somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'ধর্মবিরোধী' কর্মকাণ্ডের অভিযোগে তওবা পড়ানো হলো ২৮ বাউলকে!

১২ ই এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৫:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চুল ও গোঁফ কর্তন!
কোন দুনিয়ায় আছি ?? ছি !! এই লজ্জা কোথায় রাখি। মানুষের মন মানষিকতা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়ছে !! আমরা নাকি সভ্য হচ্ছি...ধর্ম কি মানুষকে এভাবে অসভ্য হতে শেখায়?
আমাদের দেশে শত শত বছর ধরে যে বাউল শিল্পীরা আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য ধারণ করে আসছেন,গ্রামের সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে শহর নগরের মানুষের নির্মল আনন্দের খোরাক জুটিয়ে এসেছেন,কতকিছু শিখেছি আমরা তাদের কাছ থেকে..তারা নাকি এখন ধর্ম বি্রোধী ! তাদের ধর্ম কি হবে সেটা এখন তথাকথিত মৌলবাদিরা ঠিক করে দেবে।
ধিক্কার জানাই এমন অসভ্য ও বর্বর কাজের বিরুদ্ধে।
আমরা চাই এর প্রতিবাদ হোক,বিচার হোক । অন্যের ধর্মকে কেড়ে নিয়ে তার উপর এমন অত্যাচার করার অধিকার কোন মানুষের নেই। ধর্মেও তা নিষিদ্ধ। এই ধরনের কর্মকান্ডর উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা হোক। কারন আমরা চাইনা বাংলাদেশ একটি তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত হোক।

সংবাদ কালের কন্ঠ

রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুরে লালন ভক্ত ২৮ বাউলকে লাঞ্ছিত করার পর মাথার চুল ও গোঁফ কেটে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। 'ধর্মবিরোধী' কর্মকাণ্ড চালানোর কারণ দেখিয়ে বাউলদের মসজিদে নিয়ে তওবাও পড়ানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ও অভিযুক্তদের বিচারের দাবিতে গত বুধবার রাতে পাংশা টেম্পোস্ট্যান্ডে সভা করেন স্থানীয় শাহ জুঁই বাউল শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা।
শাহ জুঁই বাউল শিল্পীগোষ্ঠীর উপদেষ্টা অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, হাবাসপুর ইউপির চর রামনগর গ্রামে গত ৫ এপ্রিল লালন ভক্ত প্রবীণ বাউল মোহম্মদ ফকিরের বাড়িতে সাধু সংঘের দুই দিনব্যাপী বার্ষিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ২৮ জন লালন ভক্ত আসেন। সমাপনী দিনে তাঁরা ঢোল ও বাদ্যযন্ত্র নিয়ে গান করছিলেন। এ সময় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা গিয়ে লালন ভক্তদের লাঞ্ছিত করে। মসজিদে নিয়ে গিয়ে বাউলদের গান না গাওয়ার বিষয়ে তওবা করানোর পাশাপাশি তাঁদের লম্বা চুল ও গোঁফ কেটে দেওয়া হয়।
নজরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর জানান, ঘটনার পরপরই লালন ভক্তরা তাঁর কাছে যান। তিনি সবাইকে নিয়ে পাংশা থানায় যান। এরপর বাউল মোহম্মদ ফকির ১৩ জনকে আসামি করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
থানায় অভিযোগকারী বাউল মোহম্মদ ফকির বলেন, 'প্রতিবছরের মতো এবারও সাধু সংঘের উদ্যোগে আমাদের বাড়িতে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষ দিন মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে পাড়া বেলগাছী গ্রামের ইউনুছ কারি ও চর রামনগর গ্রামের করিম বাজারী, জিন্দার শেখ, জয়নাল শেখসহ প্রায় অর্ধশত লোক আমার বাড়িতে আসে। তাঁরা অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলে একটি মাইক, তিনটি মাইক্রোফোন, তিনটি ব্যাটারি, তিনটি টিউব লাইট ও একজন শিল্পীর বাদ্যযন্ত্রসহ বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এরপর তারা ২৮ জন লালন ভক্তকে পাশের মসজিদের সামনে নিয়ে গিয়ে তওবা পড়ায় এবং কাঁচি দিয়ে এলোমেলোভাবে তাদের চুল ও গোঁফ কেটে দেয়।'
ওই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ আওয়ামী লীগের নেতা ও সমর্থক বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হামলাকারী দলের সঙ্গে ছিলেন পার্শ্ববর্তী কালিকাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিউর রহমান নবাব। ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বাউলদের 'অনৈসলামিক' কর্মকাণ্ডকে দায়ী করেন। আতিউর কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মুসলিম ধর্মীয় রীতি না মেনে বাউলরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে জিন্দা ফয়তা ও এক ওয়াক্ত নামাজ আদায়সহ অনুষ্ঠানের নামে মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করছিল। এটা এলাকার মুসলি্লরা মেনে নিতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে বাউলদের সঙ্গে আলোচনা করার সময় এলাকার কিছু যুবক তাদের চুল ও গোঁফ কেটে দেয়।'
বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে যাওয়া হাবাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব আবদুল আজিজ বলেন, যেসব বাউল ভক্তকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে তাঁদের কারো বয়স ৬০ বছরের নিচে নয়। অন্যদিকে থানায় অভিযোগকারী বাউল মোহম্মদ ফকিরের ছেলে জিন্না মোল্লার স্ত্রী হাসিনা বেগম জানান, ঘটনার পর থেকে লালন ভক্তরা চাপের মুখে রয়েছেন। এলাকার কথিত মাতব্বর ও প্রভাবশালী লোকজন তাঁদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
এ ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা ও পাংশা থানার উপপরিদর্শক নাসির উদ্দিন গতকাল বৃহস্পতিবার মোবাইল ফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'ধর্মীয় অনুভূতির সঙ্গে বিষয়টির সংশ্লিষ্টতা থাকায় খুব সতর্কতার সঙ্গে এগোতে হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য বুধবার দুইপক্ষকে থানায় ডাকা হয়, কিন্তু বাউলদের পক্ষের কেউ না আসায় সুরাহা করা সম্ভব হয়নি। আগামী রবিবার আবার দুইপক্ষকে ডাকা হয়েছে।'
১০টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×