somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গল্পঃ Dream Trap

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবিঃ AI Generated

ভয়ঙ্কর একটা স্বপ্ন দেখে ধরফর করে জেগে গেলাম। সারা শরীর ঘামে ভিজে জবজব করছে। ঘন ঘন নিঃশ্বাস উঠানামা করছে। কিছুটা ধাতস্থ হয়ে বিছানার পাশের টেবিল থেকে পানির বোতল টা নিয়ে ঢক ঢক করে খেয়ে নিলাম একবারে। পাশের খোলা জানালা থেকে সুন্দর বাতাস আসছে। ভোরের আলো সবে ফোটা শুরু করছে। সেদিকে তাকিয়ে পুরো স্বপ্নটা মনে করার চেষ্টা করলাম। আস্তে আস্তে মনে পড়তে থাকলে বেশ অবাক হয়ে গেলাম। যে ধরণের বিষয় নিয়ে টুকটাক কাল্পনিক গল্প লিখি সেরকমটাই দেখলাম স্বপ্নে। মানে আমার মতো দেখতে কেউ আমার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। যেন আমি কোনো একটা গভীর জঙ্গলের ভিতর পথ হারিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। অন্ধকার হয়ে আসছে চারিদিকে। কেন কিভাবে আমি এই জঙ্গলে এলাম সেটা কোনোভাবেই মনে করতে পারলাম না। স্বাভাবিক ভাবেই স্বপ্ন এমনভাবেই শুরু হয়। হাঁটতে হাঁটতে কানে একটা আবছা শব্দ এলে একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়ে গেলাম। মনে হচ্ছে বেশ কিছুটা সামনে থেকে আরো গভীর জঙ্গলের দিক থেকে কিছু একটা দৌড়ে আসছে। আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলাম কোনো জন্তু জানোয়ার আসছে কিনা সেই ভয়ে। একটু পর দেখলাম একটা মানুষের অবয়ব। ঠিক আমার সোজা দৌড়ে আসছে। আর বারবার পিছন ফিরে তাকাচ্ছে। তার হাতে একটা টর্চের মতো কিছু আছে যেটাতে খুব অল্প আলো জ্বলছে। এতো দূর থেকে চেহারা দেখা যাচ্ছেনা তার উপর আবার অন্ধকার এবং আলোর পিছনে লোকটার চেহারা। আমি ঝট করে একটা গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে একটু উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম। লোকটা আরো কাছাকাছি এলে হঠাৎ কিছু একটাতে পা বেঁধে হুমড়ি খেয়ে পড়লো। আর তার হাত থেকে টর্চটা পড়ে ঠিক লোকটার মুখের উপর আলো পড়লো। প্রচণ্ড অবাক হয়ে দেখলাম মানুষটা আর কেউ না, আমি নিজে। লোকটা আবার টর্চ হাতে নিয়ে উঠে দৌড়ে আসছে আমার দিকে। এমন দৃশ্য দেখে থাকতে না পেরে আমি আড়াল থেকে বের হয়ে এলাম। সামনের মানুষটা হঠাৎ আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে গেল। প্রচণ্ড বিস্ময়ে চোখ বড় হয়ে গেছে। আমিও একই ভাবে খুব অবাক হয়ে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছি কি হচ্ছে সামনে! সামনের আমার মতো মানুষটা কয়েক সেকেন্ড আমার দিকে তাকিয়ে কিছু একটা চিন্তা করে যখনই আমার দিকে এগিয়ে আসতে যাবে তখনি তার ডান পাশ থেকে খুব ভয়ঙ্কর কিছু একটা এসে তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রচণ্ড জোরে চিৎকার করে উঠলো সে আর আমি প্রচণ্ড আতঙ্কে একটা জোরে ঝাঁকি খেয়ে ঘুম থেকে জেগে উঠি।

স্বপ্নের কথা টা চিন্তা করতে করতে আবার শুয়ে পড়লাম। আরো ঘন্টা খানেক পরে এলার্ম বাজলে উঠতে হবে। অফিসে যেতে হবে। শুয়ে ভাবতে লাগলাম এইসব টুইন চেহারার মানুষ বা নিজের মতো আরেক অস্তিত্ব নিয়ে বেশি গল্প লিখার কারণেই এইসব উলটা পালটা স্বপ্ন দেখা শুরু করেছি। একটা জব করলেও শখের বশে রাতে টুকটাক গল্প লেখার অভ্যাস আছে। এসব গল্পও হয় অনেক ছোট, আর ঐ ফেসবুকে পোস্ট করা পর্যন্তই। এর বেশি কিছু না। শুয়ে আরেকটু ঘুমানোর চেষ্টা করলেও কেন যেন আর ঘুম এলো না। কিছুক্ষণ বিছানায় এদিক ওদিক করে শেষে উঠে পড়লাম। ঘরের সাথে লাগোয়া একটা বেলকনি আছে। সেখানে দাঁড়িয়ে দূরে তাকিয়ে আবারো স্বপ্নের কথাটা চিন্তা করতে থাকলাম। হঠাৎ একটু অবাক হয়ে খেয়াল করলাম আমার বাসা থেকে কিছুটা দূরে বেশ ঘন গাছপালা আছে। অনেকটা ছোটোখাটো একটা জঙ্গলের মতো। জিনিসটা আমি আগেও দেখেছি কিন্তু আজকের স্বপ্নটা দেখে কেমন জানি অদ্ভুত লাগলো ব্যাপারটা। জবের কারণে এই ছোট পাহাড়ি এলাকাতে এসেছি মাস তিনেকের মতো। এখনো আশেপাশে অনেক কিছুই ঘুরে দেখা হয়নি। আমার বাসাটা শহরের কিছুটা শেষের দিকে। ছোট্ট একটা শহর হওয়াতে অফিসে যেতে আসতে খুব বেশি সমস্যা হয়না। একাই থাকি এখানে। একজন খালা এসে রান্না বান্না আর ঘরের কাজ গুলো করে দিয়ে যান। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আমি আগেও দূরের জঙ্গলটা দেখেছি কিন্তু সেভাবে ভালভাবে খেয়াল করা হয়নি। আজকের স্বপ্নটা দেখে কেন যেন মনে হচ্ছে জঙ্গলটা কেমন গিয়ে দেখা উচিত আমার। হঠাৎ বাস্তবে ফিরে এসে ভাবলাম একটা স্বপ্ন দেখে বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে চিন্তা করা। মাথা ঝাড়া দিয়ে এসব চিন্তা সরিয়ে অফিসে যাওয়ার জন্যে রেডি হতে গেলাম।

সারদিনে অফিসে ব্যস্ত থাকলেও কেন জানিনা স্বপ্নের ব্যাপারটা মাথা থেকে পুরোপুরি গেলনা। বারবার মাথার মধ্যে জঙ্গলের চিন্তাটা আসতে থাকলো। মনে হচ্ছে জঙ্গলে কিছু একটা আছে যা আমার গিয়ে দেখা উচিত। আবার মনে হচ্ছে নতুন গল্প লেখার একটা বিষয়ও পেয়ে যেতে পারি। ছোটবেলা থেকেই একটা কিছু নিয়ে কৌতুহল তৈরি হলে সেটা যতক্ষণ না দেখা হয় ততক্ষণ মন ছটফট করতে থাকে। আজকের জঙ্গলটাও সেভাবেই টানছে আমাকে। লাঞ্চ টাইমের কিছুক্ষণ পর টিম লিডারকে বললাম শরীরটা বেশি ভাল লাগছেনা। আজকের বাকি শিফটটা ছুটি দিলে বাসায় গিয়ে রেস্ট নিতে পারতাম। বলা মাত্রই ছুটি দিয়ে দিলেন, কারণ তিনিও আজকে খেয়াল করেছেন আমার মুখ দেখে মনে হয়েছে ভাল নেই আমি। ছুটি পেয়ে ঘন্টা খানেকের মধ্যেই বাসায় চলে এলাম। বাসায় এসে জামা কাপড় বদলে হিল ট্রাক করার মতো জামা কাপড় পড়ে নিলাম। জামা টা পড়ে হঠাৎ মনে হল আমি আগে দেখেছি এরকম কিছু একটা জামাতে আছে। কিন্তু সেটা কি হতে পারে সেটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামিয়ে সময় নষ্ট করলাম না। একটা ব্যাকপ্যাকে কিছু দড়ি, একটা বড় টর্চ লাইট আর আরো কিছু টুকটাক জিনিস নিয়ে পায়ে জুতা পড়ে বেড়িয়ে পড়লাম। একটু আগে বিকেল হয়েছে, সূর্য ডুবতে এখনো ঘন্টা দুয়েক বাকি আছে। ভাবলাম আজ বেশি দূরে যাবনা। জঙ্গলের একটু ভিতরে গিয়ে আবার চলে আসবো অন্ধকার হওয়ার আগে।

বাসা থেকে বেড়িয়ে একটা কাঁচা রাস্তা ধরে জঙ্গলের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলাম। আধা ঘন্টা হাঁটার পর কাঁচা রাস্তাটা আর থাকলো না। সামনে শুধু শুকনো পাতা, ঘাস আর যেখানে সেখানে ভাঙ্গা ডাল ছড়িয়ে থাকা একটা এলাকা। সোজা হেঁটে গেলে জঙ্গল। সেভাবেই এগিয়ে গেলাম। জঙ্গলটা ঠিক যেখান থেকে শুরু হয়েছে সেখানে একটা মোটা গাছের গায়ে একটা মার্ক করে রাখলাম। এভাবে আস্তে আস্তে ভিতরের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলাম আর একটু পরপর গাছের গায়ে মার্ক করতে থাকলাম। জঙ্গলের ভিতর এসে যেটা শুরুতেই খেয়াল করলাম তা হলো এখানে পাখির ডাকও খুব বেশি শোনা যাচ্ছেনা। অথচ এখানে আসার আগ মুহূর্তেও বাইরে প্রচুর পাখির ডাক শুনতে পেয়েছি। আসলে এই এলাকায় পাখি অনেক বেশি। জঙ্গলে পাখি কম যদি থেকেও থাকে অন্তত ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনতে পাওয়ার কথা। কিন্তু এই জঙ্গলটা কেমন আশ্চর্য রকমের নির্জন। দিনের কিছুটা সময় বাকি থাকলেও জঙ্গলটা এতোটাই ঘন যে দিনের আলো খুব বেশি ভিতরে ঢুকছেনা। একটু পর কেমন গা ছমছম করতে থাকায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। পিছন ফিরে হাঁটা শুরু করলাম গাছের গায়ে আগে থেকে করা মার্ক দেখে দেখে। পথ বেশি বাকি নেই, কিন্তু কেমন জানি মনে হচ্ছে আমার পিছনে ঘন জঙ্গলের দিক থেকে কেউ খুব নিশব্দে আমাকে দেখছে। ব্যাপারটা শুধুই একটা অনুভূতি। মনের ভুল ভেবে ফিরে আসার জন্যে এগিয়ে আসতে লাগলাম।

একটু পর বুঝতে পারলাম আমি পথ হারিয়ে ফেলেছি। কারণ কোনো গাছে আর মার্ক দেখতে পাচ্ছিনা। আমার স্পষ্ট মনে আছে আমি সোজা পথে এসেছি মার্ক করতে করতে, একবারো দিক পরিবর্তন করিনি। সেভাবেই সোজা ফিরে এসেছি কিন্তু কিছুদূর এসে আমি আর গাছের চিহ্নগুলো খুঁজে পাচ্ছিনা। একরাশ আতঙ্ক আমাকে ঘিরে ধরলো এখন। যেভাবে সোজা এসেছি সেভাবেই সোজা ফিরতি পথে যতই এগিয়ে যাচ্ছি ততই জঙ্গল আরো ঘন হচ্ছে। এদিকে দিনের আলোও একদম কমে এসেছে। আর পনের মিনিটের মধ্যেই অন্ধকার হয়ে যাবে। মনে মনে এতোটাই ভয় এসে গ্রাস করতে লাগলো আর নিজের উপরে প্রচণ্ড রাগ হতে লাগলো। অ্যাডভেঞ্চার করার শখ চিরতরে মিটে গেছে। পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে দেখি একফোঁটা নেটওয়ার্ক নেই। এই ঘন জঙ্গলে যে নেটওয়ার্ক থাকবেনা সেইটা আগে থেকেই জানা। মোবাইলটা পকেটে রেখে দিনের শেষ আলোটুকু দিয়ে সামনে হেঁটে যেতে থাকি। একটু পরে যখন আর আলো থাকলো না তখন বড় টর্চটা বের করে জ্বালিয়ে নিলাম। সামনে এতোটাই অন্ধকার যে টর্চের আলো যেন সামান্য একটু সামনে গিয়ে অন্ধকারের সাথে ধাক্কা খেয়ে থেমে যাচ্ছে। এভাবেই যেটুকু সামনে দেখতে পাচ্ছি এগিয়ে যাচ্ছি। যেভাবে হোক আমাকে এই জঙ্গল থেকে বের হতেই হবে।

পিছন থেকে যে কেউ আমাকে নিঃশব্দে দেখছে এই অনুভূতিটা এখনো আছে। প্রচণ্ড ভয়ে থাকলেও সবকিছু মনের ভুল ভেবে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু এটা যে মনের ভুল না সেটা প্রমাণ করার জন্যেই যেন পিছন থেকে একটা খচখচ শব্দ শুনতে পেলাম। সাথে সাথে শিরদাঁড়া দিয়ে একটা ভয়ের স্রোত নেমে গেল যেন আমার। আস্তে আস্তে টর্চ নিয়ে পিছনে ঘুরলাম। কিন্তু কিছুই দেখলাম না। পা কাঁপছে আমার প্রচণ্ড আতঙ্কে। আবার সামনের দিকে ঘুরে এগিয়ে যেতে থাকলাম। একটু এগিয়ে যাওয়ার পর আবার পিছনে একইভাবে শব্দ শুনে ঝট করে পিছনে তাকালাম। কিন্তু এবারেও কিছুই দেখতে পেলাম না। এবার সামনে ঘুরে আরেকটু জোরে পা চালালাম। একটু পরে বুঝতে পারলাম আমি কোন সোজা হেঁটে ফিরছিলাম সেইদিকটাও হারিয়ে ফেলেছি। প্রচণ্ড ভয়ে কান্না চলে এলো আমার। তারপরেও পিছনে কেউ আছে সেই ভয়ে কিছুটা দ্রুত পা চালিয়ে এগোতে থাকলাম। একটু পর দম ফুঁড়িয়ে গেলে আমি দাঁড়িয়ে গেলাম। প্রচণ্ড পিপাসা পেয়েছে। আর পারছিনা। ব্যাগ থেকে পানির বোতলটা বের করে খেতে গেলাম। ঠিক তখনি আমার ঠিক ঘাড়ের কাছে কেউ একজন জোরে নিঃশ্বাস ছেড়ে ফোঁসফোঁস করে ডেকে উঠলো ‘আরিফফফফ!!’ বলে। ঘাড়ের লোম সবটুকু দাঁড়িয়ে গেল আমার। প্রচণ্ড আতঙ্কে আস্তে আস্তে পিছন ফিরে যা দেখি তা আমি নিজের কল্পনাতেও কখনো ভাবতে পারিনি। পিছনে যে দাঁড়িয়ে আছে সে আর কেউ না, আমি নিজে। কিন্তু এটা আমার স্বপ্নে দেখা অমনটা আমি না। এই আমি টার চেহারা বিকট আকার ধারণ করে আছে। চোখে মুখে আঘাতের চিহ্ন। একটা অমানুষিক পৈশাচিক হাসি নিয়ে সে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। অবাক হওয়ার চেয়ে আমার ভয় তখন এতোটাই বেশি যে আমি ঘুরে প্রাণ হাতে নিয়ে দৌড়ানো শুরু করলাম। পানি খাওয়ার জন্যে ব্যাকপ্যাকটা মাটিতে নামিয়ে রেখেছিলাম, সেটা সেখানেই থেকে গেল। হাতে শুধু টর্চ লাইটটা জ্বলছে। আমি দৌড়াচ্ছি আমার জীবনের সেরা দৌড়। হঠাৎ কিছু একটাতে পা বেঁধে আমি হুমড়ি খেয়ে পড়লাম আর আমার টর্চটা হাত থেকে পড়ে আমার মুখের দিকে আলো ফেললো। তাড়াহুড়ো করে টর্চ হাতে নিয়ে উঠে আবার দৌড়াতে লাগলাম। একটু এগিয়েই হঠাৎ দেখি সামনে একটা গাছের আড়াল থেকে একটা লোক বেড়িয়ে এলো। লোকটা আর কেউ না, আমি নিজে। এবং তার চেহারা শারীরিক গঠন সবটাই আমার মতো স্বাভাবিক। যার ভয়ে আমি পালাচ্ছি তার মতো ভয়ঙ্কর না। সামনের লোকটা ঠিক তেমনি আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে যেভাবে আমি স্বপ্নে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। হঠাৎ করেই আমার কাছে অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে গেল। সামনের আমিকে সব বলতে হবে। ওকে সাবধান করতে হবে। কথা বলার জন্যে এগিয়ে যেতেই আমার ডান পাশ থেকে ভয়ঙ্কর কিছু একটা দানবের মতো এসে আমার উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো আর আমি প্রচণ্ড যন্ত্রণায় গগনবিদারী চিৎকার দিয়ে চোখে অন্ধকার দেখলাম।

*** ভয়ঙ্কর একটা স্বপ্ন দেখে ধরফর করে জেগে গেলাম। সারা শরীর ঘামে ভিজে জবজব করছে। বিছানার পাশের টেবিল থেকে পানির বোতল টা নিয়ে ঢক ঢক করে খেয়ে নিলাম একবারে। পাশের খোলা জানালা থেকে সুন্দর বাতাস আসছে। ভোরের আলো সবে ফোটা শুরু করছে। সেদিকে তাকিয়ে পুরো স্বপ্নটা মনে করার চেষ্টা করলাম। আস্তে আস্তে মনে পড়তে থাকলে বেশ অবাক হয়ে গেলাম। যেন আমি কোনো একটা গভীর জঙ্গলের ভিতর পথ হারিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। অন্ধকার হয়ে আসছে চারিদিকে। কেন কিভাবে আমি এই জঙ্গলে এলাম সেটা কোনোভাবেই মনে করতে পারলাম না। স্বাভাবিক ভাবেই স্বপ্ন এমনভাবেই শুরু হয়। হাঁটতে হাঁটতে কানে একটা আবছা শব্দ এলে একটা জায়গায় এসে দাঁড়িয়ে গেলাম। মনে হচ্ছে বেশ কিছুটা সামনে থেকে আরো গভীর জঙ্গলের দিক থেকে কিছু একটা দৌড়ে আসছে। আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলাম কোনো জন্তু জানোয়ার আসছে কিনা সেই ভয়ে। একটু পর দেখলাম একটা মানুষের অবয়ব। ঠিক আমার সোজা দৌড়ে আসছে। আর বারবার পিছন ফিরে তাকাচ্ছে। তার হাতে একটা টর্চের মতো কিছু আছে যেটাতে খুব অল্প আলো জ্বলছে। এতো দূর থেকে চেহারা দেখা যাচ্ছেনা তার উপর আবার অন্ধকার এবং আলোর পিছনে লোকটার চেহারা। আমি ঝট করে একটা গাছের আড়ালে দাঁড়িয়ে একটু উঁকি দিয়ে দেখার চেষ্টা করলাম। লোকটা আরো কাছাকাছি এলে হঠাৎ কিছু একটাতে পা বেঁধে হুমড়ি খেয়ে পড়লো। আর তার হাত থেকে টর্চটা পড়ে ঠিক লোকটার মুখের উপর আলো পড়লো। প্রচণ্ড অবাক হয়ে দেখলাম মানুষটা আর কেউ না, আমি নিজেই…

সমাপ্ত।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×