রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সাংবাদিককে পিটিয়ে আহত করেছেন। গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ডেইলি স্টার-এর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সহসভাপতি এ এম জাহিদকে ছাত্রলীগ পিটিয়ে আহত করে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র।
এদিকে একই দিনে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এমপি বলেছেন, দেশ ও জাতির উন্নয়নে সাংবাদিকদের অবদান অপরিসীম। সাংবাদিকরা সমাজের দর্পণ, জাতির বিবেক। তবে অনেক সময় কতগুলো সংবাদ পরিবেশিত হয়ে থাকে যাতে সত্যের লেশমাত্র থাকে না। সাংবাদিকদের এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। কিন্তু কথা হল ছাতলীগকে এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম থেকে বের হয়ে আসতে বলবে কে।
তিনি আরো বলেন, বাস্তব অবস্থা যাই হোক না কেন সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়া দরকার। একে অপরের প্রয়োজনে এমন সম্পর্ক থাকা চাই। তিনি দলমত নির্বিশেষে সবার সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির উন্নয়নে সাংবাদিকদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহবান জানান।
কথা হল এর ব্যতিক্রম হলে সাংবাদিকদের উপর হমলা যে হবেনা তা কিন্তু তিনি বলেননি।
হামলার শিকার সাংবাদিক জানান, বুধবার রাত সাড়ে দশটার দিকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশন বাজারের একটি হোটেলে রাতের খাবার খেয়ে সোহরাওয়ার্দী হলের সামনে তাঁর কয়েকজন বন্ধু ও সহকর্মীর সঙ্গে বসে গল্প করছিলেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের স্নাতকোত্তরের ছাত্র ও ছাত্রলীগের নেতা রায়হান দুলাল সেখানে তাঁকে (জাহিদ) দেখতে পেয়ে মোটরসাইকেল থেকে নামেন। এরপর দুলাল গত ১৮ আগস্ট এবং গত বছরের ২২ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ ও তাঁকে (দুলাল) নিয়ে দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করার কারণ জানতে চান।
জাহিদ জানান, একপর্যায়ে দুলাল তাঁর ওপর চড়াও হন এবং তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তিনি এর প্রতিবাদ করলে দুলাল তাঁকে এলোপাতাড়ি কিলঘুষি মারতে থাকেন এবং পাশে থাকা একটি বাঁশের লাঠি দিয়ে মারধর করে আহত করেন। এ সময় সেখানে থাকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের রাজশাহী প্রতিনিধি ইসমাইল হোসেন, জনকণ্ঠ পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি শহীদুল ইসলাম খানসহ আরও কয়েকজন তাঁকে উদ্ধার করেন। রাতেই তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়।
এর আগে গত ১৫ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ্ মখদুম হলে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিশেষ খাবারের টোকেন নেওয়া নিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীরা নাসরুল্লাহ নাসিম নামের সংগঠনের আরেক কর্মীকে মারধরের পর হলের দোতলা থেকে নিচে ফেলে দেয়। হাসপাতালে নয় দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে নাসিম গত ২৩ আগস্ট মারা যান। এর রেশ না কাটতেই ছাত্রলীগের কর্মীরা গত ৩০ আগস্ট রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের স্নাতকোত্তর বিভাগের ছাত্র মশিউর রহমানের হাতে-পায়ে পেরেক ঠুকে এবং হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



