
"পড়া" র বাতিকটা বহুত আগে থেকে।
পড়া বলেছি, "বই পড়া" বলিনি।
লেখা কিছু পাইলেই পড়ার স্বভাব ছিল, সে হোক পুরাতন পত্রিকা, কাগজের ঠোঙা, পুরান ম্যাগাজিন, কোরান শরীফের বাংলা অনুবাদ (আরবি বুঝি না), কারো ডায়রি (খুব খুব বাজে স্বভাব), গল্প উপন্যাস, বাংলা চটি, আর হ্যা, স্কুলের লাইব্রেরি থেকে উদ্ধার করা রোমান্টিক প্রেমের চিঠি; শেষেরটা আমাদের সবথেকে প্রিয় কাজ ছিল।
পুরাতন ছেড়া পত্রিকা পড়েই জহির রায়হানের অন্তর্ধান সম্বন্ধে জানতে পেরেছিলাম, আরও অনেক অনেক কিছু পড়েই নিত্য নতুন বিষয় জানার সুযোগ হয়।
গ্রামে বড় হওয়ায় আসলে বাহিরের জগতের বইয়ের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ ছিল সীমিত, পাঠাগার বলতে ছিল একমাত্র স্কুলের লাইব্রেরি, সে থাকত সাধারণত তালাবদ্ধ, লাইব্রেরিয়ান কাম ধর্মীয় শিক্ষক জনাব ইদ্রিসুর রহমান মোল্লা ছিলেন আমার কাকা ।
গ্রামের লাইব্রেরি হিসেবে এটি ভালোই সমৃদ্ধ ছিল, আর এর সমৃদ্ধ থাকার পেছনে আমাদের প্রধান শিক্ষক বাবু নিমাই চন্দ্র দাসে ভূমিকা স্বীকার করতে ই হচ্ছে; তাকে দেখতাম, বাইরে গেলেই দুই চারখানা বই নিয়া আসতেন, আর সে বইগুলো পাঠাগারের সেলফ এ শোভা পেত।
আমার কঠোর আব্বা অবশ্য আমার বাইরের বই পড়াকে একদমই প্রশ্রয় দিতেন না, তিনি বরাবর ই পাঠ্যবই এর প্রতি মনোযোগী ছিলেন।
এত যে পড়ার কথা বলছি, এ পাঠ্যবই না, আদোতে বইই না, এই পড়াটা মূলত অধ্যয়ন, চোখ ও মন দিয়ে পড়া।
একটা সময় এমন দাড়াইছিল, প্রিন্টিং সবকিছুকেই ধ্রুবসত্য ধরে নিতাম, সেখান থেকে এখন বের হয়ে আসছি, ধীরে ধীরে শিখে।
এখন আর পড়াটা ঠিক পড়া বা অধ্যয়নে সীমাবদ্ধ নাই, বা নেই অতসময় বই পড়ার, চাকরি, সংসার, ব্যাক্তিগত জীবন, সব নিয়ে খানিক ব্যস্ততার ভীরে ডুবে আছি, সাথে ইউনিভার্সাল ডিস্ট্রাকশন মোবাইল তো আছেই (এর কথা বলতে চাইছিলাম নান, গোপন প্রেমিকার মত)।
এখন ও সুযোগ পেলে পড়ি, চেষ্টা করি সেই সমস্ত লেখা পড়ার, যেগুলো আমার চিন্তার জগতকে নাড়া দেয়, কোনো ১ টা বিষয় কে ভিন্নভাবে চিন্তা করতে প্ররোচিত করে, বা চেনা জানা জগতটাকে ঝাকি দেয়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




