ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত ২.১০। ঘুম ভাঙ্গলো সুরেলা পাখির গানে। আমার বিছানার পাশের ছাদ ছোয়া স্লাইডিং গ্লাস ছারাও বাড়ির আর সব জানালা বন্ধ । তবু এত জোরে পাখির গান শোনা যাচ্ছে যে, আমার ঘুম ভেঙ্গে গেছে । মনে মনে ভাবালাম পাখিটা বোধহয় আমাদের বেডরুমের ব্যালকনিতে বসে ত্বারস্বরে গান করে যাচ্ছে । সুরটা যদিও চমৎকার ছিল তবু রাত ২ টায় গান যত সুমধুরই হোকনা কেন ঘুম ভাঙ্গিয়ে তা শোনালে মেজাজ ভাল থাকবার কথা নয়। জানি এর পরে ২/৩ ঘন্টা আমার আর ঘুম হবে না। ফোন হাতে নিয়ে দেখি শ্রাবনের ভয়েস মেসেজ। সকালে ফোন করব বলে মেসেজ দিয়ে ঘুমানোর চেস্টা চালালাম। কিন্তু এত বড় গানের শব্দে তা সম্ভব হচ্ছে না, পরের চার ঘন্টা জেগে কাটিয়ে সকালের দিকে একটু করে ঘুমিয়ে পরলাম।
পরের দিন রাতে সকাল সকালই ঘুমোতে গেলাম গতরাতে ঘুম হয়নি বলে। কাপাল আর কাকে বলে ঠিক গানের আওয়াজে রাত ২ টায় আবার ঘুম ভাঙ্গলো । কি যন্ত্রনারে বাবা
সেদিন ক্লিফ আর আমি একটা মিউজিক্যাল স্টেজ ড্রামা দেখতে গিয়েছিলাম নাম, "মেনোপোজ"। তাতে দেখলাম যাঁরা মেনোপোজে আছেন তাদের আর সব সাফারিং সাথে ইনসমনিয়া একটা সাফারিং। ভাবি এই পাখিটার কি মেনোপোজ হলো নাকিরে বাবা ? হায়রে কি দিনকাল আসলো পাখিদেরও মেনোপোজ হয় , আর তার ঝামেলায় আমারও রাতের পর রাত ঘুম নস্ট
আমি ঘুম কাতুরে মানুষ আগেও একবার কোন এক পোস্টে বোধহয় বলেছিলাম। তাই পরপর চার রাত পাখির গানে ঘুম না হওয়ায় আমার মন মেজাজ আর অবস্থা দুটোই খারাপ ক'দিন থেকে। তাছাড়া সিংগাপুর থেকে ব্রিসবেনে এসেছি পর্যন্ত একধরনের ডিপ্রেশনে ছিলাম ভেতরে ভেতরে। বেশ কিছু ঘটনাও কাজ করছিল আমার ডিপ্রেশনের পেছনে। প্রথমেই ব্রিসবেনের বন্যায় ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়া, মারা যাওয়া মানুষদের দেখে মনে বেশ দাগ কেটেছিল। এর পরে কয়েকটা ঘটনা যেমন ক্রাইস্টচার্চের ভুমিকম্প, জাপানের স্যুনামি - জীবন কতটা ক্ষনস্থায়ি জানিয়ে দিয়ে গেল। বড় ধাক্কাটা লাগলো তারিক মাসুদ ও মিশুক মুনিরের খবরটাতে। এর হতভম্বতা আমাকে বিশাল ও গভীর আরেক ডিপ্রেশনে ডুবিয়ে দিল। সাত আটদিন কারো সাথে কথা পর্যন্ত বলতে ইচ্ছে করেনি। হাতের কাছে অনলাইনে বন্ধু তুষারকে পেয়ে ডিপ্রেশনে ফ্রাসট্রেটেড হয়ে দেশের সিস্টেমের উপর রেগে গিয়ে ওর উপর হতাশা আর অসহায়ত্বের রাগ ঝাড়লাম। এটা শেষ হবার আগেই ব্রিসবেনে এক পরিবারের ১১ জন সদস্য বাড়ি সুদ্ধ পুড়ে মারা গেলেন রাতে ঘুমের ভেতর । শুধু যিনি বাবা উনি বেচে বের হতে পেরেছিলেন আগুনে পোড়া বাড়ি থেকে। মা আর বাচ্চারা সব বাড়ির সাথে পুরে গেলেন। এই খবরটা আমাকে আরো কঠিন ভাবে ভেঙ্গেদিল।
সারাক্ষন মনে হয় বাঁচার কি যুক্তি, অর্থহীন সবকিছু । একদিন আমিও আর কোথাও থাকবোনা। সব কিছু চলবে, নতুন মানুষ আসবে , আবার সবাই চলে যাবে , আমিও চলে যাবো, কি হবে কোন কিছু করে ! এই চিন্তা আমাকে ভেতরে ভেতরে ভেঙ্গে দিচ্ছিল গত ৬/৭ মাস ধরে । আমি ইন্ট্রোভার্ট মানুষ . সুখের কথা সবাইকে বলি , তবে দুঃখ গুলো শেয়ার কথা আমার জন্য অসাধ্য সাধন। শ্রাবন কে এর জন্য ধন্যবাদ দেই , অনেক সময় আমাকে খুচিয়ে কষ্টগুলো বের করে বলতে হেল্প করে, মনটা হালকা করে তাতে। তবু বলাটা এত সহজ নয় আমার। নতুন বন্ধু শিল্পি সেদিন কাঁধ বাড়িয়ে দিয়ে ছিল, তবু বলতে কি পেরেছি ? পালিয়ে বেড়িয়েছি ওর কাছ থেকে। আমার সময় লাগে মন খুলতে বুক খুলতে, সরি ফর দ্যাট
ক্লিফের সামনেই বলে ফেললাম ক'য়েকদিন, "কি হবে কোন কিছু করে, কি হবে আর এত ঘটা করে বেচে" ?
জানি আমার এই কথা ওকে ভেঙ্গে দেবে । তবু কি করে যে মুখ দিয়ে বের হয়ে এসেছিল ! আমার ডিপ্রেশন আর ফ্রাসট্রেশন যখন চুড়ান্ত পর্যায়ে তখন উপরি ঝামেলা এই পাখির গানে ঘুম না হওয়া। মরার উপর খাড়ার...Something .....জানিনা শেষটা
সেদিন শনিবার ১৭.০৯.২০১১। রাতে মেনোপোজাল পাখির গানে ঘুম হয়নি আবার । ঘুমও ভাঙ্গলো সকাল ৭.৩০ এ।
মন মেজাজ চুড়ান্ত পর্যায়ে । ক্লিফ আমার আগেই উঠে কফি খেয়ে রেডি , কোথায় যেন যাচ্ছে। আমাকে বলল বাইরে যাচ্ছে ঘন্টা খানেকের জন্য....কোথায় যাচ্ছে জানবার আগ্রহ নেই আমার , নির্বিকার ভাবে বললাম, "ওকে" কোন ব্যাপার না...কি হবে জেনে?
আমি আমার রেগুলার এ্যাব সার্কেল প্রো'র ওয়ার্কআউট সেরে চা নিয়ে টিভির সামনে বসি...কিছু কি দেখি???......নাহ কিছু বোধ হয় না, শুধু চেয়ে থাকা । ঘণ্টা খানক পরে ক্লিফ ফেরে। একটা সাদা এনভেলোপ এগিয়ে দিয়ে বললো, "Babe listen, this is my gift to you for our wedding anniversary, And i think you need this now, this will give your life back to you" বলে আমাকে এনভেলাপটা ধরিয়ে দিল। আমি হাতে নিয়ে তাকিয়ে থাকি কয়েক মুহুর্ত। ভাবি কি আছে ভেতরে যা আমাকে আমার জীবন ফিরিয়ে দেবে
Now here i am standing with a ticket for Extreme Challenge - Tandem Skydiving to jump off the plane from 14,000ft height .......
ক্লিফ বললো, "আমি জানি তুমি কতটা ডিপ্রেস্ড আর ফ্রাসট্রেটেড কিছুদিন থেকে, আমি বলছি, ট্রাস্ট মি, এই স্কাই ডাইভিং তোমাকে আবার বাঁচতে সাহস দেবে। আমার ভয়ে আত্মা খাঁচা ছাড়া তখন। নিজের চুল নিজে ছিড়তে ইচ্ছে করেছে
আমি মনে মনে সাহস করার চেষ্টা চালাই। একা একা দেশ ছেড়ে সাত সাগড় পারি দিয়ে কারো সাহায্য ছাড়াই যদি অন্য একটা দেশে ১০ বছর ধরে টিকে থাকতে পারি , এই সমান্য একটা ব্যাপার পারবোনা ? নিজের ইগো নিজেকে লজ্জা দেয় হার মানতে। আবার পেটের ভেতরও ইলিবিলি করতে থাকে ভয়ে। সারাদিন এটা সেটা হাসির কথা বলে ক্লিফ আমাকে ব্যস্ত রাখলো।
বিকেলে গেলাম সানকর্প স্টেডিয়ামে রাগবি সেমি ফাইনাল খেলা দেখতে। সবই করছি হাসি মুখে তবে ভেতরে আমার জানটা মরি মরি করে কাল সকালের ভয়ে। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করছে না বলে একদিনের জন্য পালিয়ে যাই কোথাও
রোববার সকাল ৭.৩০শে রিপোর্টিং। আমারা ৬.৩০শে ঘুম থেকে উঠে রেডি হলাম। আমার মুখে কোন কথা নেই, মনে মনে ভাবি সুখে থাকতে ভুতে কিলায় ব্যাপারটা কত যে ঠিক। ছিলাম ভালই, যাচ্ছি গায়ে পরে আকাশ থেকে ঝাপিয়ে পরে মরতে। ক্লিফ বলে "তুমি না মরতে চেয়েছিলে, তো এভাবেই মরাটা তো আরো ইন্টারেসটিং !!! এটলিস্ট মরার আগে পৃথিবীর একটা চমৎকার রুপ দেখে মরতে পারবে ক'য়টা মানুষ পারে এভাবে মরতে।" এই কথা আমাকে অবশ্য একটু সাহস দিল।
On the way i sent sms to Shrabon, " I am going for a skydiving, in case if i don't come back, Just wanted to let you know that i love you" মনে এসেছিল আরো ক'জনের কথাও তবে এস এম এস করে জানাতে পারার মধ্যে শ্রবনের কথাই কেন যেন মনে এসেছিল।
রিপোর্টিং এর পরে ফর্ম ফিলাপ করে নিজের মৃত্যু পরোয়ানা লিখে সাইন করে অনুমতি দিলাম
যাবার আগে ক্লিফকে বড় একটা হাগ আর Kiss করে রওনা দিলাম আমার মতন আরো ১০ জনের সাথে। সবাই Tandem Master এর সাথে জাম্প করবে। Tony ভিডিও করা শুরু করল। আমার তখন প্রানটা আর শরীরে নেই। রেডক্লিফ থেকে ১০ মিনিটের ড্রাইভে আমরা পৌছালাম একটা ছোট্ট এয়ার পোর্টে। ছোট্ট একটা প্লেন এগিয়ে এলো আমাদের দিকে। যার ভেতরে দাড়াবার কোন উপায় নেই, কোন ভাবে হামা দিয়ে বসা যায় মাত্র। আমার ১০ জন ১০ Tandem Master এর সাথে ঠাসা ঠাসি করে কোন ভাবে উঠে বসলাম ওতে। প্লেনে কোন দরজা নেই, একটা প্লাস্টিকের স্লাইডিং ঝাপি আছে মাত্র। যে যার Tandem Master এর সামনে বসা। টোনি'র সামনে বসলাম আমি আর টোনি ওর গিয়ারের সাথে আমার গিয়ার বেধে নিলে টাইট করে। প্লেন উড়তে শুর করলে। আমি মনে মনে ভাবছি "Am i really doing this? I can't believe i am doing this, Why do i have to do it, Why can't i go back now......God I am hungry
টোনি আমার ভিডিও করতে থাকলো আর কিছুক্ষন পর পর সে বলে "You ready to go? happy happy?
আকাশ থেকে আমাদের রেডক্লিফ, উডিপয়েন্ট আর আমাদের বাসাটা দেখলাম, টোনি কে দেখালাম আমাদের বাসাটা।। আমারা আকাশে ১৪,০০০ ফিট উপরে উঠে গেলাম। অপূর্ব সুন্দর পৃথিবীরে রুপ দেখতে দেখতে ভয় কাটাচ্ছিলাম আমি - ভাবি আরে কোন ব্যাপার না (
আমার পাশেই ছিল জ্যাপানিজ একটা মেয়ে। ও জাম্প করবে প্রথম। ভয়ে ওর মুখ শুকনা তবু আমার দিকে তাকি হাসল, আমিও হাসলাম, ও বললো "আমার ভয় করছে"। ও ওর বয়ফ্রেন্ড কে নিয়ে ৩ সপ্তাহ হলো ব্রিসবেনে এসেছে বেড়াতে। ওর বয়ফ্রেন্ডও জাম্প করছে আমাদের সাথে ৫ জনের পরে। হায়রে কপাল বেঘড়ে মরতে এসেছি আমরা ক'জন এখানে
সবাই সবার টেনডেম মাস্টারের সাথে বাধা। হঠাৎ প্লাস্টিকের স্লাইড উঠিয়ে দিল ওরা। ৩ সেকেন্ড সময় নিয়ে জ্যাপানিজ টা কিছু বোঝার আগেই ওকে নিয়ে ওর মাস্টার ঝাপ দিল খোলা দরজা দিয়ে। টোনির ভিডিও ক্যামেরাটা হাত থেকে হঠাৎ প্লেনের মেঝেতে পরে গেল, এসে পরল আমার সামনে। আমি কুড়িয়ে নিয়ে ওর হাতে দিলাম। টোনি আমার চোখে গ্লাস পরিয়ে দিল, মনে মনে বললাম বিদায় পৃথিবী....বুকে ধুক পুকানি চড়ম পর্যায়ে তখন, জীবনের শেষ মুহুর্ত গুলো এত তাড়াতারি চলে যাচ্ছে তখন। এই সবই ঘটল ১০ সেকেন্ডের ভেতর, জ্যাপানিজের পরে আরো দুজন চলে গেল এরই মাঝে, টোনি আমাকে ছেড়ে দরজার কাছে আনতে আনতেই মুহুর্তে আমি একসাথে অনুভব করলাম বিশাল শুন্যতা, পতন, ২/৩টা শুন্যে ডিগবাডি, পিঠে ৭০ কেজি আলুর বস্তা (টোনি
হঠাৎ নিজেকে একটা বড় ঝাকি দিয়ে সোজা দাড়ানো অবস্থায় উপরে উঠে যেতে ফিল করলাম। বুঝলাম টোনি আমাদের প্যারাস্যুট খুলে দিয়েছে। কতদুর সাই সাই করে উপরে উঠে যেন সব শান্ত। আমরা বাতাসে হালকা হয়ে ভাসছি
আমি প্রথম গলা দিয়ে আওয়াজ বের করতে পারলাম আবারও, গলা ছেরে চিৎকার করে নিজের Existence জানালাম, বেঁচে আছি ব্যপারটা কি যে ভাল লাগলো তখন, নতুন করে যেন জীবনে ফিরে এলাম। টোনি আমাকে ব্রাইবি আইল্যন্ড দেখালো নিচে। দেখলাম মরটন আইল্যান্ড, ছোট ছোট ঢেউ তুলে ছোটা জাহাজ গুলো কে খেলনা লাগলো দেখতে, জীবনটা অনেক সুন্দর!! বেচে থাকাটা অনেক ভাল লাগার!
স্কার্ব্রা বীচে আমরা ল্যান্ড করব। নিচে স্কার্ব্রা বীচের পাশে সারি বাধা মাছ ধরা নৌকা গুলো কি সুন্দর লাগছিল। বিচের কাছাকাছি চলে এলাম। বলা ছিল নিচে নামার আগে দুহাত দিয়ে আমার পা সামনে তুলে ধরতে হবে। টোনি বললে পা নামাবো। দুরে নিচে ক্লিফকে দেখে চিৎকার দিয়ে ডাকলাম। বেচারা শুনতে পেলনা আমরা এত উপরে......তখনও। টোনি কে বললাম "I still can't believe i just did it".
আমরা অবশেষে ল্যান্ড করলাম। প্রথম কথা আমার মুখ দিয়ে বের হলো, "WOW I am still alive" এখনও আমি বেচে আছি!!!!!! শুধু বাচতে নয় এখন আমি যে কোন কিছু করতে পারবো!!
ক্লিফ এগিয়ে এলো আমার দিকে। আমি দুহাত বাড়িয়ে হাগ করলাম ওকে। আমার জীবনে ফিরে আসা অনুভব করলাম। অমনি শুরু হলো আমার হাচি। কঠিন হাচি শুরু করলাম, ক্লিফ মরে যাচ্চে আমার আকাশ অভিঙ্গতার কথা জানতে ....আমার হাচি আর থামে না, হাচির পরে হাচি আসতে থাকলো বুক মাথা খালি করে। পরের দশ মিনিট আমি কোন কথা বলতে পারলাম না শুধু হেচেই চললাম। মাথায় যত সর্দি ছিল সব বেড়িয়ে এলো এক ধাক্কায়।
ক্লিফ আমাকে ব্রেকফাস্ট করাতে নিয়ে চলল এক কফিশপে। ঝাড়া ১০/১৫ মিনিট হাচার পরে শুরু করলাম আমার গল্প। আর মনে হলো জীবনে কোন কিছুই কোন ব্যাপার না সবই করা সহজ....এখন আমি সব পারবো....যে কোন কিছুকে হ্যান্ডেল করা আমার জন্য কোন ব্যাপার না আর......
Skydiving - A life time Experience anyone can ever have ....
Nothing will be impossible for me to do anymore. I jumped off the plane from 14,000ft ......if i can do that then i can do anything, nothing will stop me. I got back my life. Thanks to Cliff - my lovely and wonderful Husband who always understood me and knew what i need at every single step of my life.....my inspiration to live my life.
আমি এখন অন্য মানুষ। জীবনে অনেক কিছু করার আছে। জীবনে যেটুকু সময় পাই তাকে অভিজ্ঞতায় আর কাজে ভরে তোলাই ছোট জীবনটার সার্থকতা।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:০৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




