মধ্যরাতে আমরা দুজন হেঁটে বাসায় ফিরছি। পৌষের হীম শীতল হাওয়া ছুয়ে যাচ্ছে আমার লোমকূপ কিন্ত , তার পাশে থাকা, আমাকে গরম জলের মত আরামদায়ক উষ্ণতা দিচ্ছে।আমার মধ্যকার ভাবনাগুলো কিলিবল করছে।হাস্যকর চিন্তারা দৌড়ঝাপ শুরু করল যখন তার কৌতুক কন্ঠ জিজ্ঞাসা করল, “কেমন হবে যদি ছিনতাইকারী আসে?” আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা হল, “আমার আছ তুমি, আমার শক্তি তুমি,”।
আমরা আজ কত কাছাকাছি, পাশাপাশি থেকেও কত দূরে। আমার ভেতর প্রশ্ন জাগে, ভাবনা আমায় অশ্রুসিক্ত করে। রেলগাড়ির মত ভাবনাগুলো ছুটছে।
তোমার কি মনে পড়ে না? সেই ছোট্ট আমাকে হাতে ধরে স্কুলে নিয়ে যেতে। ঠিক এমন করে তোমার পাশে হাঁটতাম আর তুমি মানুষ দেখাতে, াকাশ দেখাতে, কবিতা শোনাতে। ভোরবেলা হাঁটতাম আমরা, তুমি খুব জোড়ে হাঁটতে তাই আমাকে দৌড়াতে হত। রাতে জোছ্নার আলোয় চাঁদ দেখাতে, আমি জোনাকীর পিছু নিতাম তুমি ধরতে দিতে না। বৃষ্টিদিনে রবিঠাকুর শুনতে , আমি বিজ্ঞের মত তোমার কথা শুনতাম। যেখানেই যেতে আমায় নিতে। মনে আছে প্রথম টেম্পো যাত্রা? আমার সেকী কান্না, “চলো নেমে যাই, চলো না"। আমার কান্না সমানভাবে বাড়ে যত টেম্পোর ভটভটানি বাড়ে। আমার সব সময়ের সঙ্গী ছিলে তুমি।
আমি এখন আর ছোট্ট নেই। আমার পথ গুলো এখন অনেক মানুষের আনাগোনায় পরিপূর্ন আমাকে কেউ মানুষ চিনিয়ে দেই না।আজ আমার অনেক ভালো লাগে আকাশ দেখতে কিন্তু কেউ দেখায় না। আমি কবিতা ভালোবাসি কিন্তু আমার কবিতার বই গুলো ধরা হয় না। আমার চারপাশে অনেকেই আছে তবু আমি বন্ধু ছাড়া।এখন আমি মুখ গোমড়া করে থাকলে কেউ জানতে চাই না, কি হয়েছে। আমি তখন তোমাকে খুব চাই আমার পাশে ঠিক এখন যেমন আছ।আমি মনে মনে তোমাকে ডাকি মুখ খুলে কিছু বলতে পারি না।
বাবা তোমার ছোট্টমণি তোমাকে আগের মত কাছে চাই, সব জানাতে চাই, কিন্তু তার সামনে কেন একটা দেওয়াল আঁকা? কিসের এত দূরত্ব? পৃথিবী চিনতে শিখেছি তোমার চোখ দিয়ে , সেই পৃথিবী এখন খুব জ্বালাময় মনে হয়।কি ক্ষতি হয় আমাকে আগের মত তোমার সাথে বেড়াতে নিয়ে গেলে? কারণটা কি তোমার সময় নাকি আমার বড় হওয়া?
আমরা বাসায় পৌঁছে গেছি, আমাদের ছোট্ট সুন্দর ঘরে , আর সব কিছুর শেষে এই সত্যই জানি, বিশ্বাস করি : আমার সবকিছুর মাঝে তুমি ছিলে, আছ, থাকবে.........
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ৯:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




