প্রথমেই ঘোষণাঃ
সকল নাগরিক বাদ্ধতামুলক ভাবে ৫ অয়াক্ত নামাজ পরবে। যদি নামাজের সময় কাউকে অন্য কোন কাজে নিয়োজিত থাকতে দেখা যায়, তাকে প্রহার করা হবে।
সকল পুরুষ দাড়ি রাখবে। দাড়ির সঠিক দৈর্ঘ্য হল থুত্নির নিচে এক মুষ্টি পরিমান সর্বনিম্ন। যে ইহা মানবে না, তাকে প্রহার করা হবে।
সকল বালক পাগড়ী পরবে। ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত বালকগন মাথায় কাল পাগড়ী পরবে আর বড়রা পরবে সাদা পাগড়ি। সকল বালক ইসলামি পোশাক পরবে। জামার বোতাম অবশ্যই লাগানো থাকবে।
গান গাওয়া নিশিদ্ধ।
নাচ নিশিদ্ধ।
তাশ, দাবা, জুয়া, ঘুরি উরানো নিশিদ্ধ।
বই লেখা, সিনেমা দেখা, ছবি আঁকা নিশিদ্ধ।
কেউ পোষা পাখি রাখলে তাকে প্রহার করা হবে এবং পাখিকে হত্যা করা হবে।
যদি কেউ চুরি করে তবে তার হাত কব্জি পর্যন্ত কেটে নেয়া হবে। সে যদি আবারও চুরি করে তবে তার পা কেটে নেয়া হবে।
যদি তুমি অমুসলিম হউ তবে এমন জায়গায় এবাদত করতে পারবে না যেখানে একজন মুসলিম এর দৃষ্টি যায়। যদি তা কর তবে তুমাকে প্রহার করার পর কারাগারে পাঠানো হবে। আর যদি কোন অমুসলিম কোন মুসলমানকে ধর্মান্তরিত করার চেষ্টা করে তবে হত্যা করা হবে।
মহিলারা লক্ষ্য করুনঃ
আপনারা সর্বদা অন্দরে থাকবেন। মহিলাদের রাস্তায় ঘুরাফিরা করা উচিত নয়। আপনি যদি বাহিরে যান তবে আপনার সাথে অবশ্যই একজন আত্নিয় পুরুষ (mahram) থাকতে হবে। যদি কোন মহিলাকে একা রাস্তায় পাওয়া যায় তাকে ওই জায়গায় প্রহার করার পর বাড়িতে ফেরত পাঠানো হবে।
কোন অবস্থাতেই আপনি আপনার মুখমণ্ডল প্রদর্শন করতে পারবেন না। বুরখা দ্বারা আবৃত হয়ে বাহিরে যাবেন। অন্যথায় কঠিনভাবে প্রহার করা হবে।
প্রশাধন সামগ্রী নিশিদ্ধ।
গয়না নিশিদ্ধ।
আকর্ষণীয় পোশাক পরা নিশিদ্ধ।
পুরুষের সাথে আগ বাড়িয়ে কথা বলা নিশিদ্ধ, যদি না কেউ আপনার সাথে আগে কথা বলে।
কোন পুরুষের চোঁখের দিকে তাকানো নিশিদ্ধ।
জনসম্মুখে হাসা নিশিদ্ধ। অমান্য করলে প্রহার করা হবে।
নখে রঙ লাগানো নিশিদ্ধ। লাগালে একটি আঙ্গুল কেটে নেয়া হবে।
বালিকাদের জন্য স্কুলে যাওয়া নিশিদ্ধ। অতিশিঘ্রই সকল বালিকা বিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দেয়া হবে।
কোন মহিলা বাড়ির বাহিরে কাজ করতে পারবে না।
যদি কেউ ব্যভিচারে লিপ্ত হয়, তাকে পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হবে।
(শোন, ভালো করে শোন এবং পালন কর।
আল্লাহু আকবার)
সুত্রঃ
১। A Thousand Splendid Suns- Khaled Hosseini, Page no. 247-249.
২। http://www.rawa.org/rules.htm
এটা কোন কাল্পনিক ঘোষণামালা নয়। এটা কোন সুদুর অতিতের গল্প নয়। ১৯৯৬ সালের সেপ্টেম্বর এর শেষের দিকে আফগানিস্তানে যেদিন তালিবান শাসন শুরু হয়, সেদিনই এই ঘোষণা রাস্তায় রাস্তায়, মাইকে, রেডিওতে (Voice of sharia), মসজিদের মাইক থেকে এবং হ্যান্ডবিলের মাধ্যমে প্রচার করা হয় এবং ইঙ্গ মার্কিন সেনা বাহিনী কর্তৃক তালিবান উৎখাতের পূর্ব পর্যন্ত শুধু বলবত রাখা হয় তাই নয় বরং তা আরও পরিবর্ধন ও জোরদার করা হয়। মানুষ পলিথিনে ভরে টেলিভিশন মাটির নিচে পুঁতে রাখে। আরও অনেক কথা যা বললে লেখার কলেবর অনেক দীর্ঘ হয়ে যাবে।
এইবার বাংলাদেশের রাজপথে কোন এক ধর্মীয় রাজনৈতিক গোষ্ঠীর গগন বিদারী শ্লোগানঃ
‘ আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান।’
আমার প্রিয় মাতৃভূমির ক্রান্তিলগ্নে, সাম্প্রতিক ধর্মীয় দলগুলোর বাড়াবারি, মুল ঘরানার রাজনৈতিক দলগুলোর দুর্নীতিতে আপাদমস্তক ডুবে যাওয়া এবং উপরে একটি typical ইস্লামি রাষ্ট্রের খন্ডচিত্র বারবার আমার সামনে যে প্রশ্ন গুলো নিয়ে আসে, তা পাঠকদের সাথে শেয়ার করে আপাতত শেষ করব।
১। একটি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল এর স্বরুপ (Features) কি? গতানুগতিক রাজনৈতিক দল হতে তারা কতটুকু আলাদা? পরিপ্রেক্ষিত বাংলাদেশঃ কোন ধর্মীয় দলের হাতে পুরুপুরি ক্ষমতা চলে যাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? এবং তা কত সময় পর সম্ভব?
২। সাধারন মানুষ কি ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল কে ক্ষমতায় দেখতে চায়? আমাদের চোঁখে একটি ইসলামি রাষ্ট্রের ছবি কিভাবে ধরা দেয়? আদর্শ ইসলামি রাষ্ট্রের সাথে কি সেই অঙ্কিত ছবির কোন ফারাক আছে?
৩। আমাদের সন্তান অথবা নাতি নাত্নি কেমন বাংলাদেশে বাস করবে, সেটা নির্ধারণ করায় আমাদের ভুমিকা কতটুকু? আগামিতে কাকে ভোট দেব? কেন দেব? নাকি না ভোট দেব?
পাঠক, আমি আমার মত করে প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেবার চেষ্টা করবো পৃথক ব্লগে। আপনাদের মতামত জানালে ভালো লাগবে।