বৃটিশদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর আমরা আমাদের ভূ-খন্ডকে স্বাধীন বলেই জানতে শুরু করি। এরপর পাকিস্তানের শোষণ থেকে যখন আমরা মুক্তি পেলাম তখন আমরা আবার আমাদের দেশকে স্বাধীন বলে পরিচয় দিতে লাগলাম। এখন কথা হল প্রকৃত স্বাধীনতা আমরা কখন পেয়েছি। না কি আমরা এখনো প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদ্বন করতে পারিনি।
যেভাবে আমাদের দেশে আইনকে নিয়ে রাবারের সুতার মত টেনে লম্বা আর খাটো করা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে আমাদের দেশের স্বাধীনতাকে আবার নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। দেশ প্রেম আমাদের কাছ থেকে এমনভাবে বিদায় নিয়েছে যে আমরা আজ শিক্ষকই হই আর দেশ পরিচালকই হই তা তোয়াক্কা করার সময় আমদের নেই। নিজের আখের গোছাতে পারলেই যেন বাঁচি। নিজের ইচ্ছে মত আমরা আমাদের আইন তৈরী করছি আর প্রয়োজনে তার বিলুপ্তি ঘোষণা করছি। কোনো ক্ষেত্রে এক আঙ্গুল দেখাতে বললে আমাদের হাত হারিয়ে যাচ্ছে আর কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক আঙ্গুলের বদলে আমরা নিজের দশ আঙ্গুলতো দেখাচ্ছি পারলে সাথে অন্যেরটাও।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই দেশের মানুষ যতগুলো সরকারের শাসন দেখেছে তার মধ্যে অন্যতম হল বর্তমান সরকার। স্বাধীনতার সর্বচ্চো শিখরে আরোহন করছে এখন এই দেশের মানুষেরা। তবে এই কথা বর্তমান সরকারের মন্ত্রী থেকে তাদের শুভাকাংখিদের। তবে নির্দিধায় বলতে হবে যে সরকার পক্ষের যারা আছে তারা এখন যে ভাবে তাদের কর্মকান্ড চালাচ্ছে তাতে তাদের কাছে এমনটি মনে হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু দেশের মানুষগুলো সব যে সরকার পক্ষের নয় তা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই বলেই মনে করি।
নির্বাচনের দিন রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ছাত্রদলে ছেলেদের উপর হামলা করে ও তাদেরকে হল থেকে বের করে দেয়। এই থেকে শুরু হল তাদের চর দখলের ন্যায় হল দখলের কার্যক্রম। যার অংশ হিসেবে কখনো তারা অন্য দলের উপর আবার নিজেদের মধ্যে কোপাকুপি করেছে আবার খুনও করেছে। তাদের কারনে হাতে গোনা সকল বিশ্ববিদ্যালয়ই কিছুনা কিছুদিনের জন্য বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা এখন তাদের জীবননের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমাদের দেশের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল আমাদের দেশের কোনো আন্দোলন শুরু হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দরজা থেকে। তাই যখন বিশ্ববিদ্যালয়ই রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে অন্যায় কাজগুলোকে প্রশ্রয় দেয় তখন দেশের কি অবস্থা তা কি বলার অপেক্ষা রাখে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে বেশ কয়েকবার। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের মধ্যকার মারামারি এতো নিত্যদিনের খেলা। ছাত্রলীগ কর্তৃক অন্যাদলের উপর হামলা বিষয়টি ছাপানোর জন্যা প্রতিদিনের প্রত্রিকা গুলোতে এক থেকে দু’পাতা বরাদ্দ করলেও মনে হয় কম হয়ে যাবে।
এই বিষয়ে সরকার কোনো নজরও যদি দিতেন তাহলে যে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর জীবন বেঁচে যেত তা নির্দিধায় বলা যায়। শিক্ষার্থীদের জীবন বাঁচলে তবে দেশেও বাঁচবে। কারন এই শিক্ষার্থীরাই একদিন এই দেশের পরিচালক হবে। আমরা যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা শুধু শুনেছি তারা আজ কিন্ত এই দেশে স্বাধীন আছি বলতে পারছিনা। কারণ পরিবেশ আমাদের স্বাধীনতার কথা বলতে বাধা দিচ্ছে। হয়তো দেশের এই মারামারি, কাটাকাটি বন্ধ করেন আর না হয়তো কেউ শুধু শুধু স্বাধীনতার কথা বলবেন না। এই মিথ্যা স্বপ্ন দেখতে ভাল লাগেনা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



