের মানুষ। আমাকে দিয়ে এসব হয়না... হিসহিসিয়ে বলে লাবন্য-
আনাফ বুঝতে পারে তার বাবাও রেগে গেছে, কিছুক্ষণ পর সে শুয়ে থেকেই বুঝতে পারলো বাবা তার বালিশ নিয়ে ড্রইং রুমে ঘুমাতে চলে গেছে। আর মা বেড রুমে রেগে গিয়ে একা একা কথা বলছে আর বাবাকে বকাঝকা করছে। একসময় সেই বকা থেমে গেলো আর তার মায়ের কেমন যেন একটা কান্নার শব্দ আসতে থাকলো। আনাফের এত্ত মন খারাপ হল যে বলার মত না। তার মনে হল আম্মুর কাছে গিয়ে কান্না মুছিয়ে দেয়, কিন্তু সে তেমন কিছুই করলো না, গুটিসুটি মেরে বিছানায় শুয়ে থাকলো...


-সাকিব, একটা কথা বলি তোকে?
-নোপ, আই এম বিজি নাও...
-ওহ! ওকে...
- আরে আমি ফান করলাম, বল...
-আচ্ছা তুইকি শ্রেয়াকে বড় হয়ে বিয়ে করবি! ঝট করে জিজ্ঞেস করে বসে আনাফ।
-সাকিব ফ্যাকফ্যাক করে হেসে বলে-মে বি। কেন?
- না মানে ওতো খুব ভালো একটা মেয়ে। যদি ওকে তুই বিয়ে করিস তাহলে কখনো ঝগড়া করিস না বা রাত করে বাড়ি আসিস না।
-সাকিব একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে আনাফের দিকে। তারপর একটু গা ঘেঁসে বসে বলে- ইজ এনিথিং রং উইথ ইউ!!! এসব কেন বলতেসিস?

- একটা কথা বলি, তুই কাউকে বলিস না। একটু থেমে মাটির দিকে তাকিয়ে বলে আনাফ...- আমার আব্বু-আম্মুর মনে হয় ডিভোর্স হয়ে যাবে। আব্বু প্রতিদিন দেরি করে আসে আর ওরা ঝগড়া করে। ঝগড়ার শেষে আম্মু একা একা কাঁদে। তাই বললাম প্লিজ তুই শ্রেয়াকে কষ্ট দিস না।
-আমি শ্রেয়া কে কষ্ট দিবো না আর আয়রন ম্যানের প্রমিস আমি কাউকেই তোর আব্বু-আম্মুর ব্যাপারে বলবো না । সাকিব সিরিয়াস মুখ করে বলে।
আনাফ অল্প করে হাসে। সাকিব ছেলেটাকে এতদিন সে যতটা দুষ্ট ভেবেছিলো, আসলে সে ততটা দুষ্ট না।

কিন্তু এরপরের ক্লাস শেষ হবার আগেই পুরো ক্লাসের সবাই জেনে যায়, আনাফের আব্বু-আম্মু প্রতিদিন ঝগড়া করে, খুব জলদি তাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে তখন নাকি আনাফের এই স্কুলে পড়ার সামর্থ থাকবে না। সাকিব তার প্রমিস রাখেনি। ক্লাসের সবাই আনাফ কে নিয়ে ফিসফিস করে কথা বলতে থাকে। ওর বাবা মার ডিভোর্স হয়ে গেলে ওকে কি অনাথ আশ্রমে দিয়ে দেওয়া হবে নাকি তাও অনেকে কল্পনা করে ফেলে। আনাফের দু চোখ দিয়ে পানি চলে আসে। সাবিকটা এত্ত মিথ্যুক কেন? কেন সে এসব সবাইকে বলতে গেলো। ও বেঞ্চে কাঠ হয়ে বসে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকে, শ্রেয়া ওর দিকে কেমন জানি করুনা নিয়ে তাকিয়ে আছে, সাকিব ওর পাশে বসে ফ্যাকফ্যাক করে হাসছে। আনাফের মরে যেতে ইচ্ছে করছে। শ্রেয়ার সামনে সে কিছুতেই কাঁদবে না, তাহলে সবাই তাকে আরো ইন্সাল্ট করবে আর বোল্ড করবে। আনাফ দাঁতে দাঁত চেপে বসে থাকে। ওর মনের ভিতরটা পুড়ে ছারখার হতে থাকে।

-এই নে...ছবিটা দেখ।

আনাফ তাকিয়ে দেখে তাদের ক্লাসের সবচেয়ে কালো আর অহংকারী মেয়ে আনিশা তার পাশে এসে বসে একটা কাগজ এগিয়ে দিয়েছে। আনিশা অনেকদিন মালয়শিয়াতে ছিল, তারপর ওর বাবার বদলির কারণে ঢাকায় এসে তাদের স্কুলে ভর্তি হয়েছে। অনেক মুডি মেয়ে, কারোর সাথেই কথা বলে না আর অনেক অনেক পড়ালেখা করে আর গল্পের বই পড়ে। সেই মেয়ে তার পাশে এসে বসেছে তা দেখে আনাফ অন্য সময় হলে অনেক সারপ্রাইজড হত। কিন্তু এখন তার মন এতই খারাপ যে সে কোন আগ্রহই বোধ করলো না। তারপরেও ভদ্রতা সুলভভাবে সে তাকিয়ে দেখে কাগজে বিশাল বড় একটা পেস্ট্রি কেকের ছবি আঁকা।

এইবার সে একটু অবাক হয়েই বলে-কেকের পিক দেখে আমি কি করবো?
-আচ্ছা বলতো, এমন একটা কেক বক্সে না রেখে ওপেন করে রাখলে কি হবে?

-আনাফ ঢোক গিলে বলল। মাছি আর মশা বসবে। এই মেয়েটাকে সে অনেক ভয় পায়। সে কি এমন করলো যে তাকে এসব কথার উত্তর দিতে হচ্ছে তা সে ভেবে পেলোনা।

-ওয়েল, একজাক্টলি এইটাই হবে। সো তুই যে তোর আব্বু-আম্মুর কথাটা সাকিবকে বলেছিস তার মানে হল তুই তোর ফ্যামিলির পেস্ট্রি কেকটাকে ওপেন করেসিস। তাই ক্লাসের সবাই এখন মশা, মাছি হয়ে ভনভন করছে। বুঝেসিস? নেক্সটে এমন করে কেক ওপেন করবি না ইডিয়ট।

আনাফ হা করে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ। সে কখনো কল্পনাও করেনি একটা কেকের ছবির এমন অর্থ থাকতে পারে। তার কান্না কান্না ভাব দূর হয়ে গেলো। সে চোখ বড় বড় করে বলল-আচ্ছা করবো না...

আনিশা যেমন হুট করে আনাফের পাশে বসেছিল ঠিক তেমনি হুট করেই সে নিজের ডেস্কে এমনভাবে চলে গেলো যেন কিছু হয়নি। আনাফ পেস্ট্রি কেকের ছবিটা যত্ন করে রেখে দিলো।


সেইদিন দুপুরে বাসায় এসেই আনাফ পেস্ট্রি কেকের পিকটা তার রিডিং টেবিলের সামনে ওয়ালে গাম দিয়ে আটকে দিলো। লাঞ্চ করার পরে সে শুয়ে শুয়ে কেকের পিকটা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে গেলো। ঘুমের মাঝে দেখলো শ্রেয়া বিশাল বড় একটা পেস্ট্রি কেকের জামা পরে একটা পার্টিতে যাচ্ছে। আনিশা একটা ডাইনোসরের মুখোস পরে ওকে ভয় দেখাচ্ছে।

এমন সময় আব্বু কোথেকে এসে বলছে যে আম্মুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না আর আনাফ পাগলের মত দৌড়ে দৌড়ে আম্মু কে খুঁজে বেড়াচ্ছে।
আম্মু...আম্মু...আম্মু...আনাফ চিৎকার করতে চাইছে তাও তার গলা দিয়ে কোন স্বর বের হচ্ছে না...আনাফ ছটফট করছে, কাঁদছে কিন্তু তাও কথা বলতে পারছে না...

ঝট করে উঠে বসল আনাফ। গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। বুকের ভেতরটা ধক ধক করছে তার। রুম অন্ধকার অর্থাৎ সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে পড়লো ও, তারপর এক ছুটে দেখতে গেলো আম্মু অফিস থেকে এসেছে কিনা! আম্মুর রুম খালি। রান্নাঘরে শুধু বুয়ার কাজের খুটখাট শব্দ হচ্ছে। আম্মু এখনো অফিস থেকে আসেনি। আনাফের ভিতরটা ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে। নানুমা বলেন- মানুষের অনেক স্বপ্নই নাকি সত্যি হয়ে যায়। আল্লাহ না করুক এই স্বপ্নটা সত্যি হয়ে যাবে না তো! আম্মু কেন বাসায় আসছে না? আনাফ কেমন যেন দিশেহারা হয়ে যায়। ড্রয়িং রুমের এক কোনার সোফায় সে গুটিসুটি মেরে বসে থাকে। তারপর এক সময় নিজের অজান্তেই সে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে।

লাবণ্য যখন অফিস করে বাসায় ফিরে ঘড়িতে সময় তখন প্রায় সাতটা। বাসায় এসে সে আবিস্কার করে তার রাজপুত্রটি আজ তাকে ছুটে এসে জড়িয়ে ধরেনি। সে কি নাস্তা নিয়ে এসেছে তা জানার জন্যে কেউ তার পাশে আঁকুপাঁকু করছে না। ছ্যাঁত করে উঠে ওর বুকের ভেতরটা...বেশ কিছুক্ষণ পর আনাফকে আবিস্কার করে ড্রয়িং রুমের কোনার এক সোফায় সে গুটিসুটি মেরে বসে আছে। লাবণ্য ছুটে যেয়ে আনাফকে ধরে দেখে তার ৯ বছরের বাচ্চাটার দু গালে শুকনো কান্নার দাগ। সাথে সাথে সে আনাফকে ঝাপটে ধরে প্রশ্ন করে তার কি হয়েছে? লাবণ্য মনে করে হয়ত স্কুলে কোন কিছু হয়েছে। বেশ অনেকক্ষণ পরে এটাসেটা নিয়ে কথা বলে লাবণ্য জানতে পারে আনাফের কান্না ও ভয়ের কারণ। নিজের সন্তানের জন্যে তার মনটা হু হু করে কেঁদে উঠে। সে আনাফকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে আর বলে- বাবা, এই যে আমি। আমি কোথাও যাইনি। আজকে তোর জন্যে প্যাস্টেল কালার আনতে যেয়েই বাসায় ফিরতে দেরি হয়ে গেলো। আনাফ প্রায় ফিসফিস করে বলে- আম্মু তুমি আমাদের ছেড়ে কোথাও চলে যাবে নাতো!!! লাবন্যর চোখ ভিজে আসে...সে আনাফকে বুকে জড়িয়ে বলে- না রে বাবা, কোনদিনও যাব না। কোত্থাও যাব না।


লাবন্য তার ছেলেকে বুকে নিয়ে সেইখানেই বসে থাকে। এই ব্যস্ত জীবন, চাকরী, কাজ, সম্মানের কি মূল্য যদি একজন মা প্রয়োজনের সময় তার ছোট্ট সন্তানের পাশেই না থাকতে পারে? লাবন্যর চোখ দিয়ে টপটপ করে কান্না ঝরে পড়ে। অল্প শিক্ষিত থাকায় ও মূলত গৃহিণী থাকায় সারা জীবন সে তার মাকে আব্বার কাছে খোঁটা শুনতে দেখেছে। তার মায়ের জীবনের অবমাননা আর কষ্টই ছিলো লাবন্য শিক্ষা জীবনের অনুপ্রেরণা। সে এত পড়ালেখা করে গৃহিণী হতে চায়নি। মূলত বহু কাঠখড় পুড়িয়ে সে এখন অনেক ভালো পোষ্টে কাজ করছে। তবুও প্রতিনিয়ত তাকে তার কাজের ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে যেতে হয়। অফিসের ডেস্কে কোন ছেলে যদি নিজের ফ্যামিলি ফটো রাখে তো সবাই বলবে- আহা! ছেলেটা কত ভালো আর পরিবারভক্ত। আর মেয়েদের ডেস্কে এমন ফটো থাকলে শুনতে হবে-কর্পোরেট জীবনেও সংসার মেয়েমানুষের পিছু ছাড়ে না। এসব বিভেদ দেখতে দেখতে এখন লাবণ্য ক্লান্ত। তার উপর রিয়াদের সংসারের প্রতি খামখেয়ালিপনা আজকাল ওকে বড্ড পীড়া দেয়। আনাফটা একা একাই বড় হচ্ছে, যত কিছুই হোকনা কেন মা-বাবার অভাব কখনোই কেউ পুরণ করতে পারে না। যেই সময় ৯ বছরের একটা ছেলের কাছের বন্ধু হবে তার বাবা-মা সেই সময় কিনা বাবুগুলো ডরেমনের মত কার্টুনগুলোতে নিজের সঙ্গী খুঁজে পায়। কোন মানে হয় এই উন্নত জীবনের, এই সব পার্থিব ঠুনকো প্রাপ্তির!!! নাহ, কোনই মানে হয় না। লাবন্যর ক্ষুধা, তৃষ্ণা, ক্লান্তি সব যেন মরে যায়, আনাফকে জড়িয়ে ধরে সে ঠায় বসে থাকে। আনাফও ছোট্ট বাচ্চার মত লাবন্যর গা ঘেষে তাকে শক্ত করে ধরে রাখে। আম্মুকে সে কোথাও হারিয়ে যেতে দিবে না। কিছুতেই না...


রাত ১১টা।

রিয়াদ বাসায় ঢুকেই বুঝতে পারে, বাসার পরিবেশ থমথমে। লাবন্য ঘর অন্ধকার করে বসে আছে। রিয়াদ একটু অবাকই হয়- কি ব্যাপার, রুম অন্ধকার করে বসে আছ কেন?

-রিয়াদ তোমার সাথে আমার খুব জরুরী কিছু কথা আছে।
-৩০ মিনিট টাইম দাও। আমি ফ্রেশ হয়ে ডিনার করি তারপর কথা বলবো।
- ফর ইউর কাইন্ড ইনফরমেশন, ৩০ মিনিট অপেক্ষা করার মত সময় আমার কাছে নেই। ঠান্ডা গলায় বলে লাবন্য।

মনে মনে প্রমাদ গুনে রিয়াদ। তারপর লাইট জ্বালিয়ে ধপ করে বসে পড়ে বিছানার উপর।–আচ্ছা বল কি বলবে...

অনেকক্ষণ অন্ধকারে থাকার কারনে উজ্জ্বল আলোতে চোখ কুঁচকায় লাবন্য আর চিৎকার করে উঠে-বাতি নেভাও। এন্ড ক্লোজ দ্য ডোর রাইট নাও...রিয়াদ বিস্মিত হয়ে দেখে লাবন্য দু চোখ লাল হয়ে আছে। বোঝাই যাচ্ছে অনেক কান্নাকাটি করেছে সে। রিয়াদ দ্রুত বাতি নিভিয়ে ঘরের দরজা লাগিয়ে দেয়। পাশের বাড়ি থেকে লালচে আলো জানালা দিয়ে অন্ধকার ঘরে ঢুকে পড়ছে। সেই আলোয় লাবন্য কে দেখতে কেমন যেন হিংস্র লাগছে।

রিয়াদ কিছু বলার চেষ্টা করার আগেই লাবন্য প্রচন্ড ক্রোধ নিয়ে বলে-– আজকে বাসায় এসে দেখি বাচ্চাটা দুঃস্বপ্ন দেখে ভয়ে একা একা কাঁদছে। ওর স্কুলের মিস সন্ধ্যায় আমাকে ফোন করে বলেছেন- আনাফ সারাক্ষণ ডিপ্রেসানে ভুগে, ক্লাসে ওর কোন বন্ধু নাই। আমাদের দুজনের ঝগড়া দেখে আনাফ নাকি ওর কোন ক্লাসমেটকে বলেছে আমাদের ডিভোর্স হয়ে যাবে। এমন বাবা মা হয়ে কি লাভ বলো? যদি নিজের সন্তানের পাশেই না থাকতে পারি! তুমি তো খুব ব্যস্ত মানুষ, আমাদের জন্যে, আমাদের সস্তা ইমোশন দেখার জন্যে তোমার কাছে তো সময় নেই, তাই আমি ঠিক করেছি এইভাবে আমি আনাফকে আর আমাদের সম্পর্কের দুর্যোগ দেখাব না। আমি বাচ্চাটাকে আর একা রাখবো না। আমি কাল থেকে আব্বার বাসায় উঠে যাব। আনাফ আব্বা আর মার কাছে থাকবে। তুমি তো মাসে মাসে টাকা দেওয়া ছাড়া অন্য কোন দায়িত্ব পালন করোনা। তাই তখনো তাই করো। আর যদি ইচ্ছে না থাকে জোর করবো না। মাঝে মাঝে শুধু আনাফ কে এসে দেখে যেও। ব্যস তাতেই হবে। তোমার এই বাসা, তোমার স্বাধীনতা কিছু আমি হরণ করবো না। এক নিঃশ্বাসে বলে যায় লাবণ্য।

রিয়াদ হড়বড় করে বলে উঠে.. তুমি এত সেন্টিমেন্টাল হচ্ছ কেন? আনাফের পাশে আমরা দুজনেই থাকবো। ও আমার কাছে গল্পের বই চেয়েছিলো। এই যে আমি আজ ওর জন্যে সেইটা এনেছি। আগামী মাস থেকে কাজের চাপটা কমে যাবে তখন তোমাদের সময় দিতে পারবো। ততদিন পর্যন্ত তুমি একটু ম্যানেজ কর প্লিজ।

-না! প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্ত তোমার সাথে ঝগড়া করে করে আমি ক্লান্ত। নিজেকে আমার অনেক নিচু শ্রেণীর একটা প্রাণী মনে হয়। যার জীবনে কাজ শুধু তোমার সাথে ঝগড়া করা। এই পরিবেশে আমি আমার আনাফকে বড় করতে চাই না। আমি সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি আমি তোমার সাথে থাকবো না। আর আজকে আনাফ যখন কাদঁছিল ওর কান্না দেখে, আমি তোমার অফিসে ফোন করেছিলাম। তুমি আজকে রাত ১১টা পর্যন্ত অফিসে ছিলে না রিয়াদ। তুমি ছিলে শরীফ সাহেবের বাসার পার্টিতে। তাই আমার তোমাকে আর কিচ্ছু বলার নাই...

-লাবন্য প্লিজ বুঝতে চেষ্টা কর, আমি পার্টিতে গিয়েছিলাম কারণ সেই পার্টিতে আজ অনেক জরুরী ক্লায়েন্ট এসেছিলেন। আর তুমি তো জানোই...
-ব্যস। আর কিছুই জানতে চাইনা... তুমি আর আমি একসাথে থাকব না। এটাই ফাইনাল। আমি কাল সত্যি সত্যি আনাফকে নিয়ে চলে যাব... যাও তুমি রোজকার মত তোমার বালিশ নাও আর ড্রয়িং রুমে গিয়ে নির্বিকারভাবে টিভি দেখো। কাল থেকে তোমাকে আর এভাবে ঘুমাতে হবে না। আর তোমার লোকভুলানো যে ট্রিক্স আছে সেইটা আমার সাথে খাটিয়ো না... বলেই লাবণ্য খাট থেকে আনাফের জন্যে রিয়াদের আনা গল্পের বইটা ছুঁড়ে মাটিতে ফেলে দিলো...

রিয়াদ স্তব্ধ হয়ে গেলো...তারপর কিছুই না বলে ঘরের দরজা খুলে কাঁধে অফিসের ব্যাগটা তুলে নিয়ে ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে বলল-আমাকে ছাড়াই যখন থাকতে চাও। তবে এখানেই থাক। আমি চলে যাচ্ছি। তবুও দয়া করে আমাদের সমস্যা বা দূরত্বগুলো তোমার পরিবার বা মানুষের কাছে এত নগ্নভাবে তুলে ধরো না...দিন শেষে কেউ থাকবে না লাবন্য...সবাই শুধু অন্যের কষ্টের তামাশা দেখে আর কিছুই না...


দিন তিনেক পর।
টিফিন পিরিয়ডে আনিশা ধুম করে এসে আনাফের পাশে বসে একটা কাগজ ধরে বলল- আচ্ছা দেখতো এই কি? আনাফ ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে দেখলো- লাল একটা উড়ন্ত বেলুনের ছবি। সে একটু ঢোক গিলে বলল- বেলুনের পিক।

-আচ্ছা এইবার বল কেউ যদি এই বেলুনটায় একটা পিন দিয়ে খোঁচা মারে দেন কি হবে?

-বেলুনটা চুপসে ম্যারাম্যারা হয়ে যাবে। একদম পুরান দুইটাকার নোটের মত। আনাফ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলে।

--ওয়েল, একজাক্টলি এইটাই হবে। এখন তুই বুঝতে পারছিস যে তোকে দেখতে একটা চুপসানো বেলুন বা দুই টাকার ম্যারাম্যারা নোটের মতই লাগছে। ডাম্বু, হোয়াটস রং উইথ ইউ? আনিশা চোখ পাকিয়ে বলে।
আনাফ অন্যদিকে তাকিয়ে বলে, আমি আর কারো কাছে আমার ফ্যামিলির পেস্ট্রি কেক ওপেন করবো না। সো ডোন্ট আস্ক মি।

-মাথা ভেঙ্গে ফেলবো তোর। আমার শেখানো কথা আমাকেই বলিস? ফ্যামিলির যে কোন প্রব আমাকে বলতে পারিস। আমি কাউকেই বলবো না। আমার ফ্যামিলিতেও অনেক বড় সড় গ্যাঞ্জাম আছে, সো আই নো দ্য সিচুয়েশান।

আনাফ বলবে না বলবে না ভেবেও গরগর করে আনিশাকে সব বলে ফেললো। তিন দিন আগে সকালে উঠে সে বুয়ার কাছ থেকে জেনেছে, আব্বু রাগ করে বাসা ছেড়ে চলে গেছে। গত তিন দিন থেকে আব্বু বাসায় আসেনা। সেদিন সকালে সে আব্বু-আম্মুর রুমের মাটিতে হ্যারি পটার সিরিজের বই পেয়েছে, যেই বইটা সে অনেক আগে আব্বুর কাছে চেয়েছিল, তারপর নিজেই ভুলে গিয়েছে। আব্বু এতদিন পরেও বইটা মনে করে কিনে এনেছে। তার আব্বুর জন্যে এখন খুব খারাপ লাগছে। কিছুই ভালো লাগছে না...

-তোর আম্মু তোর আব্বু কে ফোন করে নাই? আনিশা অবাক হয়ে প্রশ্ন করে।
-না করে নাই। করবেও না। তাদের দুইজনেরই অনেক রাগ। আব্বুকে আমি অনেক মিস করছি, তাই গত তিন দিন ধরে আমি সারাক্ষণ তার দেওয়া বইটা আমার সাথে রাখছি। দেখ আব্বু আমাকে বইয়ের মধ্যে কি লিখে দিয়েছে। আনাফ স্কুল ব্যাগ থেকে গল্পের বইটা বের করে। তাতে লেখা-
আদরের পাপাচি,

আপনার জন্যে এই পৃথিবীর সব সুখ বিন্দু বিন্দু করে জমাচ্ছি আমি। নিজেকে নিঃস্ব করে আপনার কাছে আমি সব উজাড় করে দিব...
আচ্ছা, আপনি কি জানেন আপনার আব্বাজান আপনাকে কতটা ভালোবাসে?
জ্বি, আমি আপনাকে এতই ভালবাসি যে পৃথিবীর কোন বাবাই তার সন্তানকে এত ভালবাসতে পারবে না।
কিন্তু মজার ব্যাপার কি জানেন? আপনার আম্মু আপনাকে আমার চেয়েও একটু বেশি ভালোবাসে...হা হা হা...

ইতি
আব্বু...


আনিশা আনাফের দিকে তাকিয়ে দেখে আনাফের চোখ লেখাগুলোতে স্থির হয়ে আছে, চোখে কান্না জমে যাচ্ছে...আনিশা খপ করে আনাফের হাত ধরে বলে। খবরদার কাঁদবি না। মাথা ভেঙ্গে ফেলবো। চল, এর চেয়ে বরং একটা বুদ্ধি বের করি যাতে তোর আব্বু ফিরে আসে।

আনাফ ছলছল চোখে বলল- কি বুদ্ধি? আনিশা ওর দুই ঝুটি নাচিয়ে বলল- আইডিয়াটা হল, তুই তোর আব্বুকে স্কুলের ফোন থেকে ফোন করবি। তারপর তোর মনে যত কথা আছে বলে দিবি। দরকার হলে তার সামনে ভ্যা করে কেঁদে দিবি। দেখবি তার মন কিভাবে গলে যায়। ফারহানা ম্যামকে বললে সে নিশ্চয়ই আমাদের হেল্প করবেন আর তোকে ফোন করতে দিবেন। চল এখুনি চল।

আনাফ ভয়ে ভয়ে বলল- কিন্তু আব্বু কি ফিরে আসবে? আর আম্মু যদি জানে আমি আব্বুর মোবাইলে ফোন করেছি তাহলে সে অনেক রাগ করবে...

-আনিশা সাথে সাথেই হিংস্র চেহারা করে বলল- তুই কি ফোন করবি নাকি আমি সাকিবের মত সবার কাছে তোর এই ফ্যামিলি পেস্ট্রি কেকের ঢাকনা খুলে দিবো???

-আচ্ছা...আচ্ছা... ফোন করবো...আনাফ দিশেহারা হয়ে বলে উঠে।

-গুড। চ্যালেঞ্জ করছি তোর আব্বু আজকে রাতেই ফিরে আসবে। আর যদি এমন হয় তাহলে তুই আগামী এক সপ্তাহ আমার কথা মত চলবি। ডান!

আনাফ মাথা কাত করে বলে উঠে-ডান।

শেষ কথাঃ-

সেই চ্যালেঞ্জে আনিশা হেরে গিয়েছিল। কারন আনাফকে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়নি। আনাফের ফোন পাওয়া মাত্রই রিয়াদ আনাফের স্কুলে চলে এসেছিল তারপর তাকে নিয়ে একগাদা খাবার কিনে চলে গিয়েছিল সোজা বাসায়...সেদিন বাসার ফিরে লাবন্যর চেহারা দেখার মত হয়েছিল। আনাফ জীবনে প্রথম তার আম্মুকে এত অদ্ভুত চেহারায় দেখেছিল। এই হাসছে আবার এই আব্বু আর আনাফকে ধরে কাঁদছে...

আনাফ আর আনিশার অনেক ভালো ফ্রেন্ডশিপ হয়ে গিয়েছে। আনাফও আজকাল আনিশার মত গল্পের বই পড়ে, আর্ট এটাক শো দেখে ঘরের অব্যবহৃত জিনিষ কাজে লাগিয়ে নানারকম জিনিস বানায়। স্কুলে অনেকেই আজকাল আনাফ আর আনিশার ফ্রেন্ডশিপকে হিংসা করে। কিন্তু তাতে কি? আনাফ জেনে গেছে সুপার গ্লুয়ের মত আটকে থাকা “আনিশা” নামের এই ফ্রেন্ডটা তাকে কখনই খারাপ থাকতে দিবে না। কখনোই না...
১৬টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×