somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবন থেকে নেয়া!! (মালয়েশিয়ায় বাংগালি)

০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ থেকে প্রায় ৩ বছর আগের কথা। মালয়শিয়া আসার পর থেকেই নানান রকম অসুখ লেগেই আছে, এখান কার আবহাওয়া আমি মানিয়ে নিতে পারিনি। দেশে কনকনে শীত রেখে এসেছি আর এখানে গ্রীস্মের গরম। প্রায় প্রতি দিন বৃষ্টি হচ্ছে একটু একটু করে। এভাবে ৬মাস কাটিয়ে দিলাম এখন কিছুটা মানিয়ে নিয়েছি। তবে বৃষ্টিতে ভিজলেই জ্বর এসে যায়,যা দেশে কখনই হতনা। এমনই বৃষ্টি ভেজা জ্বর নিয়ে ক্লিনিকে গিয়েছি ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার কিছু পরিক্ষা করে আমাকে হাসপিটালে পাঠিয় দিলেন। আমি ডেঙ্গু ক্রান্ত। বাংলাদেশের সাথে মালয়েশীয়ার এই একটা জিনিসে ভিশন মিল, দুই দেশেই মশার চাষ হয়:P
মালয়েশিয়া সেন্ট্রাল হসপিটাল আমাকে ভর্তি করা হল। তবে এখাকার ডেঙ্গু চিকিৎসা মনে হয় উন্নত ধরনের। উন্নত বলছি কারন আমাকে সুস্থ করতে তাদের মাত্র তিন দিন সময় লেগেছে।
এই তিন দিনে আমার শরীরে ৫০০ এম এল এর ৩০ টা স্যালাইন (আনুমানিক) চালানু হয়েছে।
একটা নার্স প্রতিদিন দুই বার কখনও তারও বেশি পরিক্ষার জন্য রক্ত নিয়ে যেত। হাসপাতালের নার্স সাধারনত রোবট টাইপের হয় (বাংলাদেশে দেখেছি)। এই মেয়েটে তেমন না। সবার সাথেই হাসি খুশি।
একদিন সেই নার্সকে সিসটার বলে ডেকেছিলাম। (আমাদের দেশে নার্স বললে তাদের অপমান করাহয় শুনেছিলাম।) সিসটার ডাকার অপরাধে সারাদিন তাদের মুখটিপে টিপে হাসতে দেখেছি।
আমার পাশের বেডে একজন মালয়েশিয়ান ভদ্রলোক ছিলেন। একই অসুখ ছিল আমাদের, আমার চাইতে তার অবস্থা খারাপ ছিল। সারা দিন আঃ ওঃ করতেন। ভর্তি হবার পরথেকে তার পাশে সবসময় এক ১৮/১৯ বছরের মেয়েকে বসে থাকতে দেখতাম। মেয়েটার সাথে চোখা চোখি হত মাঝে মাঝে। দ্বীতিয় দিন অবাক হয়ে লক্ষ করলাম মেয়েটি চোখে চোখ পড়তেই ফিক করে হেসে দিচ্ছে। খারাপ লক্ষন, নিজেকে মনে মনে সাবধান করে দিলাম। কে শুনে কার কথা, এত রুপশী একটা মেয়েকে পাত্তা দেবনা এতটা গাধা আমি হতে পারব না। তৃতীয় দিন আমার বিদায়ের পালা, হাসপাতালের ফরমালিটি শেষ করে লিফটের কাছে গিয়ে মেয়েটার সাথে আমার দেখা। আমার জন্যই অপেক্ষা করছিল হয়ত।লিফটে নামতে নামতে এই প্রথম বার মেয়েটার সাথে আমার কথা হয়।ইংলিশ আর মালাই মিসিয়ে আমাদের মাঝে যে কথা গুলু হল।
চলে যাচ্ছেন?
হুম।
আপনার নাম কি?
সাগর আহমেদ।
পাকিস্তানি?
না।বাংলাদেশি।
আমি জাকিয়া?
ওআচ্ছা।
কোথায় থাকেন?
আমি আমার জায়গার নাম বললাম।
চলুন আপনাকে পৌছেদেই।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।আমি টেক্সি করে যেতেপারব।
মেয়েটার কথা আর কাজে মুগ্ধ হয়ে যওয়ার কথা। কিন্তু আমি হলাম না।
আসলে হলাম না বললে ভুল হবে, মুগ্ধ নাহবার ভান করলাম।
এরপিছনে একটা কারন আছে।

২০০৭ সালে যখন আমি মালয়েশিয়া আসি তখন থেকেই একটা বিষয় লক্ষকরছি, মালয়েশিয়ানরা আমাদের তেমন ভাল ভাবেনা। কাজের দিকে ভাল বলে আর কম বেতনে কাজকরি বলেই বাংগালিরা এখনও টিকে আছি।
পোরাতন যারা আছে তদের অনেকেই এখন ইন্দোনেশিয়ান,মায়েনমার,ফিলিপাইন অথবা কম্বডিয়ার সাথে লিভটুগেডার করছে।অনেকেই হয়ত বলবেন এতে আপনার সমস্যা কি? ভালবাসায় সবকিছুই চলে। তাদেরকে বলছি দেশে স্ত্রী ছেলে মেয়ে রেখে টাকা রোজগার করতে এসে এমন করাটাকে আমি ভালবাসা বলতে পারছি না।
প্রায় বছর খানেক আগে মালয়াশিয়ায় এক বাংগালি খুন হয়। তাকে খুন করে কিছু ইন্ডিয়ান বংশভূত মালয়েশিয়ান। আর তদের এই কাজ করার জন্য ভারা করেছিল এক বাংগালি। খুনটা হয়েছে একটা চাইনিজ মেয়ে কার সাথে থাকবে এই নিয়ে। অনেকে ছিল যারা মালাই মেয়েদের বিয়ে করেছিল।এখন তরা দেশে ফিরে আদর্শ শ্বামি,পিতা এবং সন্তানে ভূমিকায় আছে। তাদের ফেলে রাখা পাপের বুঝা এখন আমরা বইছি। তারা এখন মালয়াশিয়া প্রবাশিদের নামে নানান রকম কু্ৎশা রটিয়ে বেরায়। মেয়ে নিয়ে মালয়েশিয়ায় বাংগালিদের যে বদনাম আছে পৃথিবির আর কোথাও আছে বলে আমার জানা নাই।
একটা ঘটনা বলি(লিখি)। কিছুদিন আগে আমার এক বন্ধু ৫ বছর মালয়েশিয়া থেকে দেশে ছুটিতে যায়। অনেক দিন পর দেশে এসেছে বাড়ির লোকেরা ভাবল বিয়েটা করিয়ে দেই। যেই ভাবা সেই কাজ মেয়ে দেখা শুরু হয়ে গেল। কয়েকটা মেয়ে পছন্দও হল। কিন্তু কিছু দিন পর বিয়ে ভেংগে যাচ্ছে। বাড়ির মাঝে কানা ঘুসা চলতে লাগল, কিন্তু আমার সেই বন্ধুকে মেয়ে পক্ষ ফিরিয়ে দিয়েছে এ কথা টুকুই জানানো হত। কেন ফিরিয়ে দিয়েছে সেই কথা খুলাখুলি কেউ বলত না। এমনই একদিন আমার সেই বন্ধু ঘটকের ফোনের লাউড স্পিকার অন করে তাদের কথা শুনল। নানান ভনিতার পর যে কারনটা স্পষ্ট হল তা হল ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসি।
অবশ্য এখন অনেক কাঠ খর পুরিয়ে একটা বিয়ে করেছে শুনেছি।

(চলবে)

বিঃদ্রঃ এখানে কমেন্ট করার আগে আমার প্রফাইল লেখাটা দয়াকরে পড়ে নিবেন।ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ৯:৩৪
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×