গত দুই দিন আমার একটা ওয়েব সাইট বানানোর কাজে ব্যাস্ত ছিলাম,তাই সামু ব্লগে আসা সম্ভব হয় নাই।অনেক কষ্ট করে একটা ব্লগ খুলেছি,কিন্তু এখনো সম্পূর্ণ হয় নি।যাই হোক,এখন থেকে আমার সকল লেখা সিনেমাওয়ালায়প্রকাশিত হবে।এবার আসল কথায় আসি,ফ্যাশান ফটোগ্রাফি নিয়ে যারা একটু খোঁজ রাখেন তারা ভালো করেই জানেন প্রতি বছর ভারতের ডাব্বু রত্মানি কাউকে না কাউকে পুরো ন্যাংটো করে ফটোশুট করিয়ে ছাড়ে। এই ন্যাংটাপুটু অভিনেত্রীদের বিশেষ অঙ্গ ঢাকতে কখনো ব্যবহার করা হয় এমনি তোয়ালে, খবরের কাগজে ঢাকা, কখনো বালিশ ফাটানো ছেঁড়া তুলা, বালুটানার ঠেলা গাড়ি, তরমুজের খোল, বাঙ্গী, লালশাক এমনকি আলকাতরা পর্যন্ত। খুব সম্ভবত মার্ডার-২ চলচ্চিত্রের দর্শকপ্রিয় অভিনেত্রী জ্যাকুলিন ফার্নান্দেজকে নিয়ে ডাব্বু রত্মানি এ ধরণের একটা ফটোশুট করিয়েছিলো। ফ্যানের প্রচণ্ড বাতাসের মধ্যে দিগম্বর জ্যাকুলিনকে এমনি একটা তোয়ালে পরে বার কয়েক লাফ দিতে বলা হয়। আর ঐ দিক থেকে মুখব্যদান করে থাকা ডাব্বু রত্মানির ক্যামেরা তার প্রায় আদুল এসব ছবি ধারণ করে কি নতুনত্ব আনলো তা আমার বুঝে আসেনি।কিন্তু সহজেই গ্রহন করেছে দর্শক মহল এবং চলচিত্র বোদ্ধারা।কিন্তু এমন কিছু বাংলা সিনেমায় ঘটলে সমালোচনার শেষ থাকত না।এখানেই অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের পার্থক্য। আমাদের দেশের চলচিত্র যেসব কারনে এগুচ্ছে না,এটা সেসবের অন্যতম একটি।
এই যে চলচিত্রে যারা এত অশ্লীলতা অশ্লীলতা করে মুখে ফেনা তুলে,তাদের মধ্যে অনেকে জানেই না অশ্লীলতা কি।অনেকটা হুজুগের বশেই তারা চলচিত্রে অশ্লীলতা অশ্লীলতা করে হাপিত্যেশ করে মরে।কারন অশ্লীলতার সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে পশ্চিমারা, শালীনতার সংজ্ঞা দেয়ার এখতিয়ার তাদের হাতেই বলে তারা মনে করে।
তাইতো মেরিলিন মনেরোরা যখন শরীরের শেষ সুতোটিও খুলে ফেলে সেটা হয় সংস্কৃতির অনুসঙ্গ। সুচিত্রা সেনরা সুইমিং পুলের পাশে মোচড়া মুচড়ি করলে সেটা হারিয়ে হায় চোখের চাউনি কিংবা তথাকথিত মিষ্টিমধুর হাসির বিবরণের আড়ালে।কিন্তু নাসরিন যখন একটু শর্ট পোশাক পরে আইটেম গানে পারফর্ম করত,সেটা ছিল চূড়ান্ত অশ্লীল। সালমাদের গানে বাসর ঘরের বাত্তি নিভানোর সংলাপ আসলে সেটা অশ্লীল হয়,সেটাকে ব্যান করতে হয়। কিন্তু হানি শিং নারীদেহের প্রতিটি ভাঁজের বিবরণ রসিয়ে রসিয়ে দিতে থাকলে মডার্ন ডিসকোর্স সেটাকে বেশ ন্যাকামির হাসি হেঁসে বরণ করে নেয়।
মোনালি ঠাকুরের গানে ক্যাটরিনা কাইফ চুম্বা দেয়ার আশায় খড়ের গাদায় রেস দিতে থাকলে সেটা কোনোভাবেই অশ্লীল হয়না। কিন্তু অশ্লীল হয়ে যায় আমাদের দেশের তথাকথিত বি গ্রেড অভিনেত্রী মুনমুন,ময়ূরী,পলি,নাসরিন দের মোটা মোটা ঠ্যাং প্রদর্শন কিংবা অপেক্ষাকৃত ভারী হয়ে যাওয়া বিশেষ অঙ্গের ঝাঁকুনি।
এমনো দেখেছি,যেসব লোক আমার নির্মিত চলচিত্র ব্যান করার জন্য পত্রিকায় লেখালেখি করেছে,তারাই আবার আমার প্রত্যেকটা ছবি হলে গিয়ে সামনের সারিতে বসে দেখেছে।যারাই ময়ূরী মুনমুন কে বাংলা ফিল্ম থেকে দূরে সরিয়ে দিতে চেয়ে আন্দোলন করেছে,সুযোগ পেলে তারাই আবার মুনমুন দের পেছনে ঘুরেছে অটোগ্রাফ নিতে বা সাথে একটা ছবি তোলার জন্য।এইযে দুমুখী নীতি,আমি এটাকে সবচেয়ে বেশি ঘৃনা করি।শুধু এই বিষয় টা নিয়েই অনেকের সাথে আমার বিরোধ হয়েছে,আমার বিরুদ্ধতা করেছে,আমাকে চলচিত্র থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছে।কিন্তু তারা সফল হয়নি।কারন আমি চলচিত্রের সাথে যুক্ত হয়েছিলাম চলচিত্রকে ভালবেসেই,তাই কেউ আমাকে চলচিত্র থেকে সরাতে পারেনি,পারবেও না।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৪