”নিশ্চয় সালাত যৌন অশ্লীলতা ও অবিশ্বাস নিবারণ করে” (সূরা আনকাবুত, আয়াত: ৪৫)।
অত্যন্ত সহজ ভাষায় মহান আল্লাহ পরিষ্কার বলে দিয়েছেন সালাত কোন কোন কার্য থেকে বিরত রাখবে। আয়াতটি শুরু হয়েছে ’নিশ্চয়’ দিয়ে অর্থাৎ আল্লাহ এখানে নিশ্চয়তা দিচ্ছেন যে সালাত অবশ্যই যৌন অশ্লীলতা ও অবিশ্বাস নিবারণ করে। সোজা কথায় সালাত কায়েম হয়ে গেলে যৌন অশ্লীলতা ও অবিশ্বাস আর থাকবে না। আর কায়েম না হলে থাকবে। কিন্তু পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবীতে আমরা কোন চিত্রটি দেখছি। দেখা যাচ্ছে যিনি নামায পড়ছেন সেই তিনি আবার যাবতীয় অশ্লীল কাজে মেতে উঠছেন, যেমন- সম্মানী ব্যক্তি (!) বলে প্রকাশ্যে কোন নারীর শরীরে হাত দিতে না পারলেও মনে মনে সেই নারীর সাথে বিছানায় পর্যন্ত চলে যান। মানুষ বাহির থেকে দেখে লোকটি খুব সম্মানী কিন্তু তার ভেতর যে অশ্লীলতায় ভরপুর তা মহান আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ তো দেখছে না। দেখা যাচ্ছে আপনি মানুষকে ভয় পাচ্ছেন আল্লাহকে নয়। মসজিদে কিংবা জায়নামাযে যাদের দেখছেন তারা কিন্তু প্রকাশ্যে যৌন অশ্লীলতা করে বেড়ায় না। করে গোপনে। মহান আল্লাহ হাত দিয়েছেন সেখানে। প্রকাশ্য কিংবা গোপন সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করতে হবে। আমাদের সমাজে দেখা যায় কোন মানুষ মারা গেলে জানাযার পর কেউ একজন বলে উঠে, ’লোকটি কেমন ছিল’। শোকে-দুঃখে কাতর আমরাও বলে উঠি, ’খুব ভাল ছিল’। ’ভাল ছিল’ এটা তো লোকটির বাহিরের রূপ, ভেতরে সে কেমন ছিল আপনি কি জানেন? অথচ আপনি সাক্ষ্য দিলেন ’ভাল ছিল’! লোকটি যদি ভাল হয় তো বেঁচে গেলেন কিন্তু যদি উল্টোটি হয় তবে তো আপনি মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়ার অপরাধে অপরাধী। নিজেরই ঠিক নেই আরো দিচ্ছি মিথ্যা সাক্ষ্য! অর্থের কাছে বিক্রি হয়ে যাওয়া কিছু ’আলেম’ আমাদের শিখিয়েছেন, কোন মৃত ব্যক্তিকে চল্লিশজন ’ভাল’ বললে মহান আল্লাহও নাকি তাকে ভাল বলবেন! দেখা যাবে কেয়ামতের ময়দানে ভালোদের কী পরিণতি হয়।
আবার দেখা যাচ্ছে যিনি নামায পড়ছেন সেই তিনি আবার যাবতীয় অবিশ্বাসে মেতে উঠছেন। সুদ-ঘুষ হারাম এটা আমরা বিশ্বাস করি কিন্তু দেখা যায় যিনি নামায পড়েন তিনি আবার সুদ-ঘুষে মেতে উঠেন! অনর্থক কথা এবং কাজ ইসলাম সমর্থন করে না। কিন্তু আমরা নামায পড়ি আবার ক্রিকেট-ফুটবলের মত অনর্থক কাজে মেতে থাকি! পরের জায়গা, পরের টাকা, পরের স্ত্রী ইত্যাদির দিকে চোখ দিতে ইসলাম অনুমোদন দেয় না। আমরা নামায পড়ি আবার চিন্তা করি কীভাবে অসহায়ের জায়গা নিজের আয়ত্তে নিয়ে আনা যায়। এভাবে হিসেব করলে দেখা যাবে আমরা নামায পড়ি ঠিকই কিন্তু সাথে সাথে অবিশ্বাসের কাজেও মেতে উঠি। তো আপনিই বলুন এ নামায কীভাবে আপনাকে জান্নাতে নেবে?
বর্তমানে দেখা যাচ্ছে মসজিদ-মাদ্রাসা-এতিমখানা-নামাযীওয়ালা-দাড়িওয়ালা-পাগড়ীওয়ালা-টুপিওয়ালা-ওয়াজ-লেকচার সবগুলোই ক্রমাগত বাড়ছে সাথে সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নিত্যনতুন পাপকার্যও! কেন? কারণ যিনি নামায পড়াচ্ছেন তিনিও জানেন না কেন পড়াচ্ছেন আর যিনি পড়ছেন তিনিও জানেন না কেন পড়ছেন। খাবার খেলে জিহ্বা মজা পায়, পেট ভরে, দেহ শান্তিতে থাকে। পেট যে খাবার বুঝে পেয়েছে এটা আমরা টের পাই যখন ভেতর থেকে একটা শব্দ আসে যাকে ’ঢেক’ বলা হয়। ঠিক নামায কায়েম করতে পারলে ক্বলব মজা পায়, সূক্ষ্ম ইন্দ্রিয়গুলো (লতিফা) নূরের পরশ পেয়ে ভরে উঠে, দেহ পবিত্র থাকে। সূক্ষ্ম ইন্দ্রিয়গুলো (লতিফা) যখন নূরের পরশ পায় তখনও ভেতর থেকে একটা শব্দ আসে। আর বলা যাবে না। নিজেকে প্রশ্ন করুন নামায পড়বেন না কায়েম করবেন।
৩য় পর্বঃ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:১১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




