মধ্যবিত্তদের নিয়ে লেখা গল্পগুলো আলোড়ন সৃষ্টি করে ফেলে। এই বিষয়টা নিয়ে লেখকরা লিখেনও বেশি। হ্যাঁ, মধ্যবিত্ত পরিবারের কিছু কিছু কষ্ট আছে যা একজন বিত্তবান পরিবারের কারোরই থাকে না। আবার সে কষ্টের চেয়ে বহুগুণ কষ্ট করতে হয় নিম্নবিত্ত বা গরিবদের। কিন্তু লেখকদের লেখায় বুঝা যায়, ওরা কষ্টগুলো উপলব্ধি করতে পারে না বা তারা এগুলোর সাথে মানিয়ে নিয়েছে। হ্যাঁ, আমি স্বীকার করি যে, শুধুমাত্র মাত্র কয়েকটা যন্ত্রণা আছে যা কেবলি মধ্যবিত্ত পরিবারের থাকে।
তাই বলে তারা গরিব, নিম্নবিত্তদের চেয়ে দুঃখী হয়ে গেল?
এদের নিয়ে ছবি বানালে, নাটক বানালে হিট হয়। পরিচালক, প্রযোজক, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিবর্গের মোটা অংকের টাকা হয়, তাই তারা এটা নিয়ে ছবি বানায়, নাটক বানায়। আবেগী কিছু দৃশ্য থাকে যা দেখে দর্শকরা চোখের জলে মোবাইলের স্ক্রিন ভাসিয়ে ফেলে, ভিজিয়ে ফেলে বালিস।
লেখকদের কথা অবশ্য ভিন্ন। যারা সত্যিকারের সাহিত্যপ্রেমী তারা মানুষের জীবন জীবিকা নিয়ে লিখেন। সত্যিকারের সাহিত্যপ্রেমীরা তাঁদের লেখনী দিয়ে মানুষের কাছে বার্তা পৌছে দিতে চায়। যাতে করে মানুষেরা কল্যাণকর জিবনের সন্ধান পেতে পারে। হতে পারে মানুষের মতো মানুষ।
আর সিনেমা নাটক নির্মাতারা কি করে?
সস্তা আবেগী গল্প দিয়ে মানুষজনদের শুধু কাঁদাতেই জানে। জানে না দর্শকের কাছে মেসেজ পাঠাতে, জানে না মানুষের মতো মানুষ হবার প্রেরণা যোগাতে।
রাস্তার রাস্তায় বেড়ে উঠা নিষ্পাপ শিশুদের ক্ষুধার জ্বালা নিয়ে তারা ছবি বানাবে না নাটক বানাবে না। কারণ এগুলো দর্শক গিলবে না। যার ধরুন তাঁদের আয় উপার্জন হবে না।
একটা শিশুর ক্ষুধার জ্বালার চেয়েও কি মধ্যবিত্ত পরিবারের বেশি কষ্ট?
হাঁড় কাঁপা শীতে আমি আপনি যখন লেপ কম্বলের উষ্ণতায় শীত কি বুঝিনা তখন খোলা আকাশের নীচে ফুটপাতে ঘুমুতে হয় যাদের, যারা একটুখানি উষ্ণতার জন্য ভিখ মাগে দুয়ারে দুয়ারে তাঁদের থেকেও কি বেশি কষ্ট মধ্যবিত্ত পরিবারের?
প্রশ্ন রেখে গেলাম। উত্তর যার যার নিজের কাছে।
আমি স্বীকার করি, বারবার স্বীকার করি, মমধ্যবিত্ত পরিবারের কিছু গোপন কষ্ট থাকে যা প্রকাশ করা কখনো সম্ভব না অথচ যা বুকে নিয়ে মানুষের সামনে অভিনয় করতে হয় সবচেয়ে সুখী মানুষের মতো।
কিন্তু তাই বলে এটাকে এত হাইলাইটস করার কিছু নেই। হাইলাইটস করতে হবে নিষ্পাপ শিশুদের ক্ষুধার জ্বালা, খোলা আকাশের নীচে ঘুমানো মানুষজনদের যাতে করে মানুষেরা পরোপকারে এগিয়ে আসে। আর নিজেকে সবচেয়ে দুঃখী ভাবা লোকগুলো যেন বুঝে যে না তারা আসলে সুখে আছে, শান্তিতে আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ২:২৩