somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অণু কাব্য

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অণু কাব্য - ০১ , অণু কাব্য - ০২ , অণু কাব্য - ০৩ , অণু কাব্য - ০৪

অণু কাব্য - ০৫


সুখি, তুই বিশ্বাস করবি না, আজ পর্যন্ত আমি যতবার অণুর সাথে বাহিরে বের হয়েছি, দুই, একদিন ছাড়া কোনদিনই খুশি মনে বাসায় আসতে পারিনি। আমরা প্রথম যে দিন বার হই সেটা ছিল প্রপোস এর তৃতীয় দিন। কিন্তু সেদিন ও আমাদের মাঝে মনো-মালিন্য হয়। অণুর হাতে বেশী সময় না থাকায় আমরা একটা রিকসা ভাড়া করে শহর ঘুড়ি। সময় অনেক ভাল যাচ্ছিল কিন্তু কোন দুঃখে যে ওর টিপ নিয়ে কথা শুরু করেছিলাম জানিনা। সেই টিপ সারাদিনটা মাটি করে দিল। আমার দোষ হচ্ছে এত টুকু, আমি বলেছিলাম তোমার টিপটা একটু ছোট হলে বেশী ভাল হত। এটা শুনেই সে টিপ খুলে বাইরে ফেলে দিল।আমার প্রচুর রাগ হয়েছিল কিন্তু কিছু না বলে, আমি রিকসা বাস স্টপে নিয়ে যাই এবং ওকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে বাসায় চলে আসি।

বাসায় আসতে না আসতেই অণুর ফোন-

সরি পাখি, আমি আর এমন করবো না।
[অণু আমাকে ভালবেসে পাখি ডাকতো।]
এখানে সরি বলার কিছু নাই। তুমি টাইমলি বাসায় যেতে পারছোতো? বাসায় কোন প্রবলেম হয় নাই তো?
না বাসায় সব ঠিক আছে।
আচ্ছা ঠিক আছে, এখন খেয়ে দেয়ে রেস্ট নাও। আমি রাতে ফোন দিব। এখন রাখি।
আচ্ছা ঠিক আছে। বায়।

এর মাঝে আমাদের মিড-টার্ম পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়। আমি বিভিন্ন ভাবে নোট, সাজেশন দিয়ে অণুকে সাহায্য করি। দেখতে দেখতে পরীক্ষার দিন গুলো শেষ হয়ে যায়। সবার পরীক্ষাই মোটামুটি ভাল হয়। অণু প্রথম দিন যে কথা বলেছিল, সে তা রাখে। সেমিস্টারের মাঝে ভর্তি হওয়া শর্তেও ওর পরীক্ষা অনেক ভাল হয়েছে।

ওর আন্টি আমার সাথে দেখা করবে। আন্টি নাকি বয় ফ্রেন্ড এর সাথে দেখা করতে আসবে, তখন আমার সাথেও দেখা করবে। আমি রাজি হলাম। এবং কথামত আমি আর অণু একটি রেস্টুরেন্ট এ বসে আন্টির জন্য ওয়েট করছি আর নানা রকম কথা-বার্তা বলছি। এর মাঝে এক সময় আন্টি চলে আসে। আমরা রেস্টুরেন্ট থেকে হালকা পাতলা কিছু খাবার খাই। কারন আন্টির বয় ফ্রেন্ড এর কাজ থাকায় তার আসতে দেরী হবে। আমরা খাওয়া-দাওয়া শেষে বিভিন্ন রকম গল্প-গুজব করলাম।

ও! বলা হয়নি, এটা আমার আর অণুর প্রথম ডেট ও বলা যেতে পারে। এর আগে আমরা কখনো কোথাও এভাবে বসি নাই। আসলে সময় হয়নি। অণু আজ পিংক কালারের একটা ড্রেস পরেছে, সাথে আমার দেয়া চুড়ি গুলো। খুব সুন্দর লাগছে তাকে।

আন্টির বয় ফ্রেন্ড চলে এসেছে। আমরা বিভিন্ন রকম কথা-বার্তা বললাম। দুপুরের খাবারের সময় হলে, আন্পির বয় ফ্রেন্ড আমাদের একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্প এ নিয়ে যায়। সেকানে একটা মজার কাহীনি ঘটেছিল। আমি অণুকে বলেছিলাম, তুমি কিন্তু আমাকে খাইয়ে দেয়ার চেষ্ট করবে না। ওনাদের সামনে আমার কাছে এগুলা ভাল লাগবে না। অথচ অণুর খাবারের অবস্থা দেখে আমি নিজেই ওনাদের সামনে অণুকে খাইয়ে দিয়েছিলাম। খাবার শেষে আমি আর অণু তাদের একা ছেড়ে রিকসা ভ্রমণে বেরিয়ে পরি। ভ্রমণ শেষে বাসায় যাবার জন্য আন্টিকে ফোন দিলে জানতে পারি, আনিট আর তার বয় ফ্রেন্ড লেকে বসে আছে। তাই আমাদেরকেও লেকে যেতে হলো। সেখানে ঘটলো আর এক কাহিনী, রাস্তায় প্রচুর বালি। অণু ঠিক ভাবে হাটতে পারছে না। আমার প্রচুর খারাপ লাগছিল, ওকে কিছু না বলেই কোলে করে নিয়ে রাস্তাটা ক্রস করলাম। ও কিছু বুঝে উঠার আগেই জেন সব হয়ে গেল। কোল থেকে নামার পর ওর মুখে শুধু একটি কথাই ছিল- এটা কি হলো। আমি কিছু না বলে, আন্টির সাথে কথা বলরাম। তারা কখন যাবে জানতে চাইলাম। এর মাঝে অণু নৌকা দেখে, নৌকায় উঠতে চাইল। আমরা দু'জন নৌকায় উঠলাম। নৌকার মাথায় আমি আর আমার কোলে অণু। ওকে জরায় ধরে নৌকায় বসে কিছু সময় ঘুড়লাম। সেই মুহূর্তটা অসম্ভব সুন্দর ছিল, বলে বুঝাতে পারব না। বিকেলের মিস্টি আলো, চার পাশে পানি, মাঝে আমি আর অণু। দূরে লেকের পারে আন্টি আর তার বয় ফ্রেন্ড বসে আছে।

হঠাৎ আওয়াজ আসলো, অণু! অণূ! চলে আসো, যেতে হবে। আমরা নৌকা পারে ভিড়ালাম। আন্টি আর তার বয় ফ্রেন্ড এক রিকশায় আর অন্য রিকশায় করে আমি আর অণু বাস স্টপে চলে আসলাম। আন্টি আর অণুকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে আমি বাসায় চলে আসলাম।

এই দিনটি আমি কখনো ভুলবো না। অণুর সাথে পরিচয়ের পর আমার যে কয়টি দিন ভাল গিয়েছিল, তার মধ্যে এটি একটি।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সকাল ৯:৩২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লবণ্যময়ী হাসি দিয়ে ভাইরাল হওয়া পিয়া জান্নাতুল কে নিয়ে কিছু কথা

লিখেছেন সম্রাট সাদ্দাম, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১:৫৪

ব্যারিস্টার সুমনের পেছনে দাঁড়িয়ে কয়েকদিন আগে মুচকি হাসি দিয়ে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছিল শোবিজ অঙ্গনে আলোচিত মুখ পিয়া জান্নাতুল। যিনি একাধারে একজন আইনজীবি, অভিনেত্রী, মডেল ও একজন মা।



মুচকি হাসি ভাইরাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৩:০৬

অবশেষে মিল্টন সমাদ্দারকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। এবং প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিবি জানিয়েছে সে ছোটবেলা থেকেই বদমাইশ ছিল। নিজের বাপকে পিটিয়েছে, এবং যে ওষুধের দোকানে কাজ করতো, সেখানেই ওষুধ চুরি করে ধরা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না

লিখেছেন অপু তানভীর, ০২ রা মে, ২০২৪ সকাল ১০:০৪



নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×