somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাদকের জগতে নতুন সংযোজনঃ ডান্ডি বা গ্লু স্নিফিং

৩০ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছুদিন আগে ঈদের ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম। তো একদিন সন্ধায় একটা ইলেক্ট্রোনিক্স এর দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। কিছুক্ষন বসে থাকার পর একটা জিনিস খেয়াল করলাম যে অল্প বয়স্ক কিছু ছেলে আসছে দোকানে আর ডেনড্রাইট অ্যাডহেসিভ নামক ভারতীয় সস্তা গাম কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আমি এটা দেখে কৌতূহলবশত দোকানদার ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই মানুষের কি আজকাল সবকিছু একটু বেশী বেশী ভাঙে নাকি? :P সে আমার প্রশ্নের জবাবে এমন একটা হাসি দিলো যা দেখে আমার পিলে চমকে গিয়েছিলো।B:-) পরে সে বলে “আরে মিয়াঁ তুমি তো ঢাকা থাইকা দেখি কিছুই জানো না।/:) ধান গাছে তক্তা হয় কিনা মার্কা প্রশ্ন করলা। আরে মিয়াঁ এইটা দিয়া তো পোলাপাইনে নেশা করে।:-< আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম।:-/ শেষে আমি বেশ কিছুদিন এইটার উপর ছোটোখাটো একটা গবেষণা করার চেষ্টা করলাম।/:) যদিও ভার্সিটি লাইফের মত আমার বন্ধুরা আমার এই গবেষণায় ছিল না।:| তাই একা একাই সব করতে হয়েছে।:| যাই হোক এবার আসল কথায় আসি।B-)

ডান্ডি বা গ্লু স্নিফিং কি?
মাদকের জগতের নতুন এক নাম ডান্ডি।;) স্থানীও ভাষায় এটা ডান্ডি নামেই সুপরিচিত। ইংরেজিতে একে গ্লু স্নিফিং ( glue sniffing ) বলে। নামটা শুনতে বেশ মজার আর কৌতুহলপূর্ণ হলেও এই জিনিসটা কিন্তু মোটেও মজার নয়। বরং খুবই মারাত্মক একটা নেশার দ্রব্য।:-&
গ্লু মানে হল গাম বা আঠা আর স্নিফিং মানে হল আঘ্রান বা জোরে জোরে নিঃশ্বাসের মাধ্যমে টানা। তার মানে দাড়ায় যে জোরে জোরে নিঃশ্বাস এর মাধ্যমে আঠার যে ঘ্রান থাকে তা নাকের মধ্যে নেওয়ার নামই হল গ্লু স্নিফিং।/:) তবে একে ডান্ডি বলা হয় কারণ, এই কাজে আমাদের দেশে সাধারণত ডেনড্রাইট অ্যাডহেসিভ নামক ভারতীয় সস্তা গাম ব্যাবহার করা হয়। আর ডেনড্রাইট কে সংক্ষেপে ডান্ডি বলা হয়।:-B
Inhalants are a broad range of drugs whose volatile vapors are taken in via the nose and trachea.They are taken by volatilization, and do not include drugs that are sniffed after burning or heating. ( উইকিপিডিয়া )



কিভাবে নেয় এর ডান্ডি?
পলিথিনের ব্যাগে ডেনড্রাইট ঢেলে তারপর সেটার মুখটা হাতের মুঠে আবদ্ধ করে একটা ছোটো ফাঁকা রেখে সেই ফাঁকা জায়গাটা নাকে লাগিয়ে তারপর সেটার ঘ্রান নেয়। :-B



সেবনকারীদের ধরনঃ
সাধারণত অল্পবয়স্ক টিনেজরা এই নেশায় জড়িয়ে পরে। দামে সস্তা এবং সহজলভ্য হওয়ায় এই নেশায় আসক্ত হওয়ার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এই টিনেজদের মধ্যে পথশিশুর সংখ্যা বেশী। আর সেইসব বাচ্চারাও আছে যারা বাসায় একাকী থাকে বাবা-মা হীন অবস্থায়। এরা প্রথমে কৌতূহলবশত এর ঘ্রান নিয়ে থাকে।B:-) আর প্রথমদিকে এটা একটু উটকো লাগলেও বেশ ভালোই লাগে।B:-) আর এর থেকেই এরা এই মরন বিষের প্রেমে পড়ে যায়।:-&
ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ড্রাগ এবিউস এর মতে, “ the most serious inhalant abuse occurs among children and teens who "...live on the streets completely without family ties.



পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ
এর প্রতিক্রিয়া খুবই বিপদজনক।:| এর ব্যবহারকারীরা সাধারণত হায়পক্সিয়া (অক্সিজেনের অভাব) মারা যায় কারণ, এটি অক্সিজেন বন্ধ করে মস্তিষ্ক এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে যেটি মৃত্যুর কারণ পর্যন্ত হতে পারে।:-& নিউমোনিয়া, কার্ডিয়াক ফেইলরও হতে পারে। এছাড়া এর সেবনকারী অনির্দেশ্য আচরণ করতে পারে, ঝলসিত চেহারা মানে চেহারা বিকৃত হতে পারে, মাথা ঝিন ঝিন করতে পারে, মুখের চারপাশে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে, বমি বমি ভাব হতে পারে।:-&

আমাদের করনীয়ঃ
নেশা নির্মূল করা কোন কালেই সম্ভব হয়নি আর হবেও না। তবে এই ডান্ডি নেশার গ্রহীতারা যেহেতু বেশীরভাগই টিনেজ তাই এই ব্যাপারটা খানিকটা আমাদের নাগালের মধ্যে।এই ব্যাপারে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। বিক্রেতাদের একটু সৎ মনভাবাসম্পন্ন হতে হবে। আর কর্পোরেট বাবা-মা’দের তাদের সন্তানদের প্রতি একটু খেয়াল রাখতে হবে। এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলো যারা এইসব নিয়ে কাজ করছে তারা একটু নজর দিতে পারে এই দিকটাতে। তাহলেই অনেকাংশে এই মরনঘাতি নেশার হাত থেকে আমাদের শিশুদের আমরা বাঁচাতে পারবো বলে আমি মনে করি। :)

- একজন আরমান

উৎসর্গঃ
আমার ইউনি'র সকল প্রিয় শিক্ষকবৃন্দদেরকে
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৬:১৮
৮৭টি মন্তব্য ৮৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×