somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তবুও ভালবাসি

১১ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ বিকাল ৫:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হুট করেই বিপুল আর মিতার বিয়েটা হয়ে গেল। বিপুলের পরিবার থেকে প্রস্তাব আসার পর খুব একটা দেরি করেনি মিতার পরিবার। তাছাড়া বিপুলকে অনেক আগ থেকেই খুব ভালো করে চেনে মিতার বড় ভাই ডাক্তার আনোয়ার।

এইতো সেদিনের কথা তখন বিপুল একটি কম্পিউটার এডুকেশান সেন্টারের ফ্যাকাল্টি। একদিন বড় ভাইয়ের সাথে করে এসে সেই কম্পিউটার সেন্টার এ ভর্তি হল মিতা। মিতার ক্লাস নেবার দায়িত্ব পড়ল বিপুলের উপর। একটু গম্ভীর প্রকৃতির হলে টিচিং এ বিপুলের তুলনা কেবল বিপুলই। প্রথম প্রথম ভালোই চলছিল বিপুলের পাঠদানে। মিতা বিপুলকে টিচার বলে ডাকত। শুনতে ভালোই লাগত বিপুলের। মিতার কথার বলার স্টাইল ছিল খুবই ভালো। ও কথা বললে মনে হত কেউ যেন ১০০% শুদ্ধ উচ্চারনে কবিতা আবৃত্তি করে চলছে। অনেক সময় বিপুল যখন কোন কিছু বোঝানোর চেষ্টা করত মিতাকে সে হুট করেই একটা ভুল ধরে বসত। বলত টিচার এ উচ্চারনটা কিন্তু আপনার ঠিক হয়নি। এটা এভাবে না হয় ওভাবে হবে। শুনে মনে মনে হাসত আবার খুব ভালোও লাগত তাঁর।

একদিন বিপুলের কি একটা জরুরী কাজ ছিল। এদিকে মিতাও ক্লাসে এসে বসে আছে। শেষে বিপুল এসে ওকে একটা এপ্লিকেশান টাইপ করার জন্য দিয়ে গেল। বলল যে তুমি একটু প্র্যাকটিস কর আমি আসছি। কিছূক্ষন পরে বিপুল এসে দেখে যে মিতা এক লাইনও টাইপ করেনি। জিজ্ঞেস করলে বলল আমার ইচ্ছে হয়নি তাই করিনি। খুব রাগ হল বিপুলের। কিছূ বলল না। ক্লাস কো-অর্ডিনেটরকে জানিয়ে দিল কাল থেকে আমি আর মিতার ক্লাস করাতে পারবোনা। আপনি বরং রাহাত সাহেবকে ক্লাসটা দিন।

এরপর থেকে মিতা আসত আর রাহাত স্যারের কাছেই ক্লাস করত। পুরো দুইমাসে একবারের জন্যও মিতার সাথে কোন কথা বললনা এবং কি তার দিকে ভালো করে তাকায়ওনি বিপুল। শেষ যেদিন মিতার ক্লাস সে দিন জানালার পাশে বসে রাস্তার দিকে তাকিয়ে কি যেন ভাবছিল বিপুল। হঠাৎ করে মিতা পাশে এসে বলল যে

টিচার মনটা কি আজ খূব খারাপ?
কিছুক্ষন চুপ থেকে বিপুল বলল না।
সে রাতেই বিপুলের মোবাইলে প্রথম কল আসলো মিতার কাছ থেকে।
কলটা রিসিভ করল বিপুল।
হ্যালো কে বলছেন?
আমি মিতা
কোন মিতা?
চিনতে পারছেন না?
পরিচয় না দিল চিনবো কি করে
চিনার দরকার নেই। আমি আপনাকে চিনি। আপনার নাম টিচার।
মিতার কাছ থেকে টিচার শব্দটা শুনে কোথায় যেন বিপুলের সব রাগ হারিয়ে গেল। বলল- কেমন আছ?
এইতো ভালো টিচার। আপনাকে খুব মনে পড়ছিল তাই ফোন করলাম।

সেই থেকে শুরু। ক থেকে কমলাকান্তের দপ্তর পর্যন্ত আলোচনা। একদিন মিতার সাথে কথা না বলতে পারলেই মনটা যেন কেমন কেমন করত বিপুলের। আর একদিন বিপুলের ফোন না পেলেই কান্না শুরু করে দিত মিতা। দুজনের ভালো লাগা মন্দ লাগা নিয়ে আলোচনা হত। আজ আবার বিকেলে বিপুলের ফোনটা বেজে উঠে। তাকিয়ে দেখে মিতার ফোন।

হ্যালো কি ব্যাপার আজ হঠাৎ করে বিকেলে ফোন দিলে যে। এই সময়েতো কখনো ফোন করোনা তুমি
না হঠাৎ তোমাকে মনে পড়ল তাই
ফোন করেছ ভালোই হয়েছে। আজ কেন জানি ভালো লাগছেনা তাই রিকশা করে ঘুরতে বেরিয়েছি। তোমারতো সমস্যা, না হয়ে তোমাকে সাথে নিয়ে,বের হতাম।
তাই? তুমি বুঝি রিকশায় ঘুরা পছন্দ কর?
হ্যাঁ
আর কি কি পছন্দ কর?
অনেক কিছু। এখন বলব না। বিয়ের পরে বলব।
বাহ! শখ কত আবার বিয়ে
আচ্ছা যাও তোমাকে বিয়ে করব না
কি বললে আমাকে বিয়ে করবে না। তো শুনি কাকে বিয়ে করবে?
মিতাকে। আচ্ছা মিতা বলতো তুমি কি কি পছন্দ কর?
এখন না বিয়ের পরে বলব
আমার কথা আমাকেই ফিরিয়ে দিচ্ছ। আচ্ছা পছন্দটা থাক তুমি কি কি অপছন্দ কর তাই বল
আমি?
হ্যাঁ
বলব?
বলনা প্লিজ
আমি পছন্দ করিনা মিথ্যে কথা বলা। তারপর কি যেন ভুলে গেছি। ও মনে পড়েছে নাক ডাকা।
ইন্টারেষ্টি ব্যাপার
নিউ টপিকস
হতে পারে
এই শুন কাল কিন্ত মামা যেতে পারে তোমার ভাইয়ার চেম্বার এ
কেন?
কেন আবার। আপনাকে তার ভাগনের বউ করে নিয়ে আসতে
আমি ভাইয়াকে বলব যে ভাইয়া আমি এই মুহূর্তে বিয়ে করবনা
আচ্ছা ম্যাডাম আপনার ইচ্ছা।

আজ মনে হয় মিতার চেয়ে সুখি কেউ নেই পৃথিবীতে। তার পাশে শুয়ে আছে বিপুল। ঘড়ির কাটা রাত চারটার ঘরে। বিপুলকে যতটানা দুর থেকে দেখে ভালোবেসেছে মিতা আজ সন্ধ্যা রাত থেকে বিপুলের কথা শুনে ভালোবাসাটা একলাফে যেন হিমালয় অতিক্রম করে ফেলেছে। মনে হয় ঘুমিয়ে পড়েছে বিপুল। বিপুলের কপালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে মিতা। অবাক চোখে তাকে দেখছে। এক ভালোলাগা আচ্ছন্ন করে ফেলেছে মিতাকে। কিসের যেন একটা স্পষ্ট শব্দ টের পাচ্ছে মিতা। কোথা থেকে আসছে? বুঝতে পারে মিতা। বিপুল নাক ডেকে ডেকে ঘুমাচ্ছে। যে জিনিসটা মিতার অপছন্দের ছিল সেটাই আজ সারাজীবনের জন্য তার সঙ্গী হল। মনটা কেন জানি খারাপ হয়ে গেল তার। কি করবে সে এখন? পুনরায় বিপুলের মুখের দিকে তাকায় সে। ভালবাসার কাছে সবই তুচ্ছ। মাথাটা বিপুলের বুকে রেখে ঘুমিয়ে পড়ে সে।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কম্বলটা যেনো উষ্ণ হায়

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৭


এখন কবিতার সময় কঠিন মুহূর্ত-
এতো কবিতা এসে ছুঁয়ে যায় যায় ভাব
তবু কবির অনুরাগ বড়- কঠিন চোখ;
কলম খাতাতে আলিঙ্গন শোকাহত-
জল শূন্য উঠন বরাবর স্মৃতির রাস্তায়
বাঁধ ভেঙ্গে হেসে ওঠে, আলোকিত সূর্য;
অথচ শীতের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪৪


আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৬

হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

শহীদ ওসমান বিন হাদি, ছবি অন্তর্জাল থেকে নেওয়া।

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?

লিখেছেন এ আর ১৫, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৩

হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?


হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×