২০ লাখ বছর আগে পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির মানুষ ছিল। আফ্রিকা মহাদেশেই স্বতন্ত্র তিন প্রজাতির মানুষের অস্তিত্ব ছিল। সম্প্রতি গবেষকেরা উত্তর কেনিয়ায় উদ্ধার করা জীবাশ্ম নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে এই তথ্য পাওয়ার কথা দাবি করেছেন। গতকাল বুধবার বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত খবরে এ কথা জানানো হয়। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, আদিম যুগের বানরের সরাসরি বিবর্তনের ফলে মানুষ এসেছে বলে যে প্রচলিত ধারণা রয়েছে, এর বিপরীতে যুক্তি তুলে ধরার মতো জোরালো প্রমাণ হাতে এল তাঁদের।
‘নেচার’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধে গবেষকেরা জানান, আফ্রিকায় এর আগে দুই প্রজাতির মানুষের খোঁজ পেয়েছিলেন তাঁরা। নতুন প্রজাতির মানুষের তথ্য যোগ হওয়ায় আফ্রিকায় মোট তিন প্রজাতির মানুষের সন্ধান পাওয়া গেল। কেনিয়ার নৃতাত্ত্বিকেরা ১৭ লাখ ৮০ হাজার থেকে সাড়ে ১৯ লাখ বছরের পুরোনো তিনটি মানুষের জীবাশ্ম খুঁজে পেয়েছেন। এসব নমুনার মধ্যে রয়েছে মুখ, চোয়ালের হাড়সহ দাঁত।
গবেষকেরা ১৯৭২ সালে একটি মাথার খুলি আবিষ্কার করেছিলেন, যা মানুষের প্রজাতির চেয়ে আলাদা ছিল। আবিষ্কৃত এই প্রজাতির মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম ‘হোমো রুডলফেনসিস’। এই মানুষটির মাথার খুলি অন্য মানুষের চেয়ে ভিন্ন ছিল। কারণ, এর খুলিতে মস্তিষ্কের আকার ছিল তুলনামূলক বড় এবং মুখ ছিল সমতল। কিন্তু গত চার দশকে এই প্রজাতির মানুষের আর কোনো নমুনা আবিষ্কার করতে পারেননি গবেষকেরা। তাই এটাকে নতুন প্রজাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারছিলেন না তাঁরা। তবে কেনিয়ায় নতুন তিনটি জীবাশ্মের খোঁজ পাওয়ায় ১৯৭২ সালের আবিষ্কৃত খুলিটি ভিন্ন প্রজাতির মানুষের বলে তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন।
১৮ লাখ বছর আগে ‘হোমো ইরেকটাস’ পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে পুরোনো প্রজাতি ছিল বলে ধারণা করতেন গবেষকেরা। এই প্রজাতির মানুষের মাথার আকার ছিল ছোট। কিন্তু ৫০ বছর আগেই গবেষকেরা আবিষ্কার করেন, এর চেয়েও পুরোনো প্রজাতি ‘হোমো হ্যাবিলিস’ ওই সময় একই সঙ্গে পৃথিবীতে বাস করত।
গবেষক দলের নেতৃত্বে ছিলেন নাইরোবির টারকানা বাসিন ইনস্টিটিউটের গবেষক মিয়াভ লিকে। তিনি জানান, ‘মানুষের প্রজাতির মধ্যে ভিন্নতা ছিল। অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রে যেভাবে বিবর্তন-প্রক্রিয়া ঘটেছে, মানুষের ক্ষেত্রেও একই রকম বিবর্তন ঘটেছে। পাথরের ব্যবহার শেখা অবধি এ প্রজাতির মানুষের মধ্যে পার্থক্য তৈরি হয়নি।’
লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের গবেষক ক্রিস স্ট্রিংগার বলেন, একেক অঞ্চলে একেক রকমের মানুষের বিবর্তন ঘটেছিল। প্রকৃতি বিভিন্ন ধরনের মানুষ তৈরি করেছিল। এর মধ্যে কেবল বর্তমান প্রজাতিটিই বিবর্তন-প্রক্রিয়ায় টিকে থাকতে সমর্থ হয়েছে।
গবেষণাপত্রের সহ-লেখক গবেষক ফ্রেড স্পুর এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, বিবর্তনের ক্ষেত্রে আগে মনে করা হত সরাসরি বানর থেকে মানুষের বিবর্তন ঘটেছে। সনাতন প্রাইমেট থেকে সরল রেখায় বিবর্তন ঘটেছে বলে মনে করা হলেও বিষয়টি সরল রেখায় ঘটেনি।
২০ লাখ বছর আগে পৃথিবীতে বিভিন্ন প্রজাতির মানুষ
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ
মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(
আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।
ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )
যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন
কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন