somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১০০ বছর পরে (এখন না পড়ে ১০০ বছর পরে পড়ুন)

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বন্ধু! ভালো আছেন?

কে বলছে আমি নেই? কে বলেছে আমি মারা গেছি? এই দেখুন আমি আপনার সাথে কথা বলছি। হ্যাঁ আমি আপনার সাথেই কথা বলছি। কে বলেছে এই সুন্দরের জলসায় আমি নেই? আমি যেমনি করে এসেছিলাম আজও তেমনি করে আপনার মনে দোলা দিচ্ছি। আপনার অন্তরে আমি ঢুকে পড়েছি। আমার অন্তরেও আপনি ঢুকে পড়েছেন। আপনার স্বাধীন চিন্তা চেতনায় আমি আছি। আপনার দৃষ্টিভঙ্গির সাথে আমার দৃষ্টিভঙ্গিকে মিলিয়ে নিয়েছি। আজ আপনি ও আমি একাকার ও অখন্ড মানব অস্তিত্ব হয়ে বেঁচে আছি।

আজ আপনি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন। আজ আপনার চোখ, কান, ইন্দ্রীয় ও অন্তর দিয়ে আমাকে অনুভব করে নিচ্ছেন। আজ আমার বাঙালী জাতি বিশ্বের সেরা জাতি হিসেবে নিজেদের পথ নিজেরাই তৈরী করে নিয়েছে। খেয়াল আছে আমি বলেছিলাম একজন বাঙালী কখনও মরে না। আজ দেখুন আমাকে! আমি যে আপনার মনের মধ্যেই বেঁচে আছি। কে বলেছে আজ আমি মৃত? আমি আপনার প্রাণে সবগুলো সাগর মহাসাগরের ঢেউ নিয়ে জেগে উঠেছি।

বন্ধু! আজ থেকে ঠিক ১০০বছর আগে আমি যখন এই লেখা লিখছি, তখন আমার অবস্থা খুব বেশি অসহায় ও নাজুক ছিলো। সেদিন আমার কিছুই ছিলো না আজ আমার সব হয়েছে। পৃথিবীর প্রতিটা পাড়া মহল্লায় আজ আমার আদর্শ ছড়িয়ে পড়েছে। পৃথিবীর প্রতিটা প্রান্তে আজ আমার সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে।

আজ পৃথিবীর বেশিরভাগ শিশুই যন্ত্রের মাধ্যমে জন্ম গ্রহন করে। তারপরও আমি সকলের হয়েই থেকে গেছি। আপনার জীবনের প্রতিটা অংশেই আমি আছি। আপনার জীবনের প্রতিটা মূহুর্ত নিয়েই আমি কথা বলেছি। আপনার সেই শিশুকাল থেকেই আমি আপনার সাথে ছিলাম ও সারাজীবন থাকবো। একসময় আমার যে লেখাগুলোকে মানুষ গ্রহন করতে চায় নি, এখন আমার সেই কথাগুলোই ঝাঁঝাঁলো-সুন্দর সত্যি হয়ে সবার নয়নে লেগে আছে। কোথায় ফেলে দিবেন আমায় বন্ধু? কোথায় পালাবেন আমাকে ছাড়া?

এখন আমি আমার প্রিয়তমার সামনে নিজেকে উজাড় করে দিলাম। আজকের চিকিৎসা ব্যবস্থা এতোটা উন্নত হয়েছে যে, মানুষ আজ অমর। আমিই আপনাদের অমরত্ব দিয়ে গেলাম। এখন প্রতিটা মানুষের অস্তিত্ব প্রযুক্তি দিয়ে স্থায়ী ভাবে সংরক্ষন ও রক্ষনাবেক্ষন করা সম্ভব হচ্ছে। আমি প্রথম যখন আপনাদের অমরত্বের কথা বলি- তখন পৃথিবীর বেশিরভাগ উচ্চপদস্থ মানুষ আমাকে গ্রহন করতে চায় নি। আজ সবাই আমাকে মেনে নিয়েছে।

বন্ধু! আমার বুকে আজ প্রেমের বান ডেকেছে। এই মন শুধু আপনাদের ভালোবাসায় সিক্ত হতে চায়। আমি আপনাদের মন প্রাণ দিয়ে পাগলের মতো ভালোবাসি। আপনাদের মনের সমস্ত প্রেম কে আমার আন্তরিক নমস্কার জানাচ্ছি। আমার এই লেখাগুলো দিয়েই আমি আমার প্রিয়তমাকে কাছে ডেকেছিলাম। আমি আপনাদের মাঝে আজও বেঁচে আছি ও চিরকাল বেঁচে থাকবো। আজ ২১১৪ইং সাল। আজ থেকে আরো সহস্র লক্ষ কোটি বছর আমি আমার স্বমহিমায় বেঁচে থাকবো। আমাকে কেউ কোনদিন মারতে পারবে না। আমার এই কথাগুলোর মধ্যেই আমি বেঁচে আছি ও চিরকাল ধরে থেকে যাবো।

আজ আপনাদের চোখের সামনে সাম্য, সত্য ও সুন্দরের এক রাষ্ট্রিয় শাসন ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। সে দুর্ণীতির আমলেই আমি আজকের এই সুন্দর দিনের কথা সবাইকে জানিয়ে দিয়েছিলাম। আজকের এই পলিটিক্সকে আমার আন্তরিক প্রনাম জানাচ্ছি। আমি এমনই এক পরিবর্তন চেয়েছিলাম। যে পরিবর্তন আপনাদের সবার মন কে জাত বিভেদ, ধর্ম ও বাজে স্বভাব দূর করে সবাইকে সত্যবাদি ও সুন্দরের অগ্রদূত করে দিয়েছে।

আজ মানুষ তাঁর আপন মেধার জোড়ে প্রকৃতির বড় একটি অংশকে কন্ট্রোল করতে পারছে। যা আমি আপনাদের দেখিয়েছিলাম। আজ পৃথিবীর মানুষ ভালো আছে। আজ আপনারা নতুন এক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যাতে সব সময়েই অর্থের মূল্যমান স্থিতিশীল অবস্থায় আছে। আমি আপনাদের যে অর্থনীতির কথা বলেছিলাম আজ সেই সিস্টেমেই মুদ্রানীতি চলছে। আজ আর কেউ কারও থেকে ছোট না। মিথ্যে দ্বারা প্রভাবিত সমাজ ব্যবস্থা যে মানুষের অগ্রগতিকে কতখানী বাধার সম্মুখিন করে তা আমি আপনাদের আমার জীবনের মধ্য দিয়েই বলে গিয়াছি ও হাতের আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলাম।

বন্ধু! আজ সবাই প্রেম ভরে বাঁচতে শিখেছে। একসময় নর নারীর প্রেমকেও সামাজিক অপরাধের মতো করে দেখানো হতো। আমি তেমনই এক কঠিন সময়ে আপনাদের সামনে এসে কথা বলেছিলাম। আমি আমার চোখের সামনে প্রিয়তম ও আমার অপারগতা দেখে ছিলাম। আমি সেই চরম দামের মূল্যবান সময়কে পায়ে ঠেলে আজ আপনাদের সাথে কথা বলে যাচ্ছি। আমি আমার প্রিয়তমকে আপনাদের সামনে আপনাদের চির আপনজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে গিয়েছি। কে বলছে আমি মারা গেছি? আমার তো কোনো মৃত্যু নেই। আমি বাধাহীন ও মৃত্যুহীন হয়েছি শুধু মাত্র আপনাদের জন্যই। আমার শিশুকাল, ছাত্রজীবন, কর্মজীবন ও আমার লেখাই তার বড় প্রমাণ হিসেবে স্বাক্ষী রয়ে গেছে।

সত্যি বলছি বন্ধু! আমি আমার মনের দামে আপনাদের অন্তরের উষ্ণ আশির্বাদ পেয়েছিলাম। আপনাদের অন্তরই আমার প্রধান আশ্রয়। অনেক ভুলে ভুলে আমাকে আপনারা দূরে ঠেলে রেখেছিলেন, আজ আমাকে আপনারা আপনাদের মধ্যমনি করে রেখেছেন। আমার জীবনের প্রতিটা কষ্ট থেকে আমি আপনাদের কষ্টের হাত থেকে বাঁচার স্থায়ী পথ দেখিয়ে দিয়েছিলাম। আজ আমার কোনো কষ্ট নেই। আজ আমার কোনো বিরহ নেই। আজ আমার কোনো দুঃখ নেই। আজ যা আছে সবই নিরেট স্বচ্ছ ও সুন্দর প্রেমানন্দ। এই প্রেম আর আনন্দকে আমি আপনাদের হৃদয় দিয়ে অনুভব করে যাচ্ছি। আমি আপনারই ভিতরের স্বত্ত্বা হয়ে বেঁচে আছি। আমার অন্তর আত্মা আমার না। আমার অন্তর আত্মা আমারি সৃষ্ট্রিকর্তার দান। আমি সেই সুন্দর সৃষ্ট্রিকর্তার একজন সৃষ্টি মাত্র। আমাকে তিনি এমন করেই আপনাদের সামনে পরিবেশন করেছিলো। আমার সব ইচ্ছাই স্রষ্ট্রার অকৃপন ইচ্ছার মতো মজবুত হয়েই আজ গোলাপ ফুলের মতো প্রষ্পুঠিত হয়ে উঠেছে। আমি সেই তরতাজা গোলাপ ফুল হয়ে আপনাদের মুক্তচিন্তার বাগানে ফুটে উঠেছি। এবার আপনাদের বাগানের সেই প্রষ্পুঠিত ফুলকে আপনারা নিজ হাতে তুলে নিন। আজ আমি সবার সাথেই সমান ভাবে প্রেমালিঙ্গন করছি। আর সেই সুন্দরের হাতের চির তরতাজা লাল গোলাপ আপনাদের সামনে জ্বল জ্বল করে অগ্নি কালারে ফুটে উঠেছে। তাকে গ্রহন করে আপনারা আজ চিরমঙ্গলের পথে নিজেদেরকে নিয়ে যাবেন।

বন্ধু! আজ আমি কোনো দেশের নই, কোনো জাতির নই, কোনো অর্থের নই, কোনো বংশের নই, আজ আমি আমার পুরোটা উজাড় করে দিয়ে একজন মানুষ হিসেবেই আপনার সাথে এসে কথা বলছি। ঠিক আমার মতো আপনিও একজন মানুষ। আজ কেউ অস্ত্রের বড়াই করবেন না। আজ কেউ অর্থের অহামিকা করবেন না। আজ কেউ মিথ্যে ক্ষমতার বড়াই করবেন না। আজ শুধু পাবার দিন। আজ শুধু আনন্দ করবার দিন। আজ শুধু অফুরন্ত প্রাণশক্তির দিন। আজ আপনাদের সবার অন্তর দেবতা জেগে উঠেছে। আজ আপনারা সবদিকে শুধু মানুষের জয়গাঁথা দেখতে পাচ্ছেন। আজ আপনারা শুধু মানুষের ক্ষমতাকে দেখতে পাচ্ছেন। আজকের এই ২১১৪ইং সালের সব আবিষ্কার মানুষের সভ্যতার সাথে সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। আজ আপনারা শুধু অমরত্বের স্বাদ গ্রহন করুন। আপনারা আপনাদের অন্তরের মাঝে শুধু মঙ্গল চিন্তা, সত্য, জ্ঞান, ধ্যান, আনন্দ ও সুখ নিয়ে জেগে উঠুন। আজ আপনারা সবাই স্রষ্ট্রার হাতের চিরসুন্দর বাদ্যযন্ত্রের মতো সুর তুলে যাবেন আর মহাকাল আপনাদের চরনে লুটিয়ে পড়বে।

আজ কোনো বয়সের বাধা, সম্পদের বাধা, অর্থের বাধা, অহংকারের বাধা, অবহেলার বাধা, অভিমানের বাধা, অবমাননার বাধা, জাতিগত বাধা, মিথ্যে ধর্মের বাধা আমাদের এই সুন্দর সুন্দর মানুষগুলোকে দল-গোত্রে ভাগ করে দিতে পারবে না। আজ আমাদের সবার ধর্মই মানব কল্যানের ধর্ম। এমন কোনো ধর্ম নেই, যেটা মানব কল্যানের বিপরীত অবস্থান নেয়। সব ধর্মই মানব কল্যান ও প্রগতির কথা বলে কারণ মহান ঈশ্বর সর্বদা সুন্দর প্রগতির সাথে সাহায্য করুনা করে বেড়ান।

বন্ধু! আজকের এই ডিজিটাল শাসনের কথাই আমি আপনাদের বলেছিলাম। আজ বাঙালীরা দু’টো আলাদা রাষ্ট্রে বিভক্ত না। আজ সব বাঙালী নিজেদের মধ্যে এক। আজ সমস্ত জাতি সমস্ত জাতির প্রাণসম পবিত্র হয়ে উঠেছে। আজ কোনো মানুষের মধ্যে মিথ্যে বিবেধের দেয়াল নেই। আজ কোনো সন্ত্রাসবাদ নেই। আজ আপনারা সবাই সবার আপনজন। আজ সমস্ত মানুষ এক ও অখন্ড স্বত্তা হিসেবে নিজেদের দ্বায়িত্ব নিজেরা বুঝে নিয়েছেন। আমি আপনাদের খুব কাছাকাছি থেকেই থেকেই বেঁচে আছি। আজ কেউ আমাকে মৃত্যু বলবেন না। কারণ আমি কখনও মারা যাই না। আমি বার বার, শতবার, সহস্রবার, লক্ষ-কোটিবার আপনাদের অন্তরের মধ্য থেকেই জেগে উঠি।

০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×