প্রচণ্ড কান্না শব্দ আর সাথে অকথ্য ভাষায় গালাগলি নিত্য পরিচিত একটা ব্যাপার ছিল আকাশের প্রতিবেশী কালাম মিয়ার ।
বাস্তবতা ।।
তাই আজ একটু কৌতুহল নিয়েই জাসুসি করতে ইচ্ছে করেই আকাশের বাড়ির দরজায় হাজির হয় কালাম মিয়া ।
কিন্তু হতাস হয়েই অবিস্কার করে বাড়ির খুব স্বাভাবিক শান্ত অবস্থা।
বেশ চিন্তায় পরেছেন তিনি নিত্য দিনের মতো আজও ।
চিন্তা করলে অসম্ভব বিস্রি লাগে কালামকে ।
টাক মাথার সাথে হলদে দাতঁ জাদুঘরে সাজানোর মতো অবস্থা সৃষ্টি করে পুরোই কালাম মিয়ার অবয়বটা ।
বাস্তবতা ।।
কিন্তু পাতলা মানুষের গোল ভুড়ি নতুন মাত্রা যোগ করেছে তাতে আবার, তাই জাদুঘর হয়তো ঠিক হবে না।
তার সঠিক ব্যবহার কিভাবে করা যেতে পারে এটা নিয়ে চিন্তা করতেই রিয়ার মাথায় নতুন ফন্দি আসলো।
একটা টর্চার সেল বানাবে যেখানে আকাশকে বেধে রেখে রুটিন মাফিক কালাম মিয়ার দর্শন করানো হবে দিনে তিনবার রুটিন করে।
তবে এতে কালাম মিয়া ফি চাইতে পারে ভেবে পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনে সপিং করার সিদ্ধান্ত নিলো রিয়া।
সপিং করলেও জামাইকে টর্চার করা হয় কোন এক বইয়ে পড়েছিল রিয়া।
তবে আজব এক শখ রিয়ার সে শুধু আকাশের জন্য সপিং করে।
কালো কালার টাইট ফিটিং শার্ট পরলে শরীরে মেদ জমে না এটাও কোন যেনও বইয়েই পড়েছিলেন রিয়া।
তবে ইচ্ছে করে দুই সাইজ ছোট শার্ট কেনা অত্যাচারের অনেক পুরোনো মাধ্যম রিয়ার।
টর্চার করার একশো একটা উপায় শিরোনামে নতুন একটা বই লিখবেন আগামী বই মেলায় বলে মনস্থির করলেন রিয়া ।
কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে একদিন সত্যিই পুরো পাগল হয়ে যেতে হবে আকাশকে, তাই একটা সমাধান তো দরকার সব কিছুর ।
বাস্তবতা ।।
তাই সমাধানের আশায় একমাত্র উপদেশদাতা তানুর বাসায় আজ আকাশ । তানভীর কলেজ জীবনের বন্ধু আকাশের একসাথে বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে তারা, তাই আদর করে তানু ডাকে আকাশ ।
খুব ভালো সময় এসেছিস আকাশ, আজ নতুন একটা ডিশ বানাচ্ছি ডিমের কালা ভুনা । নতুন ডিশ শুনেই মনটা কেমন আঁতকে উঠলো আকাশের । তানুর এক্সপেরিমেন্টাল রান্না খাওয়া কোন যুদ্ধ করার চেয়ে কোন অংশে কম না এটা জানতো খুব ভালো করে আকাশ।
তিনটা আস্তা ডিম ভেঙ্গে লবন দিয়ে ভালো করে ঘুটে পলিথিনে ভরে পুরো পলিথিন সমেত পানির মধ্যে সিদ্ধ করতে দিয়ে, পেয়াজ কাটছিল তানু । অপরদিক পকেট থেকে পুড়িয়া বের করে জয়েন্ট বানাতে ব্যাস্ত আকাশ ।
বৌ বাসায় না থাকলে হরহামেশাই এমন পার্টি হয় তানুর বাসায় । সিদ্ধ ডিমের দোলাটা বের করে গোস্তের মতো ছোট ছোট টুকরো করলো তানু । পরে অনেক গুলো পিয়াজ সাথে লবন, মরিচ, মসলা সমেতো তেলে দিলো তানু, একটু পর পিয়াজ নরম হয়ে গেলে তাতে পানি দিলো পরিমান মতো । এবং তারপর গোশত সরূপ ডিমের টুকরো গুলো ছেঁড়ে দিলো কড়াইয়ে । পুরো রান্নার ব্যাপারটা যতটা না অবাক করেছে আবিরকে তার চেয়েও বেশি অবাক করেছে গরুর মাংসের মসলা দিয়ে ডিম রান্না করা ।
কড়াইটা ঢাকনা দিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলো তানু- তারপর এতো দিনপর কিভাবে মনে পরলো বন্ধুকে ?
দোস্ত আসলে রিয়া !
শেষ করার আগেই চিৎকার করে উঠলো তানু যে – তুই আবারও নেশা করেছিস ?
বলেই তড়িঘড়ি করে সুইমিং পুলে লাফ দিলো তানু , অতিরিক্ত রাগ উঠলে মাথা ঠাণ্ডা করতে গোসল করার এই নিঞ্জা টেকনিক তানুর কলেজ জীবনের ।
গোসল শেষে মাথা ঠান্ডা করে আবিরকে জড়িয়ে ধরে তানু আর বলে, ভাই নেশাটা একটু কম কর, বের হয়ে আয় ব্যাপারগুলো থেকে । গত চারটা বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে ভাই ।
বেশ আবেগ নিয়েই উত্তর দিলো আকাশ, “ডিম ভুনা।”
কি ডিম ভুনা ?
আমার মনে হয় চুলাটা বন্ধ করা উচিৎ ডিম পুড়ছে তোর ।
ওকে দেখছি আমি, আর খাওয়ার পর আজ ডাক্তারের কাছে যাব কেমন বলে রান্না ঘরে চলে গেলো তানু ।
অন্যান্য খণ্ড সমূহ
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১২:২৩