আইজ কাইলকার প্রাণীগুলান বড়ই অদ্ভূত দৃষ্টিতে উনার দিকে চাইয়া থাকে। রফিক শেহমান বুঝবার পারেন না এইসব অবোধ প্রাণীরা ক্যান তার দিকে ইদানিং ফ্যালফ্যালাইয়া চাইয়া থাকে। হালকা-পাতলা শরীর নিয়া তার অবশ্য বেশ গর্ব রয়া গ্যাছে। তিনি ভাবেন, তার এমন শরীরে হরেক রঙের প্রেমলীলা চালান যায়, নো ফ্যাক্টর।
হাতের পাশে ফোনখানা বাজতাছে। ধরতে ইচ্ছা করতাছে না। বাড়িতে আবার তার বউ ছালেয়া শেহমান নাই। অতএব গর্তে লুকায়া থাকনে কাজ নাই বুইঝাই অনিচ্ছাস্বত্বেও ফোন ধরলেন রফিক শেহমান।
-হ্যালো
-রফিক ভাই, আমি রমিত সাবিব কইতাছি।
শেহমান প্রমাদ গোনেন।
-কি ব্যাপার, পয়সা তো পাইয়া যাইবা।
-না, আসলে পয়সার লাইগ্যা না। আপনের ডাক শুইনা তো পয়সার দিকে চাইয়াই আপনার লগে আইছিলাম। শেষ বেলায় তো আর শ্যাষ রক্ষা হইলো না। অহন একখান দয়া যদি করেন।
মনে বল ফিরা পায় শেহমান। পিঁপড়ার মতোন শরীর লয়া বাঘের মতোন কণ্ঠ করেন
-কি দয়া?
-রফিক ভাই, আমগোরে নাহয় খেদাইছেন ভালো কথা। কিন্তু যাগোর খেদাননি, তারা তো রয়া গেছিলো। এই যেমন খামিরুল শিসলাম ঠোকন। যদিও তারা আমগো লগে প্যাক্ট হইিেছলো। তাও তো তাগোর আপনি নিজের লোক মনে কইরায় প্রথমে খেদাইতে চান নাই। তারা থাকতে আমার দেয়াডাতে আপনি এমন একজনরে বসাইছেন যে কুত্তা না ঘর কা না ঘাটকা। দয়া কইরা সেই চেয়ারডার কথা বিবেচনা কইরা যদি হেরে একটু মুক্তি দিতেন।...
কথোপকথন দীর্ঘ হলো আরো কিছুক্ষণ। হেরপর রফিক শেহমান ফোন রাইখ্যা ভাবতে বইলেন। মনের আগাড়ে বাগাড়ে চ্যাগাড় দিয়া উঠলো কতো যে কথা! এমনি কি তার ভাগ্য। যেইহানেই হাত দেন, সেইহানেই কোনো না কোনো ল্যাঠা লাগে! আগেই তো ভালো আছিলেন, মাসে দুএকবার চটি বই বাইর করতেন। সেইহান দিয়া তো অন্ততঃ কিছু লোকজনরে খোশ রাখন যাইতো। কিন্তু অহন কি হইবো? তিনি অবশ্য একখান শক্তিশালী লেখা দিছেন সিরিজ আকারে। লেখার নাম 'ডোলিং রেইজ'। সেই লেখা দিয়া অবশ্য কি হইছে না হইছে জানবার না পরলেও নিজের মনের খেদ যে গেছে এইডাতেই তিনি খুশি।
রফিক শেহমান হাতমুখ ধুইতাছেন। নামে-কামে সবখানেই তিনি বহমান হইয়া থাকতে চাইতেন, অহনও চান। বেসিনে পানি পড়তাছে সেইডাও কি বহমান? শেহমানের অতো কিছু জানবার মন চাইলো না। তার মনডাও অহন বহমান হইয়া গ্যাছে। দীর্ঘ 12 বছর আগে য্যামনে মনডা বহমান হইয়া এক ম্যাডামের পাতে গেছিলো। তেমনে আইজও সেই বহমান মন নিয়া নতুন কারো পাতে যাওন যায় কিনা, সেইডা নিয়া মহাগবেষণায় বসলেন রফিক শেহমান।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



